ইয়েমেনের হুথি বাহিনী মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিমানবাহী রণতরী ‘ইউএসএস কার্ল ভিনসন’-এর ওপর ড্রোন হামলা চালিয়েছে। এই হামলার দায় স্বীকার করেছেন হুথি সামরিক শাখার মুখপাত্র ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ইয়াহিয়া সারি। এক ঘোষণায় তিনি জানান, আরব সাগরে অবস্থানরত মার্কিন যুদ্ধজাহাজগুলোর ওপর একাধিক ড্রোন পাঠানো হয়েছে। এর আগে লোহিত সাগরে যুক্তরাষ্ট্রের ‘ইউএসএস হ্যারি ট্রুম্যান’ রণতরীকেও হুথিরা অপারেশন চালিয়ে সরে যেতে বাধ্য করেছিল বলেও দাবি করেন তিনি।
সারি জানান, এই অভিযানের ফলস্বরূপ একটি মার্কিন এফ/এ-১৮ই সুপার হর্নেট যুদ্ধবিমান ধ্বংস হয়েছে। বিমানটি ইয়েমেনে হামলা চালিয়ে ফেরার পথে ‘হ্যারি ট্রুম্যান’ রণতরীতে অবতরণ করতে গিয়ে সাগরে পড়ে যায়। তবে পাইলট নিরাপদে বেরিয়ে আসতে সক্ষম হন। মার্কিন নৌবাহিনী স্বীকার করেছে, যুদ্ধবিমানটি হারিয়ে গেছে। এই ধরনের ঘটনা একেবারে বিরল বলে উল্লেখ করেছে তারা।
এদিকে মার্কিন বাহিনী পাল্টা হামলায় ইয়েমেনের সাদা প্রদেশে এক অভিবাসন আশ্রয়কেন্দ্রে বিমান হামলা চালায়। এতে আফ্রিকার অন্তত ৬৮ জন নাগরিক নিহত এবং আরও ৪৭ জন আহত হন। বেসামরিক হতাহতের সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে, যা নতুন উদ্বেগ তৈরি করছে।
একইসঙ্গে, ইসরায়েলের বিরুদ্ধে অবস্থান আরও স্পষ্ট করে হুথি মুখপাত্র জানান, জাফা শহরে ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর কৌশলগত অবস্থানে একটি যৌথ অভিযান পরিচালিত হয়েছে। তিনি বলেন, ফিলিস্তিনিদের প্রতি হুথিদের সমর্থন অব্যাহত থাকবে এবং আগ্রাসনের জবাবে প্রতিরোধ জোরদার করা হবে।
২০২৩ সালের নভেম্বর থেকে হুথি বাহিনী লোহিত সাগর, বাব-আল-মান্দেব প্রণালী ও আরব সাগরে ইসরায়েল ও তার মিত্রদের জাহাজ লক্ষ্য করে ধারাবাহিক হামলা চালিয়ে যাচ্ছে। জানুয়ারিতে গাজায় সাময়িক যুদ্ধবিরতি ঘোষণার পর এই আক্রমণ বন্ধ থাকলেও, গত মাসে গাজায় নতুন করে হামলা শুরু হলে হুথিরাও আবার সক্রিয় হয়ে ওঠে।
এই পরিস্থিতিতে আরব সাগর ও আশপাশের সামুদ্রিক রুটগুলোতে উত্তেজনা চরমে উঠেছে। পশ্চিমা জাহাজ চলাচলের নিরাপত্তা নিয়ে দেখা দিয়েছে নতুন শঙ্কা।