ইউরোপীয় কমিশনের সভাপতি উরসুলা ভন ডের লেইন সরাসরি চীনকে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন ইউক্রেন যুদ্ধ ইস্যুতে রাশিয়ার পক্ষে অবস্থান নেওয়ার কারণে। ৮ জুলাই, স্ট্রাসবার্গে ইউরোপীয় পার্লামেন্টের এক অধিবেশনে দেওয়া ভাষণে তিনি বলেন, বেইজিং যদি ইউক্রেনের সার্বভৌমত্ব লঙ্ঘনের জন্য রাশিয়ার নিন্দা না করে, তাহলে ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও চীনের সম্পর্ক আরও অবনতি ঘটবে। তার ভাষায়, “চীন কীভাবে পুতিনের যুদ্ধের সঙ্গে যোগাযোগ অব্যাহত রাখবে, তা ইইউ-চীন সম্পর্কের ভবিষ্যতের জন্য একটি নির্ধারক বিষয় হবে।”
ভন ডের লেইন আরও অভিযোগ করেন, চীন ‘রাশিয়ার যুদ্ধ অর্থনীতিকে কার্যত সক্ষম’ করছে এবং ইইউ এটি ‘মেনে নিতে পারে না।’ একইসঙ্গে তিনি বেইজিংকে ‘অন্যায্য বাণিজ্য অনুশীলনের’ জন্যও দায়ী করেন—বিশেষ করে সস্তা ও ভর্তুকিযুক্ত পণ্য দিয়ে বিশ্ববাজার প্লাবিত করার মাধ্যমে প্রতিযোগীদের দমন করার অভিযোগ তোলেন।
অন্যদিকে, চীন এই অভিযোগ বারবার অস্বীকার করে আসছে। দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মাও নিং বলেন, “চীন ইউক্রেন ইস্যুতে কোনো পক্ষ নেয় না। আমাদের অবস্থান হলো শান্তি, আলোচনার মাধ্যমে সমাধান এবং যুদ্ধবিরতি।” তিনি আরও জানান, দীর্ঘমেয়াদী সংঘাত কারও জন্যই ভালো নয় এবং চীন দ্রুত রাজনৈতিক সমাধানে আগ্রহী।
চীন এর আগে রাশিয়ার ওপর ‘একতরফা’ নিষেধাজ্ঞার বিরোধিতা করেছে এবং শান্তি আলোচনায় মধ্যস্থতার প্রস্তাবও দিয়েছে। চলতি বছর মে মাসে মস্কোতে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ও চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের বৈঠকে দ্বিপাক্ষিক কৌশলগত অংশীদারত্ব আরও জোরদার করার ঘোষণা আসে।
এই প্রেক্ষাপটে ইউক্রেন যুদ্ধকে ঘিরে চীন ও ইইউ-এর মধ্যে সম্পর্কের টানাপোড়েন নতুন করে সামনে এসেছে। ইউরোপীয় নেতাদের মতে, এখন চীনকে একটি স্পষ্ট সিদ্ধান্ত নিতে হবে—শান্তির পক্ষে না রাশিয়ার সঙ্গে।