ইউক্রেন দাবি করেছে যে চেরনোবিল পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের বিকিরণ প্রতিরক্ষা ঢাল রাশিয়ার ড্রোন হামলার কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ইউক্রেনের কর্মকর্তারা সতর্ক করেছেন, এই হামলা পরিবেশগত বিপর্যয়ের ঝুঁকি তৈরি করতে পারে।
রুশ হামলার ভয়াবহতা
ইউক্রেনের জ্বালানি মন্ত্রণালয় জানায়, রাশিয়ার সামরিক বাহিনী একাধিক কামিকাজে ড্রোন ব্যবহার করে চেরনোবিলের সংরক্ষিত অঞ্চলে হামলা চালায়। এতে ১৯৮৬ সালের পারমাণবিক বিস্ফোরণের পর নির্মিত প্রতিরক্ষা কাঠামোর একটি অংশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
“এই হামলা অত্যন্ত ভয়ংকর। এটি শুধু ইউক্রেন নয়, পুরো ইউরোপের জন্য হুমকি হয়ে উঠতে পারে,” বলেন ইউক্রেনের পরিবেশ মন্ত্রী ওলেক্সি কুজমেনকো।
বিকিরণের ঝুঁকি কতটা?
বৈজ্ঞানিক বিশ্লেষকদের মতে, চেরনোবিলের বর্তমান বিকিরণ মাত্রা স্থিতিশীল থাকলেও প্রতিরক্ষা ঢালে বড় ধরনের ক্ষতি হলে তা আশপাশের এলাকায় বিকিরণ ছড়িয়ে দিতে পারে।
“যদি প্রতিরক্ষা গম্বুজে বড় ধরনের ফাটল তৈরি হয়, তবে বিকিরণ বাইরে ছড়িয়ে পড়তে পারে, যা জনস্বাস্থ্যের জন্য ভয়াবহ পরিণতি ডেকে আনবে,” বলেছেন এক ইউক্রেনীয় পারমাণবিক বিশেষজ্ঞ।
রাশিয়ার প্রতিক্রিয়া
রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় এই অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেছে এবং দাবি করেছে যে, ইউক্রেনের নিজস্ব প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার ত্রুটির কারণেই এ ধরনের ঘটনা ঘটতে পারে।
আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া
✅ জাতিসংঘ: এই হামলার ব্যাপারে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে এবং পারমাণবিক স্থাপনায় সামরিক হামলা বন্ধের আহ্বান জানিয়েছে।
✅ যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন: রাশিয়ার এই হামলাকে ‘বেপরোয়া ও দায়িত্বজ্ঞানহীন’ বলে অভিহিত করেছে এবং নতুন নিষেধাজ্ঞার ইঙ্গিত দিয়েছে।
✅ আইএইএ (আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থা): পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছে এবং নিরাপত্তা নিশ্চিতে বিশেষজ্ঞ দল পাঠানোর পরিকল্পনা করছে।
ইউক্রেন সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, চেরনোবিল অঞ্চলে আরও উন্নত প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা স্থাপন করা হবে এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সহায়তায় বিকিরণ সংক্রান্ত ঝুঁকি কমানোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, পারমাণবিক স্থাপনায় হামলা আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন এবং এটি বৈশ্বিক নিরাপত্তার জন্য মারাত্মক হুমকি হতে পারে। ইউক্রেন ও পশ্চিমা দেশগুলো রাশিয়াকে এ ধরনের হামলা থেকে বিরত থাকতে কঠোরভাবে সতর্ক করেছে।
এই ঘটনার ফলে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ আরও উত্তেজনাপূর্ণ মোড় নিতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন বিশ্লেষকরা।