মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনা নতুন মাত্রায় পৌঁছেছে। ইসরায়েলের সামরিক ও পারমাণবিক স্থাপনাগুলোতে ইরানি বাহিনীর নজিরবিহীন হামলার পর এবার ইসরায়েলের মাটিতে সরাসরি ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলা চালিয়েছে ইরান। এই পাল্টা আক্রমণকে তেহরান আখ্যা দিয়েছে “True Promise 3”—যেখানে লক্ষ্য ছিল ডজনখানেক সামরিক ঘাঁটি, বিমানবন্দর ও সেনা সদরদপ্তর।
ইরানের পাল্টা প্রতিক্রিয়া
ইরানের বিপ্লবী গার্ড বাহিনী এক বিবৃতিতে জানায়,
“ইসরায়েল আমাদের সার্বভৌমত্বে হামলা চালিয়েছে। এর জবাব আমরা দিয়েছি। যতক্ষণ না হুমকি দূর হয়, আমরা থামব না।”
তেহরানে জনগণের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা গেলেও অনেকেই রাস্তায় নেমে সেনাবাহিনীর সমর্থনে স্লোগান দেয়।
ইসরায়েলের ক্ষয়ক্ষতি
ইসরায়েলের বিভিন্ন শহরে বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেছে। তেলআভিভ ও জেরুজালেমে আকাশজুড়ে আলোর ঝলকানি, বিমান সতর্কতা সাইরেন এবং ধ্বংসস্তূপের ছবি ছড়িয়ে পড়ে। স্থানীয় সংবাদমাধ্যম জানায়, এখন পর্যন্ত কমপক্ষে ৭ জন নিহত ও ৩০ জনের বেশি আহত হয়েছে।
নেতানিয়াহুর কড়া হুঁশিয়ারি ও আবেদন
ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু সরাসরি ইরানিদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন:
“আমাদের যুদ্ধ ইরানিদের সঙ্গে নয়, বরং সেই স্বৈরাচারী শাসকদের সঙ্গে, যারা নিজের দেশের মানুষকে যুদ্ধের আগুনে ঠেলে দিচ্ছে। ইরানিরা যদি স্বাধীনতা চায়, শান্তি চায়—তাহলে এখনই সময় রুখে দাঁড়ানোর।”
তিনি আরও বলেন,
আমরা পাল্টা জবাব আরও শক্তভাবে দেব। ইসরায়েলের নিরাপত্তা নিয়ে কেউ খেলা করতে পারবে না।”
আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া
এই পাল্টাপাল্টি আক্রমণ নিয়ে বিশ্বজুড়ে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে।
জাতিসংঘ মহাসচিব দ্রুত যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানিয়েছেন।
যুক্তরাষ্ট্র বলেছে, তারা এই হামলায় জড়িত নয়, তবে ইসরায়েলের আত্মরক্ষার অধিকারে সমর্থন জানায়।
রাশিয়া ও চীন উভয় পক্ষকেই ‘সংযম’ দেখানোর অনুরোধ করেছে।
বিশ্লেষণ: যুদ্ধ নাকি সর্বাত্মক সংঘাতের দিকেই?
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই সংঘাত যদি এখনই থামানো না যায়, তাহলে এটি বৃহত্তর আঞ্চলিক যুদ্ধে পরিণত হতে পারে। ইতোমধ্যে হিজবুল্লাহ, হুথি ও শিয়া মিলিশিয়ারা যুদ্ধের পক্ষে অবস্থান নিয়েছে।