আগামী ১ জুন অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের দ্বিতীয় দফাকে সামনে রেখে পোল্যান্ডের রাজধানী ওয়ারশতে রোববার প্রতিদ্বন্দ্বী দুই প্রার্থীর নেতৃত্বে পৃথক মিছিল অনুষ্ঠিত হয়েছে। এই নির্বাচনকে ইউরোপীয় ইউনিয়নপন্থী উদার মূল্যবোধ এবং জাতীয়তাবাদী রক্ষণশীলতার মধ্যে এক রকম লড়াই হিসেবে দেখা হচ্ছে।
ওয়ারশর মেয়র রাফাল ট্রাসকোভস্কি, যিনি গর্ভপাত ও এলজিবিটিকিউ অধিকারকে সমর্থন করেন, একদিকে তার সমর্থকদের নিয়ে মিছিল করেন। অন্যদিকে, রক্ষণশীল ইতিহাসবিদ কারোল নাভরকির নেতৃত্বে আরেকটি মিছিল হয়, যিনি গর্ভপাতবিরোধী অবস্থান নেওয়া এবং রক্ষণশীল মূল্যবোধে বিশ্বাসী।
এই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে এমন সময়, যখন বর্তমান প্রেসিডেন্ট আন্দ্রেজ দুদা, যিনি রক্ষণশীলদের পছন্দের প্রার্থী, তার দ্বিতীয় এবং শেষ পাঁচ বছরের মেয়াদ শেষে গ্রীষ্মে ক্ষমতা ছাড়তে যাচ্ছেন।
ট্রাসকোভস্কির মিছিলে নবনির্বাচিত রোমানিয়ার প্রেসিডেন্ট নিকুশোর দান অংশ নেন, যিনি সম্প্রতি কট্টর ডানপন্থী প্রতিদ্বন্দ্বী জর্জ সিমিওনকে পরাজিত করে জয়ী হয়েছেন।
ট্রাসকোভস্কি তার মিছিলকে “দেশপ্রেমিকদের মিছিল” হিসেবে অভিহিত করেন, অন্যদিকে নাভরকির সমর্থকরা অংশ নেন “পোল্যান্ডের জন্য মিছিল”-এ।
সাম্প্রতিক জনমত জরিপে দেখা গেছে, নির্বাচনে দুই প্রার্থীর মধ্যে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হবে, কারণ দুজনই ৪৭% করে সমর্থন পাচ্ছেন।
এই নির্বাচন পোল্যান্ডের ভবিষ্যৎ রাজনৈতিক পথ নির্ধারণে গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলতে পারে, কারণ প্রেসিডেন্টের এমন কিছু ক্ষমতা রয়েছে, যা দিয়ে তিনি সরকারের এজেন্ডা আটকে দিতে পারেন।
পিআইএস (জাতীয়তাবাদী ‘ল অ্যান্ড জাস্টিস’ দল), যারা ২০১৫ থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত ক্ষমতায় ছিল, তারাই সমর্থন দিচ্ছে নাভরকিকে।
বর্তমান প্রেসিডেন্ট দুদা এর আগেও সরকারপ্রধান ডোনাল্ড টাস্কের সংস্কারমূলক সরকারের অনেক বিল ভেটো দিয়ে আটকে দিয়েছেন, বিশেষ করে বিচার বিভাগ সংস্কার সংক্রান্ত।
২০২৩ সালে মধ্য-বাম এবং কেন্দ্রপন্থী দলগুলোর একটি জোটের নেতৃত্বে ক্ষমতায় আসেন প্রধানমন্ত্রী ডোনাল্ড টাস্ক। তিনি প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, পিআইএস সরকারের সময় নেয়া এমন নীতিগুলো বাতিল করবেন, যেগুলো ইউরোপীয় ইউনিয়নের চোখে আইনের শাসন ও সংখ্যালঘু অধিকার লঙ্ঘনের সমান।
ট্রাসকোভস্কি, যিনি টাস্কের নেতৃত্বাধীন ‘সিভিক কোয়ালিশন’ জোটের সমর্থন পেয়েছেন, গত সপ্তাহের প্রথম দফা নির্বাচনে সর্বোচ্চ ৩১.৩৬% ভোট পেয়েছেন। অন্যদিকে নাভরকি পেয়েছেন ২৯.৫৪% ভোট।