অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি বাহিনীর টানা হামলায় প্রাণহানি অব্যাহত রয়েছে। সর্বশেষ হামলায় আরও অন্তত ৭২ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছেন গাজা অঞ্চলের স্বাস্থ্যকর্মীরা। নিহতদের মধ্যে বেশ কয়েকজন ছিলেন যারা খাদ্য সহায়তার জন্য বিভিন্ন বিতরণকেন্দ্রে অপেক্ষা করছিলেন।
রোববার ভোর থেকে শুরু হওয়া হামলায় গাজা শহর এবং উত্তরের বিভিন্ন এলাকায় প্রাণ হারিয়েছেন অন্তত ৪৭ জন। আহতদের ঢল নামে গাজার উত্তরাঞ্চলের আল-আহলি হাসপাতালে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, গুরুতর চিকিৎসা সংকটের কারণে অনেক আহত ব্যক্তিকে মেঝেতে শুইয়ে রাখতে হচ্ছে। শিশু ও নারী রোগীর সংখ্যাও দিন দিন বাড়ছে।
ইসরায়েলি বাহিনী পূর্ব গাজা শহরে লিফলেট ছড়িয়ে সাধারণ মানুষকে দক্ষিণে সরে যাওয়ার আহ্বান জানাচ্ছে। তবে এসব ‘সতর্কতা’র পরপরই শুরু হচ্ছে বোমা হামলা, যার ফলে হতাহতের সংখ্যা আরও বাড়ছে।
এদিকে, দক্ষিণ গাজার রাফাহ এলাকার খাদ্য বিতরণ কেন্দ্রে সহায়তা নিতে আসা অন্তত পাঁচজন ফিলিস্তিনি রোববারের হামলায় প্রাণ হারিয়েছেন। বিতরণ কেন্দ্রগুলো বর্তমানে পরিচালনা করছে গাজা হিউম্যানিটারিয়ান ফাউন্ডেশন (জিএইচএফ)। গাজা প্রশাসনের দাবি, মে মাসের শেষদিক থেকে এসব কেন্দ্রে সহায়তা নিতে গিয়ে ইসরায়েলি গুলিতে ৫৮০ জনের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত এবং চার হাজারের বেশি আহত হয়েছেন।
মানবিক সংকট আরও ঘনীভূত হচ্ছে গাজায়। অস্ট্রেলীয় স্বেচ্ছাসেবী নার্স ক্রিস্টি ব্ল্যাক জানান, পুষ্টির অভাবে শিশুর মৃত্যু বাড়ছে। হাসপাতালগুলোতে দুধ বা শিশুদের বিকল্প খাবার নেই। অনেক শিশু আছে, যাদের বয়স ৯ বা ১০, কিন্তু দেখতে দুই বছর বয়সীদের মতো।
গাজার পরিস্থিতি এখন ভয়াবহ মানবিক বিপর্যয়ের চেহারা নিয়েছে। চিকিৎসা, খাদ্য, পানি—সবকিছুর অভাবে দিন পার করছেন লাখো মানুষ।