আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
যুক্তরাষ্ট্রের ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্স জানিয়েছেন, গাজায় যুদ্ধবিরতি এখনো কার্যকর রয়েছে। যদিও ইসরায়েল ও হামাস একে অপরের বিরুদ্ধে চুক্তি লঙ্ঘনের অভিযোগ তুলেছে।
মঙ্গলবার সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি বলেন, “যুদ্ধবিরতি টিকে আছে। মাঝে মাঝে ছোটখাটো সংঘর্ষ হতে পারে, কিন্তু প্রেসিডেন্টের (ডোনাল্ড ট্রাম্পের) মধ্যস্থতায় হওয়া শান্তিচুক্তি টিকেই থাকবে বলে আমি বিশ্বাস করি।”
এরপরও গাজার বিভিন্ন স্থানে ইসরায়েলি বিমান হামলায় অন্তত ৩৩ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে বিবিসি। গাজার সিভিল ডিফেন্স ও হাসপাতাল সূত্রের তথ্য অনুযায়ী, নিহতদের মধ্যে উত্তর গাজার সাবরা এলাকার চারজন ও দক্ষিণের খান ইউনিসের পাঁচজন ছিলেন। আহত হয়েছেন ৫০ জনেরও বেশি, যাদের মধ্যে নারী ও শিশুও রয়েছে।
হামলার আগে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু রাফাহ এলাকায় এক সেনা আহত হওয়ার ঘটনায় জোরালো প্রতিক্রিয়ার নির্দেশ দেন। তার দপ্তর জানায়, সেনাবাহিনীকে ‘শক্তিশালী হামলার’ নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। পরে প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল কাৎজ বলেন, “রাফাহর ঘটনায় হামাস দায়ী, এবং তাদের এর চড়া মাশুল দিতে হবে।”
অন্যদিকে, হামাস এই হামলায় নিজেদের সম্পৃক্ততা অস্বীকার করে বলেছে, ইসরায়েলের অভিযান যুদ্ধবিরতির ‘স্পষ্ট লঙ্ঘন’। সংগঠনটি জানায়, “এ ধরনের হামলা নিখোঁজ জিম্মিদের মরদেহ উদ্ধারের কাজ ব্যাহত করছে এবং আরও ১৩ জনের মরদেহ উদ্ধারে বিলম্ব হচ্ছে।”
আল–জাজিরা-র সাংবাদিক হানি মাহমুদ জানান, গাজা সিটির আল–শিফা হাসপাতালের পেছনে একটি ক্ষেপণাস্ত্র আঘাত হানে, এতে বড় বিস্ফোরণ হয় এবং আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। সারারাত ধরে সাবরা এলাকায় ধ্বংসস্তূপে আটকে পড়া মানুষদের উদ্ধারে তল্লাশি চলে। উদ্ধারকর্মীরা খালি হাতে ধ্বংসাবশেষ সরিয়ে মরদেহ বের করার চেষ্টা করেন।
এদিকে কাসাম ব্রিগেড দাবি করেছে, তারা দুই ইসরায়েলি জিম্মি—আমিরাম কুপার ও সাহার বারুচের মরদেহ উদ্ধার করেছে। তবে চলমান হামলার কারণে মরদেহ হস্তান্তরের প্রক্রিয়া আপাতত স্থগিত রাখা হয়েছে।
দুই মার্কিন কর্মকর্তা অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস-কে জানান, ইসরায়েল এই হামলার বিষয়ে আগেই ওয়াশিংটনকে অবহিত করেছিল। গাজার সরকারি গণমাধ্যম দপ্তরের তথ্যমতে, ১০ অক্টোবর যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার পর থেকে ইসরায়েলি হামলায় এখন পর্যন্ত কমপক্ষে ৯৪ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন, এবং ত্রাণ সরবরাহও কঠোরভাবে সীমিত রাখা হয়েছে।
হামাসের রাজনৈতিক ব্যুরোর সদস্য সুহাইল আল–হিন্দি বলেন, “আমরা শান্তিচুক্তির প্রতি অঙ্গীকারবদ্ধ। ইসরায়েল মিথ্যা অভিযোগ বন্ধ করুক। জিম্মিদের মরদেহ উদ্ধারে বিলম্বের পুরো দায় ইসরায়েলি বাহিনীর।”







