যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে অর্থনৈতিক চুক্তি নিয়ে “উৎপাদনশীল আলোচনা” হয়েছে বলে জানিয়েছে ডাউনিং স্ট্রিট। রোববার রাতে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী স্যার কেয়ার স্টারমার এবং মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যে এক ফোনালাপে উভয় পক্ষই বাণিজ্য আলোচনা দ্রুতগতিতে চালিয়ে যাওয়ার ব্যাপারে সম্মত হয়েছেন।
যুক্তরাজ্যের গাড়ি রপ্তানি খাতের বার্ষিক মূল্য প্রায় ৭.৬ বিলিয়ন পাউন্ড, যেখানে যুক্তরাষ্ট্র দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাজার। ট্রাম্পের এই নতুন নীতির ফলে রোলস-রয়েস, অ্যাস্টন মার্টিনের মতো বিলাসবহুল গাড়ি নির্মাতারা সরাসরি ক্ষতির মুখে পড়বে।
এই আলোচনার গুরুত্ব আরও বেড়েছে, কারণ যুক্তরাষ্ট্র বুধবার থেকে ব্রিটিশ গাড়ি আমদানিতে ২৫% শুল্ক আরোপ করতে চলেছে। এই শুল্ক থেকে শেষ মুহূর্তে ছাড় পাওয়ার জন্য ব্রিটিশ আলোচকরা কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন।
বাণিজ্য যুদ্ধের আশঙ্কা
নং ১০-এর সূত্র বলছে, ট্রাম্প প্রশাসন ছাড় না দিলে যুক্তরাজ্য পাল্টা শুল্ক আরোপ করতে প্রস্তুত। যদিও প্রধানমন্ত্রী স্টারমার আগে বলেছেন, তিনি যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্য যুদ্ধ চান না, তবে তিনি পরিষ্কার করেছেন যে যুক্তরাজ্য “প্রয়োজনে সমান প্রতিশোধমূলক শুল্ক আরোপের অধিকার সংরক্ষণ করে”।
যুক্তরাজ্যের সরকার বলছে, অন্যান্য দেশের তুলনায় যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে তাদের বাণিজ্যিক সম্পর্ক বেশি ভারসাম্যপূর্ণ। তবে, অর্থনৈতিক বিশেষজ্ঞদের মতে, পাল্টা শুল্ক আরোপ করলে ব্রিটেনের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতে কয়েক বিলিয়ন পাউন্ডের ক্ষতি হতে পারে।
যুক্তরাজ্যের সম্ভাব্য প্রতিক্রিয়া
যদি যুক্তরাষ্ট্র ব্রিটিশ গাড়ি আমদানির ওপর শুল্ক আরোপ করে, তবে যুক্তরাজ্যের প্রতিক্রিয়া কী হবে তা এখনো পরিষ্কার নয়। তবে সম্ভাব্য পদক্ষেপগুলোর মধ্যে রয়েছে:
- মার্কিন পণ্যের ওপর শুল্ক বসানো
- যুক্তরাষ্ট্রের জন্য গুরুত্বপূর্ণ খাতগুলোতে কর বৃদ্ধি
- নির্দিষ্ট মার্কিন ব্র্যান্ডের পণ্য, যেমন হার্লি ডেভিডসন মোটরসাইকেল-এর ওপর কর বসানো
অন্যদিকে, ট্রাম্প বলছেন, তার সিদ্ধান্ত মার্কিন নির্মাতাদের সুরক্ষা দেবে এবং দেশে কর্মসংস্থান বৃদ্ধি করবে। যদিও বিশ্লেষকরা বলছেন, এর ফলে আমেরিকান ভোক্তাদের জন্য গাড়ির দাম বাড়তে পারে। তবে ট্রাম্পের প্রতিক্রিয়া স্পষ্ট—তিনি বলেছেন, “আমি পরোয়া করি না, কারণ এর ফলে মানুষ আমেরিকান গাড়ি কিনবে।”
যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্রের আলোচকরা এখনো একটি চুক্তিতে পৌঁছানোর চেষ্টা করছেন যাতে ব্রিটিশ গাড়ি রপ্তানি শুল্ক থেকে ছাড় পায়। তবে যদি ট্রাম্প তার সিদ্ধান্তে অনড় থাকেন, তাহলে ব্রিটেনকে কঠিন সিদ্ধান্ত নিতে হবে—বাণিজ্য যুদ্ধের ঝুঁকি নেবে, নাকি মার্কিন শুল্ক মেনে নেবে?
এই সপ্তাহের মধ্যেই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত আসার সম্ভাবনা রয়েছে।