বলিউড অভিনেতা দিনো মোরিয়ার জন্য শুক্রবারটা ছিল দুই মেরুর দুই অভিজ্ঞতা। একদিকে তাঁর অভিনীত বহুল আলোচিত সিনেমা ‘হাউসফুল ৫’ মুক্তি পেল প্রেক্ষাগৃহে, অন্যদিকে ভারতের অর্থপাচার তদন্ত সংস্থা এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি) তল্লাশি চালাল তাঁর মুম্বাইয়ের বাসভবনে।
শুক্রবার (৭ জুন) ভোর থেকে শুরু হওয়া এই অভিযান চলে টানা ১৪ ঘণ্টা। পরে শনিবারই ইডি থেকে তাঁকে এবং তাঁর ভাই সান্তিনো মোরিয়াকে তলব করা হয়েছে।
মুম্বইয়ের মিঠি নদী পলি অপসারণ দুর্নীতির ঘটনায় অভিনেতা দিনো মোরিয়া ও তাঁর ভাই সান্টিনো মোরিয়ার বিরুদ্ধে জালিয়াতির অভিযোগ উঠেছে। দিনো শিবসেনা নেতা আদিত্য ঠাকরের ঘনিষ্ঠ বলেও পরিচিত। নদীর পলি অপসারণে ভুয়া স্লিপ, জাল নথি ও অতিরিক্ত টেন্ডারের মাধ্যমে প্রায় ৬৫ কোটি টাকার দুর্নীতি হয়েছে।
ইকনমিক অফেন্সেস উইং-এর তদন্তে উঠে এসেছে, কেলেঙ্কারির মূল অভিযুক্ত কেতন কদমের সঙ্গে দিনো ও সান্টিনোর নিয়মিত যোগাযোগ ছিল। জানা যায়, ২০২০ সালে কোভিডের সময় কেতন কদমের স্ত্রী ও সান্টিনো যৌথভাবে ‘ইউবিও রাইডেজ প্রাইভেট লিমিটেড’ নামে একটি কোম্পানি গড়েছিলেন। এই কোম্পানির আড়ালে অবৈধ আর্থিক লেনদেনের প্রমাণ পেয়েছে ইডি।
দিনো ও তাঁর ভাইকে ইতিমধ্যে ৮ ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে এবং ইডি তাঁদের আর্থিক নথিপত্র খতিয়ে দেখছে। এই মামলায় এখন পর্যন্ত ১৩ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, যাদের মধ্যে রয়েছে সরকারি কর্মকর্তা ও ঠিকাদারও। এই দুর্নীতিতে মিঠি নদী পরিষ্কারের বরাদ্দ কোটি কোটি টাকা অন্যত্র সরিয়ে নেওয়ার অভিযোগ রয়েছে।
ইডির তদন্তে এই প্রকল্পে দুর্নীতি ও অর্থপাচারের সম্ভাব্য প্রমাণ পাওয়ার পর মুম্বাই ও কেরালার মোট ১৫টি স্থানে একযোগে অভিযান চালানো হয়। অভিযুক্তদের মধ্যে রয়েছেন বৃহন্মুম্বই পৌরসভার সহকারী ইঞ্জিনিয়ার প্রশান্ত রামুগাড়ে, এবং বেশ কয়েকজন ঠিকাদার।
এখনো পর্যন্ত এই বিষয়ে দিনো মোরিয়া বা তাঁর পরিবারের পক্ষ থেকে কোনো সরকারিভাবে প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।
ইডি সূত্রে জানা গেছে, আগামী সপ্তাহের মধ্যেই দিনো ও তাঁর ভাইয়ের বয়ান রেকর্ড করা হবে। তদন্তের অগ্রগতি অনুযায়ী তাঁদের বিরুদ্ধে পরবর্তী আইনগত পদক্ষেপ নেওয়া হবে।