সত্যজিৎ দাস:
চা-বাগানের সবুজ ঢাল বেয়ে জন্ম নেওয়া ছোট্ট গল্পটি ঘুরে এসেছে বিশ্বের নানা প্রান্ত। ইউরোপীয় পর্দায় প্রশংসা কুড়িয়ে এবং যুক্তরাষ্ট্রের মর্যাদাপূর্ণ এনভায়রনমেন্টাল মিডিয়া অ্যাসোসিয়েশন (এমা) অ্যাওয়ার্ড জিতে এবার নিজ মাতৃভূমিতে ফিরছে বাংলাদেশি চলচ্চিত্র ‘নিশি’।
প্রযোজনা সংস্থা ইন্টারন্যাশনাল একাডেমি অব ফিল্ম অ্যান্ড মিডিয়া জানিয়েছে, ইউরোপীয় চলচ্চিত্র উৎসবের অংশ হিসেবে আগামী ৬ ডিসেম্বর বিকেল ৩টা,ঢাকার জার্মান কালচারাল সেন্টারে অনুষ্ঠিত হবে ছবিটির বাংলাদেশ প্রিমিয়ার।
গোলাম রাব্বানীর গল্প অবলম্বনে সিনেমাটি যৌথভাবে নির্মাণ করেছেন গোলাম রাব্বানী ও জহিরুল ইসলাম। আন্তর্জাতিক সাফল্যের পর চলচ্চিত্রটি দেশে দেখানোর সুযোগ পেয়ে নির্মাতা রাব্বানী বেশ উচ্ছ্বসিত। তাঁর ভাষায়-
“এত দেশে প্রদর্শিত হয়েছে,পুরস্কারও পেয়েছে। কিন্তু বাংলাদেশের দর্শকের সামনে ছবি দেখানোর আনন্দটাই আমার কাছে সবচেয়ে বড়।”
‘নিশি’র গল্প আবর্তিত হয়েছে এক চা-শ্রমিক পরিবারের কিশোরী মেয়েকে ঘিরে। পানির মারাত্মক সংকটে তার পড়াশোনা থেমে যেতে বসে। এই অসহায়তার সুযোগ নিতে চাই কাঠ ব্যবসায়ী লালচাঁন,টিউবওয়েল বসানোর প্রলোভন দেখিয়ে নাবালিকা নিশিকে বিয়ের প্রস্তাব দেয় সে। বাস্তবের কাছাকাছি থাকা এই মানবিক গল্পই আন্তর্জাতিক পর্যায়ে ছবিটিকে আলাদা মাত্রা এনে দিয়েছে।
সিনেমাটির চূড়ান্ত সম্পাদনা,কালার কারেকশন ও সাউন্ড ডিজাইনের কাজ হয়েছে পোল্যান্ডের বিখ্যাত লজ ফিল্ম স্কুলে। চিত্রগ্রহণ করেছেন প্রতিষ্ঠানটির প্রাক্তনী নাতালিয়া পুসনিক।
সিলেটের একটি চা-বাগান ও পার্শ্ববর্তী এলাকাজুড়ে শুটিং করা এই চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছেন স্থানীয় চা-শ্রমিক পরিবারের সদস্য নিশি,বিশ্বজিৎ,গণেশ ও ভারতী।
ইউরোপীয় ইউনিয়ন বাংলাদেশ,গ্রিন ফিল্ম স্কুল অ্যালায়েন্স এবং ইউনেসকো ঢাকা-এই তিন প্রতিষ্ঠানের সহযোগিতায় নির্মিত হয়েছে ছবিটি। আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্রমহলে ঘুরে বেড়ানো ‘নিশি’ এবার দেশবাসীর সামনে নতুন অভিজ্ঞতা যোগ করতে প্রস্তুত।

