আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
যুক্তরাষ্ট্রের টেক্সাসে চতুর্থ জুলাইয়ের ছুটির দিন ভয়াবহ আকস্মিক বন্যায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১০৯ জনে। নিখোঁজ রয়েছেন আরও অন্তত ১৭০ জন। উদ্ধারকর্মীরা আশঙ্কা করছেন, নিখোঁজদের অনেকেই আর বেঁচে নেই, ফলে প্রাণহানি আরও বাড়তে পারে।
টেক্সাসের গভর্নর গ্রেগ অ্যাবট জানিয়েছেন, সবচেয়ে বেশি প্রাণহানি হয়েছে কের কাউন্টিতে, যেখানে ৯৪ জনের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত হয়েছে। ওই অঞ্চলটি ‘ফ্ল্যাশ ফ্লাড অ্যালি’ নামে পরিচিত, যা আকস্মিক বন্যার জন্য কুখ্যাত। কের কাউন্টিতেই নিখোঁজ ১৬১ জন।
কের কাউন্টির গুয়াদালুপ নদীর তীরে অবস্থিত ‘ক্যাম্প মিস্টিক’ নামের একটি গ্রীষ্মকালীন ক্যাম্পে অবস্থানরত অন্তত ২৭ জন কিশোরী ও পরামর্শক মারা গেছেন। এখনও ক্যাম্পের পাঁচজন শিক্ষার্থী এবং একজন পরামর্শক নিখোঁজ রয়েছেন। এছাড়া ওই ক্যাম্পের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট নয় এমন একটি শিশুও নিখোঁজ রয়েছে।
অন্য জেলাগুলিতেও অন্তত ১৫ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে।
উদ্ধার কাজে নিয়োজিত টেক্সাস গেম ওয়ার্ডেনসের কর্মকর্তা বেন বেকার জানান, “হেলিকপ্টার, ড্রোন ও প্রশিক্ষিত কুকুর ব্যবহার করেও কাদা, ধ্বংসস্তূপ ও বন্যার কারণে উদ্ধারকাজ অত্যন্ত চ্যালেঞ্জিং হয়ে পড়েছে।” তিনি বলেন, “বিশাল ধ্বংসস্তূপের ভেতরে প্রবেশ করা অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ।”
জাতীয় আবহাওয়া সংস্থা (এনডব্লিউএস) জানিয়েছে, হিল কান্ট্রি অঞ্চলে আরও বিক্ষিপ্ত এবং ভারী বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে, যা পরিস্থিতি আরও অবনতির দিকে নিয়ে যেতে পারে।
এদিকে, টেক্সাসের প্রতিবেশী রাজ্য নিউ মেক্সিকোর রুইডোসো শহরেও মঙ্গলবার আকস্মিক বন্যায় তিনজনের মৃত্যু হয়েছে। সেখানে নদীর পানি ছয় মিটার পর্যন্ত বেড়ে গেছে, যা রেকর্ড ভাঙতে পারে বলে জানিয়েছে এনডব্লিউএস।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প শুক্রবার দুর্গত এলাকা পরিদর্শনের ঘোষণা দিয়েছেন। তিনি উদ্ধারকাজে নিয়োজিত হেলিকপ্টার টিমের প্রশংসা করে বলেন, “ওরা পেশাদার, অনেক জীবন বাঁচিয়েছে।”
তবে ট্রাম্প প্রশাসনের অর্থছাঁটাই ও আবহাওয়া বিভাগে জনবল সংকট নিয়ে সমালোচনা উঠেছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সংকেত সরবরাহ ব্যবস্থা ও পূর্বাভাস ব্যবস্থার দুর্বলতা এ বিপর্যয় মোকাবেলায় বড় ভূমিকা রেখেছে।
ক্লাইমেট সেন্ট্রালের আবহাওয়াবিদ শেল উইংকলি বলেন, “চরম খরার ফলে মাটি শুষ্ক হয়ে গিয়েছিল। তাই বৃষ্টির পানি শোষণ না হওয়ায় দ্রুত বন্যা সৃষ্টি হয়। মে মাস থেকে এই অঞ্চলে স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি তাপমাত্রা বিরাজ করছে।”
সংস্থাটির মিডিয়া পরিচালক টম দি লিবার্টো বলেন, “আবহাওয়া বিভাগে অভিজ্ঞ কর্মীর অভাব পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলেছে। অভিজ্ঞতাকে সহজে প্রতিস্থাপন করা যায় না।”