ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং ভলোদিমির জেলেনস্কির মধ্যকার উত্তপ্ত বৈঠকের পর তাদের নির্ধারিত সংবাদ সম্মেলন হঠাৎ করেই বাতিল করা হয়। এই বৈঠক মূলত ইউক্রেনের খনিজ সম্পদ নিয়ে একটি চুক্তি স্বাক্ষরের উদ্দেশ্যে ছিল, তবে তা দ্রুতই তর্ক-বিতর্কে রূপ নেয় এবং শেষ পর্যন্ত সংবাদ সম্মেলনও স্থগিত করা হয়।
বৈঠকের উত্তপ্ত পরিস্থিতি
সূত্র জানাচ্ছে, বৈঠকের সময় ট্রাম্প এবং জেলেনস্কির মধ্যে উত্তপ্ত বাক্য বিনিময় হয়। ট্রাম্প অভিযোগ করেন যে জেলেনস্কি যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি যথেষ্ট কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছেন না এবং ইউক্রেন অতিরিক্ত মার্কিন সহায়তার ওপর নির্ভর করছে। ট্রাম্প স্পষ্টভাবে বলেন, “আমরা আপনাদের প্রচুর সহায়তা দিয়েছি, কিন্তু আপনি কি সত্যিই শান্তি চান?” তিনি আরও দাবি করেন যে ইউক্রেন এই যুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থানকে রাজনৈতিকভাবে ব্যবহার করছে।
জেলেনস্কি পাল্টা যুক্তি দেন যে ইউক্রেন তার সার্বভৌমত্ব রক্ষার জন্য লড়াই করছে এবং যুক্তরাষ্ট্র ও ন্যাটো সহযোগিতার ওপর নির্ভর করা ছাড়া তাদের আর কোনো উপায় নেই। তিনি আরও বলেন, “আমরা শুধু নিজেদের জন্য নয়, সমগ্র ইউরোপের জন্য লড়াই করছি।”
এই উত্তপ্ত আলোচনার পর হোয়াইট হাউস থেকে ঘোষণা আসে যে নির্ধারিত সংবাদ সম্মেলন বাতিল করা হয়েছে। যদিও কোনো পক্ষ আনুষ্ঠানিক ব্যাখ্যা দেয়নি, তবে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন যে আলোচনার ব্যর্থতা এবং দ্বিপাক্ষিক উত্তেজনার কারণেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
এই ঘটনার পর ইউরোপীয় নেতারা জেলেনস্কির প্রতি সমর্থন প্রকাশ করেছেন। জার্মানি, ফ্রান্স এবং যুক্তরাজ্য ইউক্রেনের পাশে থাকার প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেছে। ইউরোপীয় ইউনিয়নের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, “আমরা ইউক্রেনকে একা ফেলে দেব না।”
ট্রাম্প প্রশাসনের পক্ষ থেকে ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে যে তারা ইউক্রেনকে সামরিক সহায়তা কমিয়ে দেওয়ার বিষয়ে ভাবছে। যদি এমনটি ঘটে, তাহলে ইউক্রেনের প্রতিরক্ষা সক্ষমতার ওপর বড় প্রভাব পড়তে পারে। তবে ইউক্রেনীয় কর্মকর্তারা আশা করছেন যে কংগ্রেস এবং ইউরোপীয় মিত্ররা যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান কিছুটা প্রশমিত করতে পারবে।
এই বৈঠকের ব্যর্থতা রাশিয়ার জন্য কৌশলগত সুবিধা তৈরি করতে পারে, কারণ এটি ইউক্রেনের কূটনৈতিক ও সামরিক ভবিষ্যৎ সম্পর্কে অনিশ্চয়তা সৃষ্টি করেছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, যদি যুক্তরাষ্ট্র তার সমর্থন কমিয়ে দেয়, তাহলে ইউক্রেনকে একা রাশিয়ার সঙ্গে লড়তে হবে, যা তাদের জন্য অত্যন্ত চ্যালেঞ্জিং হবে।
ট্রাম্প-জেলেনস্কির উত্তপ্ত বৈঠক এবং সংবাদ সম্মেলন বাতিলের ঘটনাটি শুধু দুই নেতার সম্পর্কের সংকটই নয়, বরং এটি আন্তর্জাতিক রাজনীতির জন্যও একটি গুরুত্বপূর্ণ মোড়। এটি ইউক্রেন সংকটের ভবিষ্যৎ সম্পর্কে নতুন অনিশ্চয়তা তৈরি করেছে এবং ন্যাটো ও ইউরোপীয় মিত্রদের ভূমিকা আরও গুরুত্বপূর্ণ করে তুলেছে। ইউক্রেনের কূটনৈতিক ও সামরিক ভবিষ্যৎ এখন অনেকটাই নির্ভর করছে আন্তর্জাতিক শক্তিগুলোর পরবর্তী পদক্ষেপের ওপর।
আপনি যদি আরও বিশদ বিশ্লেষণ বা বিশেষ দৃষ্টিকোণ চান, তাহলে জানান! জেলেনস্কিকে হোয়াইট হাউস থেকে বের করে দেওয়ার নির্দেশ দেন ট্রাম্প!