ভারতীয় কর্তৃপক্ষ যুক্তরাষ্ট্রের অনুরোধে একটি $96 বিলিয়ন ক্রিপ্টোকারেন্সি এক্সচেঞ্জ চালানোর অভিযোগে লিথুয়ানিয়ান নাগরিক আলেকসেজ বেসিকভকে গ্রেফতার করেছে। এই এক্সচেঞ্জটি সন্ত্রাসী সংগঠন, মাদক পাচারকারী এবং সাইবার অপরাধীদেরকে অর্থ পাচারের সুযোগ দেয়, এমনটাই অভিযোগ করেছে যুক্তরাষ্ট্র।
এই গ্রেফতারের মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বে একটি তীব্র অনুসন্ধান শেষ হয়েছে, যা গত সপ্তাহে ক্রিপ্টো এক্সচেঞ্জটি বাজেয়াপ্ত করা, $২৬ মিলিয়ন মূল্যমানের সম্পদ ফ্রিজ করা এবং বেসিকভ ও তার এক সহযোগীর বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র উন্মোচনের মাধ্যমে আরও তীব্র হয়ে ওঠে।
যুক্তরাষ্ট্র আশা করছে, বেসিকভের নির্বাসন আবেদন করা হবে এবং তাকে যুক্তরাষ্ট্রের ভির্জিনিয়া রাজ্যের পূর্বাঞ্চলীয় জেলা আদালতে নিয়ে আসা হবে। এটি অর্থ পাচারের বিরুদ্ধে চলমান লড়াইয়ে একটি বড় সাফল্য হবে। গ্রেফতারটি এমন একটি সময়ে ঘটছে যখন ট্রাম্প প্রশাসন রাশিয়ার বিরুদ্ধে কিছু ক্ষেত্রে চাপ কমিয়েছে, যেমন সাইবার আক্রমণ, তবে বিচার বিভাগ এখনও রাশিয়ার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট অপরাধীদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নিচ্ছে।
যুক্তরাষ্ট্রের বিচার বিভাগ অনুসারে, বেসিকভ রাশিয়ায় বসবাস করছিল, তবে কেন তিনি ভারতে এসেছিলেন তা পরিষ্কার নয়।
ভারতের কেরালা রাজ্যের পুলিশ এই সপ্তাহে বেসিকভকে গ্রেফতার করেছে। ভারতের কেন্দ্রীয় তদন্ত ব্যুরো এক বিবৃতিতে জানিয়েছে যে বেসিকভ একটি “পলাতক”।
যুক্তরাষ্ট্রের বিচার বিভাগ এবং জার্মানি ও ফিনল্যান্ডের সহযোগিতায় গ্যারানটেক্স এক্সচেঞ্জটি বন্ধ করা হয়েছিল। এই এক্সচেঞ্জটি আন্তর্জাতিক অপরাধী সংগঠন, সন্ত্রাসী সংগঠন এবং নিষেধাজ্ঞা লঙ্ঘনকারী প্রতিষ্ঠানগুলির মাধ্যমে অর্থ পাচারকে সহজতর করেছিল।
যুক্তরাষ্ট্রের বিচার বিভাগের মুখপাত্র নিকোল নাভাস অক্সম্যান সিএনএন-এ একটি ইমেইলে নিশ্চিত করেছেন, “গ্যারানটেক্সের একজন প্রশাসক আলেকসেজ বেসিকভকে ভারতে গ্রেফতার করা হয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের অনুরোধে।” তবে তিনি আর কোনো মন্তব্য করেননি।
এই গ্রেফতারিটি একটি সপ্তাহেরও কম সময় পরে ঘটেছে, যখন যুক্তরাষ্ট্রের বিচার বিভাগ বেসিকভ এবং তার রুশ সহযোগী আলেক্সান্ডার মিরা সারদার বিরুদ্ধে অভিযোগ উন্মোচন করেছে। বেসিকভ গ্যারানটেক্সের সিস্টেম চালানোর এবং তাকে অনলাইনে রাখার দায়িত্বে ছিলেন, এবং মিরা সারদা এক্সচেঞ্জের সহ-প্রতিষ্ঠাতা এবং প্রধান বাণিজ্যিক কর্মকর্তা ছিলেন।
এই মামলা এটি প্রমাণ করে যে অভিযুক্ত অর্থ পাচারকারীদের গ্রেফতার করা হলেই তাদের অপরাধী কার্যক্রম ব্যাহত করা সম্ভব। ২০১৫ থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত এক্সচেঞ্জটি $৯৬ বিলিয়ন পরিমাণ ট্রানজাকশন প্রক্রিয়া করেছে, এমনটাই অভিযোগপত্রে বলা হয়েছে।