গাজায় চলমান সংঘর্ষের মাঝে ইসরায়েলের তথাকথিত ‘মানবিক সহায়তা’ কার্যক্রম নতুন করে উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। জাতিসংঘের তথ্য অনুযায়ী, গত ছয় সপ্তাহে গাজায় অন্তত ৮৭৫ জন ত্রাণপ্রত্যাশী নিহত হয়েছেন, যাদের অধিকাংশই প্রাণ হারিয়েছেন ত্রাণ বিতরণকেন্দ্রের আশপাশে।
এই সহিংসতা পরিচালিত হয়েছে Gaza Humanitarian Foundation (GHF) নামে একটি ইসরায়েল-যুক্তরাষ্ট্র পরিচালিত সংস্থার মাধ্যমে, যা মূলত অস্ত্র সহ ‘ত্রাণ কার্যক্রম’ চালাচ্ছে। বিশ্লেষকরা একে ‘মানবিকতার ছদ্মাবরণে সহিংসতা’ হিসেবে চিহ্নিত করছেন।
এদিকে ইসরায়েল দক্ষিণ গাজার রাফা শহরে একটি ‘হিউম্যানিটারিয়ান সিটি’ নির্মাণের ঘোষণা দিয়েছে, যেখানে কয়েক লাখ ফিলিস্তিনিকে একত্রে রাখা হবে। সমালোচকরা বলছেন, এই পরিকল্পনা আসলে এক ধরনের আধুনিক কনসেনট্রেশন ক্যাম্প, যা ‘জাতিগত নির্মূল’-এর পদক্ষেপ হিসেবে দেখা হচ্ছে।
ইসরায়েলি সাংবাদিক গিডিয়ন লেভি আলজাজিরাকে বলেন,
“এটি কেবল একটি শহর নয়, বরং মানুষদের গাজা থেকে চিরতরে সরিয়ে দেওয়ার প্রক্রিয়ার অংশ। এই পরিকল্পনার উদ্দেশ্য একেবারেই অপরাধমূলক।”
জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থা UNRWA জানিয়েছে, গাজায় এখন প্রতি ১০ শিশুর একজন অপুষ্টিতে ভুগছে। মার্চের পর থেকে খাদ্য সরবরাহ প্রায় পুরোপুরি বন্ধ হয়ে গেছে। বিশেষ করে উত্তর গাজায় দুর্ভিক্ষের আশঙ্কা ক্রমেই বাড়ছে।
এই পরিস্থিতির প্রেক্ষিতে জাতিসংঘের একটি পুনর্নির্ধারিত সম্মেলনে ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের স্বীকৃতি এবং যুদ্ধ-পরবর্তী গাজার ভবিষ্যৎ নিয়ে আলোচনা হবে বলে জানা গেছে। ফ্রান্স, সৌদি আরবসহ কয়েকটি দেশ এই আলোচনায় নেতৃত্ব দিচ্ছে।
ইসরায়েলি বাহিনী সোমবার রাত ও মঙ্গলবার ভোরে পশ্চিম তীরের বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে ২৮ জন ফিলিস্তিনিকে গ্রেপ্তার করেছে। আটক ব্যক্তিদের মধ্যে অনেকেই পূর্বে মুক্তিপ্রাপ্ত বন্দি ছিলেন।