বিশ্ববাণিজ্যে সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত মুদ্রা মার্কিন ডলারের মান রেকর্ড পরিমাণে পতন ঘটেছে। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বিভিন্ন দেশের ওপর নতুন করে শুল্ক আরোপের ঘোষণা দেওয়ার পর বিশ্ব অর্থনীতিতে দেখা দিয়েছে ব্যাপক অস্থিরতা, যার সরাসরি প্রভাব পড়েছে ডলারের ওপর।
শুক্রবার (যুক্তরাষ্ট্রের স্থানীয় সময় অনুযায়ী) ডলারের মান নেমে দাঁড়িয়েছে ৯৯.০১–এ, যা গত এক বছরের মধ্যে প্রায় ৮ শতাংশ কমে যাওয়ার রেকর্ড এবং তিন বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন। তথ্যটি নিশ্চিত করেছে যুক্তরাষ্ট্রের ডলার সূচক (DXY) এবং মার্কিন সাময়িকী Forbes।
বিশ্লেষকদের মতে, ট্রাম্পের ঘোষণার পরপরই বৈশ্বিক বাজারে অনিশ্চয়তা দেখা দেয়। বিশ্বের অনেক দেশ আমদানি নির্ভর হওয়ায় হঠাৎ করে শুল্ক বৃদ্ধির ফলে আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে চাপ সৃষ্টি হয়। আমেরিকা, ইউরোপ ও এশিয়ার বড় বড় শেয়ারবাজারে পড়ে যায় ধস। পরিস্থিতি সামাল দিতে চীন ব্যতীত অন্যান্য দেশের ওপর শুল্ক স্থগিতের ঘোষণা দেন ট্রাম্প, যদিও বাজারে এর ইতিবাচক প্রভাব ততটা পড়েনি।
মুদ্রা বিনিময়ের বাজারে এক দেশের মুদ্রা দিয়ে আরেক দেশের মুদ্রা কেনাবেচা হয়, যাকে বলা হয় এক্সচেঞ্জ রেট। এই বিনিময় হারের ওঠানামা নির্ভর করে বৈশ্বিক অর্থনৈতিক পরিস্থিতি, রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা এবং পণ্যের চাহিদার ওপর। অধিকাংশ মুদ্রা চাহিদা ও সরবরাহের ভিত্তিতে মূল্য হারায় বা বাড়ায়, যাকে ফ্লোটিং কারেন্সি সিস্টেম বলা হয়।
এক সময় অস্ট্রেলিয়ান ডলার ছিল মার্কিন ডলারের সঙ্গে নির্দিষ্ট এক রেটে যুক্ত। ১৯৯৮ সালে সেই নিয়ম বাতিল হওয়ায় এখন অস্ট্রেলিয়ান ডলারের মানও বাজার চাহিদা অনুযায়ী ওঠানামা করে। বর্তমানে যেসব মুদ্রা আন্তর্জাতিকভাবে শক্তিশালী, তার পেছনে অন্যতম কারণ হলো সংশ্লিষ্ট দেশের অর্থনৈতিক ভিত্তি, স্থিতিশীল রাজনীতি ও বৈশ্বিক চাহিদা।
এই পরিস্থিতি বিশ্বের অর্থনীতিতে বড় ধরনের প্রভাব ফেলতে পারে বলে মনে করছেন অর্থনীতিবিদরা। বিশেষ করে উন্নয়নশীল ও আমদানি নির্ভর দেশগুলো এর কারণে চাপে পড়তে পারে।