আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদ থেকে পদত্যাগ করতে যাচ্ছেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া এবং তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মো. মাহফুজ আলম। আগামী সপ্তাহেই তারা পদত্যাগ করবেন বলে জানা গেছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, তারা দুজনেই তফসিল ঘোষণার আগেই উপদেষ্টা পদ থেকে সরে দাঁড়িয়ে নির্বাচনে অংশ নিতে মাঠে নামবেন এবং বিএনপির ছেড়ে দেওয়া আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসাবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারেন।
নীতিগত অবস্থান: বৃহস্পতিবার এক অনুষ্ঠানে আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া সাংবাদিকদের জানান, উপদেষ্টা পদে থেকে নির্বাচন করা নীতিগতভাবে ঠিক হবে না, তাই পদত্যাগ করেই তিনি নির্বাচনে লড়বেন। তিনি ঢাকা-১০ আসন থেকে নির্বাচন করতে পারেন বলে গুঞ্জন রয়েছে।
মাহফুজ আলমের অবস্থান: তথ্য উপদেষ্টা মাহফুজ আলমও দীর্ঘদিন ধরে তার দায়িত্ব ছাড়ার বিষয়ে অনিশ্চয়তা প্রকাশ করছিলেন। সাম্প্রতিক সময়ে তার কিছু সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম পোস্ট সরকারের নীতিনির্ধারক মহলে বিব্রতকর পরিস্থিতি তৈরি করেছে বলেও সূত্র জানিয়েছে।
পদত্যাগের এই সিদ্ধান্তগুলো আসছে যখন নির্বাচন কমিশন দ্রুত তফসিল ঘোষণার প্রস্তুতি নিচ্ছে। নির্ভরযোগ্য সূত্রমতে:
তফসিল ঘোষণা: ১০ ডিসেম্বরের মধ্যে।
ভোটার তালিকা চূড়ান্ত: ৫ ডিসেম্বরের মধ্যে।
নির্বাচনের সম্ভাব্য তারিখ: ৮ ফেব্রুয়ারি।
জোটের সমীকরণে ভাঙন
নির্বাচনি জোট গঠনের হিসাব-নিকাশেও অস্থিরতা বিরাজ করছে। জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) পক্ষ থেকে বুধবার রাতে জোটবদ্ধ নির্বাচনের জন্য বৈঠক বসলেও, জোটভুক্তির প্রশ্নে দলটির অভ্যন্তরে তীব্র বিভেদ দেখা দেয়।
আপ বাংলাদেশ বিতর্ক: বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের সাবেক নেতাদের দ্বারা গঠিত নতুন দল ইউনাইটেড পিপলস বাংলাদেশকে (আপ বাংলাদেশ) জোটে নেওয়ার প্রস্তাব উঠলে আলোচনা মাঝপথে থেমে যায়। বৈঠকে উপস্থিত ৪০ নেতার মধ্যে মাত্র ৩ জন এই প্রস্তাবের পক্ষে মত দেন।
এনসিপি’র অবস্থান: বেশিরভাগ নেতাই বিএনপির সঙ্গে জোট বা এককভাবে নির্বাচনের পক্ষে মত দিয়েছেন। এছাড়া এনসিপি নেতারা জামায়াতের সঙ্গে কোনো জোটে যেতে একেবারেই রাজি নন। এই পরিস্থিতিতে অনেকে আশঙ্কা করছেন, জোটের ইস্যুতে শেষ মুহূর্তে এনসিপি ভাঙনের মুখে পড়তে পারে।

