বাংলাদেশের ২০০৭ সালের জরুরি অবস্থা, পরবর্তী রাজনৈতিক ঘটনাবলী এবং ২০০৯ সালের পিলখানা হত্যাকাণ্ড নিয়ে বিভিন্ন গুরুতর তথ্য সম্প্রতি সামনে এসেছে। সাবেক ভারতীয় রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখার্জির লেখা এবং একটি স্বাধীন তদন্ত কমিশনের প্রতিবেদন সূত্রে এই দাবিগুলো করা হয়েছে।
প্রাক্তন ভারতীয় রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখার্জির আত্মজীবনী ‘দ্য কোয়ালিশন ইয়ারস ১৯৯৬-২০১২’ বইয়ের উদ্ধৃতি দিয়ে জানানো হয় যে, ২০০৮ সালের ফেব্রুয়ারিতে তৎকালীন সেনাপ্রধান জেনারেল মইন ইউ আহমেদ ছয় দিনের সফরে ভারত গিয়েছিলেন।
প্রণব মুখার্জি তার বইয়ে লেখেন— সেনাপ্রধান মইন রাজনৈতিক বন্দি শেখ হাসিনাকে মুক্তি দেওয়ার বিষয়ে তার চাকরির নিরাপত্তা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছিলেন। এ সময় প্রণব মুখার্জি জেনারেল মইনকে ব্যক্তিগতভাবে দায়িত্ব নিয়ে আশ্বস্ত করেন যে শেখ হাসিনা ক্ষমতায় এলেও তার পদ বহাল থাকবে। এর ধারাবাহিকতায়, তৎকালীন প্রেসিডেন্ট ইয়াজ উদ্দিন আহমেদ ২০০৮ সালের ১৫ জুন জেনারেল মইনের চাকরির মেয়াদ এক বছর বৃদ্ধি করেন।
প্রণব মুখার্জি জানান, ভারত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ রেখেছিল এবং শান্তিপূর্ণ, গ্রহণযোগ্য ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের মাধ্যমে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের দিকে জোর দিয়েছিল।
২০০৯ সালের ফেব্রুয়ারিতে পিলখানায় সংঘটিত বর্বর হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় ৫৭ সেনা কর্মকর্তাসহ ৭৪ জন নিহত হন। এই ঘটনা তদন্তে অন্তর্বর্তী সরকারের গঠিত জাতীয় স্বাধীন তদন্ত কমিশনের প্রতিবেদনে চাঞ্চল্যকর কিছু তথ্য উঠে এসেছে বলে দাবি করা হয়েছে।
প্রতিবেদনে অভিযোগ করা হয়:
পিলখানা হত্যাকাণ্ডে কমান্ডো এনএসজিসহ ২৪ জন ভারতীয় অংশ নেন।
সেনা কর্মকর্তাদের হত্যা পরিকল্পনার বৈঠকে আওয়ামী লীগের সাবেক নেতা সোহেল তাজ উপস্থিত ছিলেন।
প্রায় ১১ মাস তদন্ত শেষে কমিশন তাদের প্রতিবেদনটি তৎকালীন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে হস্তান্তর করেছিল।
এই সব পটপরিবর্তনের পর ২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বর নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। ৩০০টি আসনের মধ্যে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ২৩০টি আসনে জয়লাভ করে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করে এবং শেখ হাসিনাকে প্রধান করে সরকার গঠন করে।

