মুজাহিদুল ইসলাম, জবি প্রতিনিধি
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে (জবি) এক সময়ে নিজেকে আওয়ামীপন্থী শিক্ষক ও আওয়ামী গুনগান গেয়ে বিভিন্ন সময় পত্রিকার পাতায় কলাম লিখা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মিল্টন বিশ্বাস নিজের বিরুদ্ধে হওয়া মামলা থেকে অব্যাহতি চেয়ে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান শিক্ষক সমিতির কাছে আবেদন জানিয়েছেন, শিক্ষক সমিতির দায়িত্বশীল সকলেই বিএনপিপন্থি।
বুধবার (৫ মার্চ) এ আবেদন দিতে শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ও জবি জাতীয়তাবাদী শিক্ষক সংগঠন সাদা দলের সাধারণ সম্পাদক ড. রইছ উদ্দীন এর কাছে গেলেও তিনি তা গ্রহণ করেন নাই।
পরবর্তীতে ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থীরা তাকে আটক করলে তার কাছে আবেদনপত্রটি পাওয়া যায়। আবেদন পত্রে শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক বরাবর ড. মিল্টন নিজেকে নির্দোষ দাবি করে লিখেন, গত এক যুগে আমি এই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের কোনো (নীল) প্যানেলের সদস্য ছিলাম না এবং দৃশ্যত কোনো রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডের সঙ্গেও আমার সংশ্লিষ্টতা ছিল না। তবু ৫ আগস্টের (২০২৪) পর দু’টি রাজনৈতিক মামলায় আমার নাম আসামি হিসেবে যুক্ত করা হয়েছে যা আমার জন্য অত্যন্ত ক্লেশকর। খ্রিষ্টান সম্প্রদায়ের একজন সদস্য হিসেবে আমি সাধারণ ও নিরীহ মানুষ। আরও উল্লেখ করা হয়, আমাকে গত ২১/১১/২০২৪ তারিখে একটি মামলা (কোতয়ালী থানা, পিটিশন মামলা নম্বর-১৭০৬/২০২৪) এবং গত ২৫/০২/২০২৫ তারিখে অপর একটি মামলার (সূত্রাপুর থানা, মামলা নং-৪৪/২৫) আসামি করা হয়েছে। যে ঘটনাগুলোর উল্লেখ করে আমার সম্পৃক্ততা নিরূপণের চেষ্টা করা হয়েছে তা সর্বাংশে ভুল। কারণ ওই তারিখ ও সময়ে আমি ক্যাম্পাসে ছিলাম না এবং আমি নিজের বাসায় অবস্থান করছিলাম।
আবেদনের সর্বশেষ তিনি লিখেন, ২০২৫ সালে শিক্ষকদের মঙ্গলার্থে শিক্ষক সমিতি’র নতুন কার্যনির্বাহী কমিটির সাধারণ সম্পাদক হিসেবে আপনি দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন। এজন্য আপনাকে বিনীত অনুরোধ জানাচ্ছি, আমাকে উক্ত দু’টি মামলা থেকে অব্যাহতি প্রদানের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করে বাধিত করবেন।
এ বিষয় নিয়ে শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ড. রইছ উদ্দীন এর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, শিক্ষক হিসেবে শিক্ষক সমিতিতে যে কেউ যেকোনো বিষয় আবেদন জানাতেই পারেন। তিনি আবেদন নিয়ে আমার কাছে এসেছিলেন তবে আমি তা গ্রহণ করিনি। আমি তাকে বলেছি শিক্ষক সমিতির অফিসে আবেদনটি জমা দিতে।
পরবর্তীতে শিক্ষার্থীদের হাতে আটক অধ্যাপক মিল্টন বিশ্বাসকে প্রক্টর অফিসে রাখা হয়। এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ তাজামুল হক বলেন, যেহেতু তাকে প্রক্টর অফিসে রাখা হয়েছে সেহেতু সাধারণ শিক্ষার্থীদের সরে যাওয়া উচিত। আমি এখন ক্যাম্পাসে নেই। যদি কেউ অপরাধীদের সঙ্গে জড়িত থাকে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
প্রসঙ্গত, ড. মিল্টন বিশ্বাস আওয়ামীপন্থী বিভিন্ন লেখালেখি করত বলে বেনামী কয়েকবার হত্যার হুমকির চিঠিও পেয়েছিলেন। এছাড়া তিনি জয় বাংলা শিক্ষক সমাজ, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের আহ্বায়ক ; সেক্রেটারি, বাংলাদেশ প্রগতিশীল কলামিস্ট ফোরাম; সেক্রেটারি, ইক্যুমেনিক্যাল খ্রিষ্টান ট্রাস্ট (ইসিটি) সহ নানান পদে দায়িত্ব পালন করছেন কিংবা ইতোমধ্যে দায়িত্বে ছিলেন।