ডেস্ক রিপোর্ট:
সাতক্ষীরা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. শহিদুল ইসলামের কুষ্টিয়ায় বদলির অর্ডার হলেও এখনো তিনি বহাল তবিয়তে। এই ক্ষমতার উৎস কি! গত ১৭ই ফেব্রুয়ারি বদলির পরও বহাল তবিয়তে অফিস করছেন সাতক্ষীরায়।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, সমগ্ৰ দেশ প্রকল্পের আওতায় সম্প্রতি ১৪ প্যাকেজ দরপত্র আহ্বান করা হয়। এর মধ্যে চার প্যাকেজ পাইপ লাইনের স্কীমের ১৫ কোটি টাকার টেন্ডার চলমান রয়েছে এবং এই প্রক্রিয়া শেষ করতে চান মো. শহিদুল ইসলাম।প্যাকেজ গুলোর নাম্বার হচ্ছে ১০৭১০৭৮, ১০৭১১১৯, ১০৭১১৭১ ও ১০৭১১৪৯.
অভিযোগ উঠেছে, দুই জন ঠিকাদারকে এই কাজগুলো পাইয়ে দিতে সব কিছু পাকাপোক্ত হয়ে গেছে এবং তাদের সাথে ১ কোটি টাকার চুক্তিও হয়েছে। যে কারণে একটি মহল শহিদুল ইসলামের বদলি ঠেকাতে উঠে পড়ে লেগেছে। তারা চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন শহিদুল ইসলাম অন্তত আর কিছু দিন সাতক্ষীরায় থেকে ১৫ কোটি টাকার টেন্ডার প্রক্রিয়া শেষ করে যেতে পারেন। আরো জানা গেছে, প্রকৃত মূল্যের উপর ২০% হারে বেশি রেট করে এই টেন্ডার গুলো দেওয়া হচ্ছে এবং এই ২০% পাবেন শহিদুল ইসলাম।
শহিদুল ইসলামের বিরুদ্ধে প্রায় দু’শ কোটি টাকার টেন্ডার নয়-ছয়ের অভিযোগসহ নানা অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ ছিল। যে কারণে গত ১৭ ফেব্রুয়ারি স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-সচিব আশফিকুন নাহার স্বাক্ষরিত প্রজ্ঞাপনে তাকে বদলির আদেশ দেওয়া হয়।
গণমাধ্যমের খবর অনুযায়ী, মো. শহিদুল ইসলামের ব্যাপক টেন্ডারবাজি আর অনিয়মের কারণে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের সাতক্ষীরা কার্যালয় জিম্মি হয়ে পড়েছিল।
গোপালগঞ্জ জেলার কাশিয়ানী উপজেলার বাসিন্দা শহিদুল ইসলাম কোন প্রকার নিয়মনীতি ও আইনের তোয়াক্কা না করেই বিগত সরকারের আমলে খেয়াল খুশিমত নিজের পছন্দের কতিপয় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে কাজ দিয়েছেন। কাজ পাওয়া প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে রয়েছে তার নিজের ও আত্মীয় স্বজনের প্রতিষ্ঠান। তাছাড়া মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে ঠিকাদার নির্বাচনের অভিযোগ ছিল তার বিরুদ্ধে। যে কারণে সাতক্ষীরার জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের প্রায় দুই শত কোটি টাকা নয়ছয় হয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট মহল মনে করছেন।
গণমাধ্যমের খবর অনুযায়ী আরো জানা যায়, টেন্ডারবাজি ও দুর্নীতির মাধ্যমে অঢেল ধন সম্পদ গড়ে সবাইকে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন শহিদুল ইসলাম। যশোরের নিউ মার্কেট এলাকায় ৫তলা বাড়িসহ ৮/১০টি প্লট এবং কয়েক বিঘা জমি রয়েছে তার যশোর শহরে। তাছাড়া গোপালগঞ্জ জেলার কাশিয়ানি ও বিভিন্ন স্থানে রয়েছে নামে বেনামে সম্পত্তি।
এছাড়া তার বিরুদ্ধে ভুয়া সার্টিফিকেট দিয়ে মুক্তিযোদ্ধা কোটায় চাকরিও নিয়েছেন বলেও অভিযোগ রয়েছে। ২০১২ সালে তার পিতার নাম মুক্তিযোদ্ধার গেজেটে না থাকলেও মুক্তিযোদ্ধা কোটায় চাকরি নেন। তার পিতার গেজেট প্রকাশ হয় ২০১৬ সালে। তার একাডেমিক সার্টিফিকেট নিয়েও অভিযোগ রয়েছে। বেসরকারি প্রতিষ্ঠান থেকে মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে সার্টিফিকেট সংগ্রহ করে সহকারী প্রকৌশলী পদে যোগদান করেন তিনি।
এ বিষয়ে জানতে শহিদুল ইসলামের মোবাইলে একাধিকবার কল করলেও তিনি রিসিভ করেননি।