শুক্রবার সকাল সাড়ে ১০টার পর ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় মাঝারি মাত্রার ভূমিকম্পে সবাইকে আবারও মনে করিয়ে দেওয়া হলো, একটি বড় ভূমিকম্প হলে রাজধানীতে কী হতে পারে।
বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, যদিও বাংলাদেশে তেমন বেশি ভূমিকম্প হয় না, তবু এটি বিশ্বের সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ অঞ্চলের একটি। ভূতত্ত্ববিদ অধ্যাপক সৈয়দ হুমায়ুন আখতার বলেন, “ইন্ডিয়ান–বার্মা প্লেটের নিচে জমে থাকা শক্তি বের হলে ৮.২ থেকে ৯ মাত্রার ভূমিকম্পও হতে পারে। এটা আগামীকালও হতে পারে, আবার ৫০ বছর পরেও।”
ফায়ার সার্ভিসের তথ্য অনুযায়ী চট্টগ্রাম, সিলেট, ময়মনসিংহ ও ঢাকা অঞ্চল ভূমিকম্পের উচ্চ ঝুঁকিতে রয়েছে।
ভূমিকম্পে প্রাথমিক করণীয়:
শান্ত থাকুন, দ্রুত নিরাপদ স্থানে চলে যান।
‘ড্রপ, কভার, হোল্ড’ নিয়ম অনুসরণ করুন:
ড্রপ: মাটিতে বসুন বা হাঁটু গেড়ে বসুন
কভার: মাথা ও ঘাড় টেবিল, ডেস্ক বা শক্ত আসবাবের নিচে ঢেকে রাখুন
হোল্ড: আশ্রয় নিচে থাকাকালীন শক্তভাবে ধরুন
জানালা, কাঁচ, বৈদ্যুতিক সুইচ বা লিফট থেকে দূরে থাকুন।
যদি ঘরের ভিতরে থাকেন:
পিলার, ভেতরের দেয়াল বা ভারী টেবিলের নিচে আশ্রয় নিন।
শিশু ও বৃদ্ধদের আগে রক্ষা করুন।
যদি বাইরে থাকেন:
গাছ, সেতু, বৈদ্যুতিক খুঁটি থেকে দূরে থাকুন।
খোলা জায়গায় দাঁড়িয়ে মাথা দুই হাত দিয়ে ঢেকে রাখুন।
গাড়িতে থাকলে নিরাপদে থামুন, বাইরে নামবেন না।
হুড়োহুড়ি করবেন না।
যা করবেন না
লিফট ব্যবহার করবেন না।
বারান্দা বা ছাদে উঠবেন না।
মোমবাতি বা আগুন ব্যবহার করবেন না।
জানালা খুলতে যাবেন না।
আতঙ্ক ছড়াবেন না।
ভূমিকম্পের পর করণীয়
নিজে এবং আশপাশের মানুষদের অবস্থা দেখুন।
গ্যাস, বৈদ্যুতিক ও পানি লাইন পরীক্ষা করুন।
আফটারশকের জন্য সতর্ক থাকুন।
উদ্ধারকারী দলকে আগে খবর দিন, নিজের চেষ্টা দিয়ে ঝুঁকি নেবেন না।
প্রস্তুতি
জরুরি ব্যাগে টর্চ, ব্যাটারি, পানি, শুকনো খাবার ও ওষুধ রাখুন।
পরিবারের সবাইকে ভূমিকম্পের আচরণবিধি শেখান।
ভারী আসবাব দেয়ালে শক্তভাবে আটকান।
নিয়মিত ড্রিল করলে আতঙ্ক কমানো সম্ভব।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন: আতঙ্ক নয়, সচেতনতা ও প্রস্তুতি নিরাপত্তার মূল চাবিকাঠি।

