সৌদি আরবের ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমানের আমন্ত্রণে ঐতিহাসিক সফরে জেদ্দায় পৌঁছেছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। গত ৪০ বছরে এটিই কোনো ভারতীয় প্রধানমন্ত্রীর প্রথম জেদ্দা সফর, যা দুই দেশের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।
মঙ্গলবার সকালে সৌদির উদ্দেশে রওনা দেন মোদি। তার রাষ্ট্রীয় সফরকে ঘিরে সৌদি আরব তাকে ‘বিশেষ সম্মাননা’ প্রদান করে। ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, যখন মোদিকে বহনকারী বিশেষ বিমানটি সৌদির আকাশসীমায় প্রবেশ করে, তখন সৌদি যুদ্ধবিমান এফ-৩৫ এর একটি বহর ‘বন্ধুত্বের নিদর্শন’ হিসেবে সেই বিমানের সঙ্গী হয়ে নিরাপত্তা প্রদান করে। দৃশ্যটি মোদির সফরের তাৎপর্য এবং সৌদি-ভারত সম্পর্কের গভীরতার স্পষ্ট ইঙ্গিত দেয়।
ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল সামাজিক মাধ্যমে পোস্ট করে বলেন, “বন্ধুত্বের উদাহরণ! সৌদির আকাশসীমায় প্রবেশের সময় থেকেই প্রধানমন্ত্রী মোদির বিমানকে সৌদি যুদ্ধবিমান পাহারা দিয়ে নিয়ে গেছে—এটি দুই দেশের ঘনিষ্ঠ সম্পর্কের প্রতীক।”
এই সফর প্রধানমন্ত্রী মোদির জন্য নতুন নয়—২০১৪ সালে ক্ষমতায় আসার পর এটিই তার তৃতীয় সৌদি সফর। ২০১৬ ও ২০১৯ সালের পর আবারও সৌদিতে পা রাখলেন তিনি। অন্যদিকে, ২০২৩ সালে সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান ভারতে সফর করেছিলেন।
জেদ্দায় পৌঁছে সৌদি আরবকে ভারতের ‘বিশ্বস্ত বন্ধু ও কৌশলগত মিত্র’ হিসেবে আখ্যা দেন মোদি। আরব নিউজ-এ দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, “আমাদের অংশীদারিত্বের সম্ভাবনা সীমাহীন। বর্তমান বৈশ্বিক অনিশ্চয়তার মাঝে এই সম্পর্ক একটি স্থিতিশীলতার স্তম্ভ।”
২০১৯ সালে ‘কৌশলগত অংশীদারিত্ব পরিষদ’ গঠনের পর থেকে ভারত-সৌদি সম্পর্ক নতুন মাত্রায় পৌঁছেছে। কৃষি, সার, জ্বালানি, প্রযুক্তি—সব খাতেই সহযোগিতা বৃদ্ধি পেয়েছে। মোদি জানান, সবুজ হাইড্রোজেন উৎপাদনসহ ভবিষ্যতের উদীয়মান খাতে যৌথ উদ্যোগের সম্ভাবনাও উজ্জ্বল।
ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমানের নেতৃত্বের ভূয়সী প্রশংসা করে মোদি বলেন, “প্রতিটি সাক্ষাতেই তার দূরদর্শী চিন্তা, প্রগতিশীল মনোভাব এবং দেশের স্বপ্নপূরণে দৃঢ় প্রতিশ্রুতি আমাকে মুগ্ধ করেছে।”
এই সফরের মাধ্যমে ভারত ও সৌদি আরবের কৌশলগত মৈত্রী আরও সুদৃঢ় হবে, এমনটাই ধারণা করছেন বিশ্লেষকরা।