লন্ডন, ১৩ ফেব্রুয়ারি: যুক্তরাজ্যের রাজধানী লন্ডনের হোয়াইটচ্যাপেল স্টেশনে সম্প্রতি বাংলা সাইনবোর্ড স্থাপন করা হয়েছে, যা স্থানীয় বাংলাদেশি সম্প্রদায়ের প্রতি শ্রদ্ধা প্রদর্শন হিসেবে দেখা হচ্ছে। এটি ঐতিহাসিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ, কারণ ভারতে ব্রিটিশ শাসনের সময় থেকেই লন্ডনের এই অঞ্চলে বাঙালিরা বসবাস শুরু করেন। বর্তমানে, এই এলাকার মোট জনসংখ্যার প্রায় ৪০ শতাংশই বাঙালি, এবং ইংল্যান্ডের অধিকাংশ বাঙালি এখানেই বসবাস করেন।
হোয়াইটচ্যাপেল স্টেশন দীর্ঘদিন ধরেই বাংলাদেশি সম্প্রদায়ের সাথে সম্পর্কিত, এবং এখানকার বিভিন্ন দোকানের নাম ইতিমধ্যেই বাংলা ভাষায় লেখা রয়েছে। একাধিক বার স্থানীয়দের দাবির পর, লন্ডন প্রশাসন স্টেশনটির সাইনবোর্ডে বাংলা ভাষায় নাম লেখানোর সিদ্ধান্ত নেয়, যাতে বাঙালি জনগণের অবদান সম্মানিত হয়। সুতরাং, স্টেশনের প্রবেশপথ এবং গেটগুলিতে বাংলা ভাষায় সাইনবোর্ড স্থাপন করা হয়েছে, যাতে লেখা রয়েছে, “হোয়াইটচ্যাপেল স্টেশনে আপনাকে স্বাগত”।
এমপি রুপার্ট লোয়ির বিতর্কিত মন্তব্য
এদিকে, গ্রেট ইয়ারমাউথের এমপি রুপার্ট লোয়ি তার সামাজিক মিডিয়া অ্যাকাউন্টে হোয়াইটচ্যাপেল স্টেশনের ইংরেজি ও বাংলা নামের সাইনবোর্ডের ছবি শেয়ার করেছেন। তিনি সেখানে লিখেন, “এটা লন্ডন। এখানে স্টেশনের নাম ইংরেজিতে থাকা উচিত, কেবল ইংরেজিতেই।” তার এই মন্তব্য অল্প সময়ের মধ্যেই বিতর্ক সৃষ্টি করে।
বিতর্কের ঝড় ও বিভিন্ন প্রতিক্রিয়া
লোয়ির মন্তব্যের পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিভিন্ন প্রতিক্রিয়া দেখা যায়। কেউ তার মতামত সমর্থন করেছেন, আবার অনেকেই একাধিক ভাষায় সাইনবোর্ড রাখার পক্ষে যুক্তি তুলে ধরেছেন। বিশেষত, যারা বহুভাষী সমাজে বাস করেন, তারা একে বিভিন্ন ভাষার সংস্কৃতির সমর্থন হিসেবে দেখছেন।
এছাড়া, সামাজিক মাধ্যম এক্স (আগের নাম টুইটার) এবং টেসলার মালিক ইলন মাস্কও রুপার্ট লোয়ির দাবির প্রতি ‘ইয়েস’ লিখে সমর্থন জানিয়েছেন, যা বিষয়টিকে আরও জটিল করে তুলেছে।
এটি প্রমাণ করে যে, ভাষা এবং সংস্কৃতি বিষয়ক বিতর্কগুলি কখনও কখনও একটি দেশের বহুসাংস্কৃতিক সমাজে উত্তপ্ত আলোচনা সৃষ্টি করতে পারে। লন্ডনের হোয়াইটচ্যাপেল স্টেশনে বাংলা সাইনবোর্ড স্থাপনের বিষয়টি এখন ইংল্যান্ডের রাজনৈতিক এবং সামাজিক অঙ্গনে একটি তাজা বিতর্ক হয়ে উঠেছে।