নির্বাচন নিয়ে কোনো ধোঁয়াশা রাখেননি আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল। তিনি সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, নির্বাচন ২০২৬ সালের জুনের পর কোনোভাবেই যাবে না। এই প্রতিশ্রুতি শুধু একটি রাজনৈতিক দলের প্রতি নয়, এটি অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের জাতির প্রতি অঙ্গীকার।
বুধবার দুপুরে যমুনা ভবনে প্রায় দুই ঘণ্টা ধরে চলা বিএনপির সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা জানান।
আলোচনায় বিএনপি বেশ ইতিবাচক মনোভাব দেখিয়েছে বলে মন্তব্য করেন আসিফ নজরুল। তিনি বলেন, “ঐকমত্য কমিশনের প্রস্তাবনার ব্যাপারে বিএনপি খুব উৎসাহী। তারা জানিয়েছেন, ২-৩ দিনের মধ্যেই কমিশনের সঙ্গে বসবেন এবং সংস্কার প্রস্তাবগুলোর বেশিরভাগের সঙ্গেই তারা একমত। এমনকি ‘জুলাই চার্টার’ দ্রুত প্রস্তুত করার প্রতিশ্রুতিও তারা দিয়েছেন।”
তবে নির্বাচনকালীন সময়সীমা নিয়ে কিছু মতভেদ থাকলেও সেটিকে বড় বিষয় মনে করছেন না উপদেষ্টা। “বিএনপি বলেছে, নির্বাচন যদি ডিসেম্বরেই হয় তাহলে ভালো হয়। আমরা তাদের আশ্বস্ত করেছি, জুন পর্যন্ত সময়সীমা মানে এই নয় যে আমরা দেরি করব। আমরা যত দ্রুত সম্ভব নির্বাচন করতে চাই—ডিসেম্বর হোক, জানুয়ারি হোক, সময় পেলেই করবো,” বলেন তিনি।
এ প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন, “ডিজিটাল সুরক্ষা আইনের মতো অনেক বিষয়ে আমাদের বহু পরামর্শ ও সংশোধনী দরকার হয়েছে। সেগুলো নিয়ে প্রায় ২৩ বার ড্রাফট করা হয়েছে। জুলাই চার্টারও তেমনই। অংশীজনদের সঙ্গে পরামর্শ করে, আইনগত ও নীতিগত দিক বিবেচনায় নিতে সময় লাগতে পারে। তাই সময়সীমাটি বাস্তবতা নির্ভর।”
গণআন্দোলনে প্রাণ হারানো ও আহত হওয়া মানুষের কথা স্মরণ করে আসিফ নজরুল বলেন, “দেশে হাজারো মানুষ প্রাণ দিয়েছে, বহু মানুষ আজীবনের জন্য শারীরিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত। তাদের জন্য বিচার চাওয়া জনগণের ন্যায্য প্রত্যাশা। বিচার ছাড়াই সরকার বিদায় নেবে—এমনটি হলে আমরা জাতির কাছে জবাবদিহি করতে পারব না।”
তিনি পরিষ্কার করে বলেন, “নির্বাচন, বিচার, সংস্কার—এই তিনটি বিষয়ের ওপর ভিত্তি করেই জুন সময়সীমা নির্ধারিত হয়েছে। এটা কোনও একক সিদ্ধান্ত নয়, বরং একটি সমন্বিত প্রক্রিয়ার অংশ।”