সংশোধিত ওয়াকফ বিল পাসের পর ভারতজুড়ে শুরু হয়েছে তীব্র বিতর্ক ও উত্তেজনা। মুসলিমদের ধর্মীয় সম্পদ ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে এই আইনকে বৈষম্যমূলক আখ্যা দিয়ে অনেকেই প্রতিবাদে সরব হয়েছেন। শুধু ভারতে নয়, এর প্রতিক্রিয়া ছড়িয়ে পড়েছে বাংলাদেশেও। এই উত্তপ্ত প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশের পরিস্থিতিকে নজির হিসেবে তুলে ধরে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির কঠোর সমালোচনা করেছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
বুধবার কলকাতার নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে ইমাম ও মোয়াজ্জিমদের এক সমাবেশে বক্তব্য রাখতে গিয়ে মমতা বলেন, ওয়াকফ ইস্যুতে কেন্দ্র সরকার খুবই অবিবেচকের মতো আচরণ করেছে। তিনি প্রশ্ন তোলেন, “বাংলাদেশের পরিস্থিতি জানেন না? তাহলে এত তাড়াহুড়ো কেন? পশ্চিমবঙ্গ তো বাংলাদেশের সীমানা ঘেঁষে রয়েছে। আপনারা যা খুশি চুক্তি করুন, কার সঙ্গে আলোচনা করুন—তাতে দেশের উপকার হলে আমরা কিছু বলব না। কিন্তু আইন পাস করার আগে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার দিকটা তো ভাবা উচিত ছিল।”
মমতা অমিত শাহকেও ছাড় দেননি। তিনি বলেন, “ওই ব্যক্তি কখনো প্রধানমন্ত্রী হবেন না। মোদিজির প্রধানমন্ত্রীত্ব চলে গেলে তার কী হবে, সেটাই দেখার বিষয়। তাকে তো হামাগুড়ি দিতে হবে।” তিনি কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে একহাতে নিয়ে আরও বলেন, “সবকিছু নিজের মতো ব্যবহার করছেন তিনি। তার হাতে সব এজেন্সি—যেভাবে খুশি চালাচ্ছেন।”
মমতা মোদিকে অনুরোধ করেন, অমিত শাহকে যেন নিয়ন্ত্রণে রাখা হয়। তার কথায়, “আমি প্রধানমন্ত্রীকে বলব, অনুগ্রহ করে ওনাকে সামলান। দেশের ভিতরে এত উত্তেজনা সৃষ্টি করে কী লাভ? ওয়াকফ আইন নিয়ে মানুষ উদ্বিগ্ন।”
সংখ্যালঘুদের উদ্দেশে মমতা শান্ত থাকার আহ্বান জানিয়ে বলেন, “একটু ধৈর্য ধরুন। সামনের বছরে দিল্লিতে অনেক কিছু পাল্টে যাবে। নতুন সরকার আসবে, তখন এই হামাগুড়িবাবুদের আর দেখা যাবে না।”
মমতার বক্তব্যে স্পষ্ট, তিনি শুধু কেন্দ্র সরকারের সিদ্ধান্তেই নয়, এর রাজনৈতিক উদ্দেশ্যেও গভীর প্রশ্ন তুলেছেন। তার মতে, এই বিলের মাধ্যমে মুসলিম সম্প্রদায়কে কোণঠাসা করার চেষ্টা হচ্ছে, যা শুধু রাজনৈতিকভাবে নয়, সামাজিকভাবেও বিপজ্জনক বার্তা দিচ্ছে।