রিয়াদ, সৌদি আরব —
বিশ্ব রাজনীতির মঞ্চে নতুন নাটকীয় মোড়—মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ঘোষণা দিয়েছেন, সিরিয়ার উপর আরোপিত দীর্ঘমেয়াদি নিষেধাজ্ঞা তিনি প্রত্যাহার করছেন। সৌদি আরব ও তুরস্কের নেতৃত্বের সরাসরি অনুরোধে এই চমকপ্রদ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে বলে জানান তিনি।
মঙ্গলবার সৌদি রাজধানী রিয়াদে অনুষ্ঠিত “যুক্তরাষ্ট্র-সৌদি বিনিয়োগ সম্মেলনে” এক আবেগঘন ভাষণে ট্রাম্প বলেন,
“মধ্যপ্রাচ্যের মানুষের প্রতি আমার গভীর শ্রদ্ধা আছে। সিরিয়ার জনগণ বহুদিন ধরে ভোগান্তি পোহাচ্ছে। এখন তাদের এগিয়ে যাওয়ার সময় এসেছে।”
তিনি আরও জানান, চলতি সপ্তাহের শেষেই মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও তুরস্ক সফর করবেন এবং সেখানে সিরিয়ার নতুন সরকার গঠনের প্রক্রিয়ায় যুক্ত পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করবেন।
সৌদি ও তুর্কি নেতৃত্বের ‘আনুষ্ঠানিক অনুরোধ’
ট্রাম্প বলেন,
“ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমানের সঙ্গে আমার গভীর আলোচনা হয়েছে। তুরস্কের প্রেসিডেন্ট এরদোয়ানও এই পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য আমাকে উৎসাহিত করেছেন। তারা দুজনেই বিশ্বাস করেন, সিরিয়ার জনগণের উন্নতির জন্য নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার এখন সময়ের দাবি।”
নিষেধাজ্ঞাগুলো ‘নির্মম’ হলেও ‘প্রয়োজনীয়’ ছিল উল্লেখ করে তিনি বলেন,
“বাশার আল-আসাদের সময় এই নিষেধাজ্ঞা একটি বড় ভূমিকা পালন করেছিল। তবে এখন সময় এসেছে, যখন আমাদের অতীত ভুলে ভবিষ্যতের দিকে তাকাতে হবে।”
আহমেদ আল-সারার আবির্ভাব ও কূটনৈতিক সম্ভাবনা
সবচেয়ে চমকপ্রদ দিক হচ্ছে, ট্রাম্প ঘোষণা দিয়েছেন—তিনি সৌদিতে সিরিয়ার নতুন প্রেসিডেন্ট আহমেদ আল-সারার সঙ্গে বৈঠক করবেন। এই বৈঠককে অনেকেই মধ্যপ্রাচ্যে নতুন এক কূটনৈতিক অধ্যায়ের সূচনা হিসেবে দেখছেন।
লন্ডন টাইমসের এক প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে,
“এই বৈঠকে আব্রাহাম চুক্তির আওতায় ইসরায়েলের সঙ্গে সিরিয়ার সম্ভাব্য কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপনের বিষয়েও আলোচনা হতে পারে।”
“গুড লাক সিরিয়া” — ট্রাম্পের বার্তা
ট্রাম্প তার বক্তৃতার শেষে বলেন,
“আমি সিরিয়ার নতুন নেতৃত্বকে বলব—গুড লাক! সৌদি আরব যেভাবে নিজেদের রূপান্তর করেছে, সিরিয়াও পারবে। আমরা একসঙ্গে অসাধারণ কিছু করে দেখাতে পারি। এখনও আমরা একটি উজ্জ্বল ভোরের সামনে দাঁড়িয়ে, যা মধ্যপ্রাচ্যের মানুষের জন্য এক নতুন সম্ভাবনার বার্তা বহন করছে।”
এই ঘোষণাকে কেন্দ্র করে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে মিশ্র প্রতিক্রিয়া তৈরি হয়েছে। কেউ এটিকে ‘চমৎকার কৌশলগত চাল’ হিসেবে দেখছেন, আবার কেউ বলছেন—এটি মধ্যপ্রাচ্যে ক্ষমতার ভারসাম্য পুনর্গঠনের অংশমাত্র।