তুরস্কের ইজমির প্রদেশে ভয়াবহ দাবানলে ছড়িয়ে পড়েছে অগ্নিকাণ্ড। স্থানীয় সময় রোববার, ২৯ জুন, জনপ্রিয় সমুদ্রতীরবর্তী অঞ্চল ম্যান্ডেরেসের বনাঞ্চল থেকে এই আগুনের সূচনা হয়। প্রবল বাতাসের কারণে মুহূর্তের মধ্যেই আগুন ছড়িয়ে পড়ে আশপাশের এলাকায়। ঘণ্টায় প্রায় ১০০ কিলোমিটার গতির বাতাসে আগুনের তীব্রতা বাড়তে থাকে। আগুনের ধোঁয়া ও উত্তাপের কারণে সাময়িকভাবে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে ইজমির আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর।
তুরস্কের বনমন্ত্রী ইব্রাহিম ইউমাকলি জানান, দাবানলের কারণে ইজমিরের কুয়ুকাক ও দোগানবে এলাকায় মারাত্মক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। রাতভর ৪০-৫০ কিলোমিটার বেগে বাতাস প্রবাহিত হওয়ায় আগুন আরও ছড়িয়ে পড়ে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে প্রশাসন চারটি গ্রাম এবং দুটি পাড়া খালি করে দিয়েছে। এছাড়া বনাঞ্চলের কাছাকাছি থাকা অন্তত ৬টি এলাকা থেকেও স্থানীয় বাসিন্দাদের নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।
দাবানল নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে এক হাজারেরও বেশি দমকলকর্মী। এছাড়া আকাশপথে আগুন নেভাতে ব্যবহৃত হচ্ছে ১১টি ফায়ার প্লেন ও ২৭টি হেলিকপ্টার, যেগুলো থেকে বিশেষ রাসায়নিক পদার্থ ছিটিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা চলছে। যদিও স্থানীয় কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, আগুনের তীব্রতা এবং বিস্তারের কারণে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে।
রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে তুরস্কের স্থানীয় গণমাধ্যমের উদ্ধৃতি দিয়ে বলা হয়, দাবানলের ভয়াবহতায় ইতোমধ্যে অনেক বসতি ও বনভূমি ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। দেশটির প্রশাসন আশপাশের সব এলাকাকে সতর্ক অবস্থায় রেখেছে এবং সম্ভাব্য দ্বিতীয় দফার ছড়িয়ে পড়া ঠেকাতে সর্বোচ্চ প্রস্তুতি নিচ্ছে।
বছরের এই সময়টিতে তুরস্কে দাবানলের ঘটনা নতুন নয়, তবে এবারের আগুনের ব্যাপকতা, বাতাসের গতি ও দাবানলের অবস্থান—সব মিলিয়ে পরিস্থিতিকে করেছে আরও জটিল ও বিপজ্জনক।
সামগ্রিকভাবে, দাবানল বর্তমানে ইজমিরসহ তুরস্কের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের পর্যটন ও বনভূমিগুলোতে নতুন করে এক বড় সংকট তৈরি করেছে। আগুন সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে আসতে সময় লাগবে বলেই ধারণা করছেন সংশ্লিষ্টরা।