গাজায় এখনও কতজন ইসরায়েলি জিম্মি রয়েছেন? যুদ্ধবিরতির প্রথম ধাপে ৬ জন জীবিত বন্দি মুক্তির অপেক্ষায়
গাজায় হামাসের হাতে বন্দি থাকা ইসরায়েলি এবং অন্যান্য বিদেশি নাগরিকদের মুক্তি দেওয়ার প্রক্রিয়া ধাপে ধাপে এগিয়ে চলছে। ১৯ জানুয়ারি থেকে শুরু হওয়া ছয় সপ্তাহব্যাপী যুদ্ধবিরতির শর্ত অনুযায়ী, প্রথম পর্যায়ে মোট ৩৩ জন ইসরায়েলিকে মুক্তি দেওয়ার কথা ছিল। তবে এখনো সবাই মুক্তি পাননি, এবং অনেকের ভাগ্য অনিশ্চিত রয়ে গেছে।
প্রথম ধাপের মুক্তির আপডেট
যুদ্ধবিরতির প্রথম পর্যায়ে বন্দিদের মুক্তির পরিকল্পনা অনুযায়ী:
- মোট ৩৩ জন ইসরায়েলিকে মুক্তি দেওয়ার কথা ছিল
- এখন পর্যন্ত ১৯ জনকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে
- বাকি ১৪ জন এখনো মুক্তির অপেক্ষায়
- ইসরায়েল বলছে, এই ১৪ জনের মধ্যে ৮ জন মারা গেছেন
- ফলে এখনো ৬ জন জীবিত বন্দি প্রথম ধাপে মুক্তি পাওয়ার কথা রয়েছে
এছাড়া, হামাসের সঙ্গে করা একটি পৃথক চুক্তির অধীনে পাঁচজন থাই নাগরিককেও মুক্তি দেওয়া হয়েছে।
গাজায় এখনও কতজন বন্দি রয়ে গেছেন?
যুদ্ধবিরতির প্রথম ধাপের পরও গাজায় এখনো ৭০ জনের বেশি বন্দি রয়ে গেছেন, যাদের ৭ অক্টোবর হামাস তুলে নিয়ে যায়।
- ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ এবং আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো মনে করছে, এই ৭০ জনের অর্ধেকেরও বেশি সম্ভবত জীবিত রয়েছেন।
- বাকিদের ভাগ্য সম্পর্কে স্পষ্ট তথ্য নেই, তবে অনেকের মৃত্যুর আশঙ্কা করা হচ্ছে।
মুক্তি প্রক্রিয়া ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা
হামাস ও ইসরায়েলের মধ্যে বন্দি বিনিময়ের আলোচনায় মধ্যস্থতা করছে কাতার, মিশর এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র।
- এই যুদ্ধবিরতি ছয় সপ্তাহ স্থায়ী হওয়ার কথা থাকলেও, বন্দি বিনিময়ের শর্ত ঠিক কীভাবে পালিত হবে, তা এখনও পুরোপুরি নিশ্চিত নয়।
- বিশেষজ্ঞদের মতে, প্রথম দফার বন্দি মুক্তির পর দ্বিতীয় দফার আলোচনা আরও কঠিন হতে পারে, কারণ হামাস সম্ভবত আরও বেশি শর্ত আরোপ করবে।
- ইসরায়েল পরিষ্কার করেছে যে, যদি হামাস বন্দি মুক্তির চুক্তি লঙ্ঘন করে, তবে তারা আবার সামরিক অভিযান শুরু করতে পারে।
আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া ও উদ্বেগ

- জাতিসংঘ ও অন্যান্য আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা দ্রুত বন্দিদের মুক্তির আহ্বান জানাচ্ছে।
- মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও অন্যান্য পশ্চিমা দেশগুলোর পরামর্শ, যুদ্ধবিরতি দীর্ঘস্থায়ী করে বন্দি বিনিময়ের মাধ্যমে সংকটের সমাধান করা উচিত।
- তবে ইসরায়েলি নেতৃত্বের দাবি, যদি প্রয়োজন হয়, তবে গাজার পরিস্থিতি সামরিকভাবে নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে সমাধান করা হবে।
পরিস্থিতি এখন কোন দিকে যাচ্ছে?
যুদ্ধবিরতির শর্ত অনুযায়ী, বন্দি বিনিময়ের দ্বিতীয় ধাপে আরও বন্দি মুক্তি পাওয়ার কথা রয়েছে। তবে পরিস্থিতি জটিল, কারণ:
- হামাস দাবি করছে, ইসরায়েল যুদ্ধবিরতির সময়সীমা দীর্ঘায়িত না করলে, তারা আর বন্দি মুক্তি দেবে না।
- ইসরায়েলি বাহিনী কৌশলগতভাবে গাজার পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছে এবং প্রয়োজনে সামরিক পদক্ষেপের প্রস্তুতি নিচ্ছে।
- বিশ্লেষকরা বলছেন, এই যুদ্ধবিরতি ভেঙে গেলে, নতুন করে ইসরায়েল-হামাস সংঘর্ষ আরও তীব্র হতে পারে।
উপসংহার
গাজার পরিস্থিতি এখনো উত্তপ্ত, এবং বন্দি বিনিময়ের আলোচনায় অনেক কিছু নির্ভর করছে ভবিষ্যতের কূটনৈতিক পদক্ষেপের ওপর।
- বর্তমানে ৬ জন জীবিত ইসরায়েলি বন্দি প্রথম ধাপে মুক্তির অপেক্ষায়।
- গাজায় এখনো ৭০ জনের বেশি বন্দি রয়েছেন, যাদের অর্ধেক জীবিত বলে মনে করা হচ্ছে।
- এই বন্দি বিনিময় এবং যুদ্ধবিরতি সফলভাবে এগিয়ে গেলে, এটি ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে চলমান সংঘর্ষ কমানোর একটি সম্ভাবনা তৈরি করতে পারে।
তবে, যদি কোনো পক্ষ চুক্তি লঙ্ঘন করে, তাহলে সংঘর্ষ আরও তীব্র হয়ে উঠতে পারে, যা গাজার মানবিক সংকটকে আরও বাড়িয়ে তুলবে।