গাজার দক্ষিণাঞ্চলে নাসের মেডিকেল কমপ্লেক্সে রবিবার রাতে ইসরায়েলি বিমান হামলা চালানো হয়, যার ফলে হাসপাতালের একটি অংশ আগুনে পুড়ে যায় এবং বহু হতাহতের ঘটনা ঘটে। নাসের মেডিকেল কমপ্লেক্সে কর্মরত দুই চিকিৎসক সিএনএনকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
ইসরায়েলি সেনাবাহিনী স্বীকার করেছে যে তারা হাসপাতালের ভেতরে কার্যক্রম চালানো এক “গুরুত্বপূর্ণ হামাস সন্ত্রাসী” লক্ষ্য করে হামলা চালিয়েছে, তবে ওই ব্যক্তির পরিচয় প্রকাশ করেনি।
হামাস-সম্পর্কিত আল-আকসা টিভি জানিয়েছে যে হামলায় হামাসের রাজনৈতিক ব্যুরোর সদস্য ইসমাইল বারহুম এবং তার ভাতিজা ইব্রাহিম নিহত হয়েছেন। বারহুম ১৮ মার্চ ইসরায়েলি হামলায় আহত হয়েছিলেন এবং চিকিৎসাধীন অবস্থায় ছিলেন। হামাস পরে তার মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করে এবং বলেছে যে এটি ইসরায়েলের “আন্তর্জাতিক নীতি ও চুক্তির প্রতি অবজ্ঞার” প্রমাণ।
আন্তর্জাতিক মানবিক আইনের অধীনে, যুদ্ধকালীন সময়ে হাসপাতালগুলো বিশেষ সুরক্ষা পেতে পারে এবং শুধুমাত্র খুব সীমিত পরিস্থিতিতে লক্ষ্যবস্তু হতে পারে। জেনেভা কনভেনশন অনুসারে, যদি হাসপাতাল কোনোভাবে “শত্রুর বিরুদ্ধে ক্ষতিকর কর্মকাণ্ডে” যুক্ত থাকে, তাহলে সেটি লক্ষ্যবস্তু হতে পারে।
এই হামলার পর, ইসরায়েলি সেনাবাহিনী গাজার দক্ষিণাঞ্চলে তাদের সামরিক অভিযান আরও তীব্র করেছে। সেনাবাহিনী দাবি করেছে যে তারা একটি সম্পূর্ণ জেলা ঘিরে ফেলেছে এবং বাসিন্দাদের সেখান থেকে সরে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছে।
ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্যমতে, গত অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া যুদ্ধের ফলে গাজায় মৃতের সংখ্যা ৫০,০০০ ছাড়িয়েছে।
নাসের মেডিকেল কমপ্লেক্স, যা বর্তমানে গাজার সবচেয়ে বড় কার্যকর হাসপাতাল, ইতিপূর্বেও ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর হামলার লক্ষ্যবস্তু হয়েছে। ইসরায়েল দাবি করেছে যে হাসপাতালটি হামাস সদস্যদের আশ্রয়স্থল হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে।
রবিবারের হামলায় হাসপাতালের দ্বিতীয় তলা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। মেডিকেল এইড ফর প্যালেস্টাইনের শিশু বিশেষজ্ঞ ড. টানিয়া হাজ হাসান সিএনএনকে এ তথ্য জানিয়েছেন।
আমেরিকান চিকিৎসক ড. মার্ক পার্লমাটার জানান, হামলাটি পুরুষদের সার্জিক্যাল ইউনিটে আঘাত হানে, যার ফলে বহু হতাহতের ঘটনা ঘটে। হামলার সময় হাসপাতালে ইউরোপীয় ও আমেরিকান চিকিৎসক দল কাজ করছিলেন।
ঘটনার পরপরই প্রকাশিত ছবিতে দেখা যায়, আগুনে হাসপাতালের একটি অংশ পুড়ে গেছে এবং ধোঁয়া উড়ছে। আহতদের সাহায্যের জন্য রাস্তায় মানুষের ভিড় জমে যায়।