Bangla FM
  • সর্বশেষ
  • জাতীয়
  • রাজনীতি
  • বিশ্ব
  • সারাদেশ
  • বিনোদন
  • খেলাধুলা
  • কলাম
  • ভিডিও
  • অর্থনীতি
  • ক্যাম্পাস
  • আইন ও আদালত
  • প্রবাস
  • বিজ্ঞান প্রযুক্তি
  • মতামত
  • লাইফস্টাইল
No Result
View All Result
Bangla FM

পুঁজিবাদে পরিবেশ সংকট: পৃথিবীর সর্বশ্রেষ্ঠ চিন্তানায়ক কার্ল মার্কসের প্রতিবিধান

Nuri JahanbyNuri Jahan
6:30 pm 29, October 2025
in Semi Lead News, কলাম
A A
0

সৈয়দ আমিরুজ্জামান,

মার্কসবাদের তিনটি উপাদান সম্পর্কে আজকের দুনিয়া পরিচিত। ইংলন্ডের অর্থনীতি, জার্মানির দর্শন এবং ফরাসি দেশের সমাজতান্ত্রিক ধারণা- এই তিনের সংশ্লেষে নির্মিত হয় বৈজ্ঞানিক সমাজতন্ত্রের বুনিয়াদি তত্ত্ব। এর সারাংশ হল শ্রেনি শোষণ অবসানের লক্ষ্যে সচেতন শ্রেনিযুদ্ধই শিকড় থেকে উপড়ে ফেলবে জীর্ণ-পুরাতন রাষ্ট্র ব্যবস্থা, গড়ে তুলবে নতুন সমাজ, নতুন মানুষ। এই তত্ত্ব নির্মাণে মার্কসকেও একরকম যুদ্ধই করতে হয়েছিল। বিপ্লবী মতাদর্শ প্রচারের দায়ে শাসকের আইন তাকে দৌড় করিয়েছে এক দেশ থেকে আরেক দেশ, নিজের সন্তানকে হারিয়েছেন – কফিন কেনার পয়সাটুকু যোগাড় করতে না পেরে সারারাত শিশুর শব বুকে চেপে ধরে থেকেছেন কার্ল মার্কস ও জেনি। তবু মার্কস হেরে যাননি, অদম্য মনোভাবকে দমিয়ে রাখতে পারেনি বুর্জোয়া শাসনব্যবস্থা। মেধার জগতেও আরেক যুদ্ধে নেমেছিলেন তিনি, সেই লড়াই ছিল ভদ্রতার মুখোশ পরে শোষণের পক্ষে প্রত্যক্ষ কিংবা পরোক্ষ যুক্তি হাজির করনেওয়ালাদের বিরুদ্ধে।

আধুনিক পরিবেশ ভাবনাতে যে বিষয়গুলি গুরুত্ব দিয়ে ভাবা হচ্ছে, সামগ্রিক অর্থে পৃথিবীর সর্বশ্রেষ্ঠ চিন্তানায়ক কার্ল মার্কস এসব বিষয়েরও কোনোটিই উপেক্ষা করেননি। পুঁজিবাদের অগ্রগতির অবশ্যম্ভাবী ফল যে পরিবেশ ধ্বংস, সে বিষয়ে ১৮১ বছর পূর্বেই কমরেড কার্ল মার্কস যুক্তিগ্রাহ্য আলোচনা করেছেন। ১৮৪৪ সালে ছাব্বিশ বছর বয়সে কার্ল মার্কস ‘অর্থনৈতিক ও দার্শনিক পান্ডুলিপি’ রচনার কাজে নিযুক্ত হন।

এই পুস্তকে তিনি পরিবেশ-প্রকৃতি সংক্রান্ত বস্তুবাদী ধারণার যৌক্তিক সম্প্রসারণ ঘটিয়ে দেখান যে, মানুষের বস্তুগত জীবন তার চারপাশের প্রকৃতির সঙ্গে নানাভাবে যুক্ত, তার মনোজগতও প্রকৃতির সাথে সম্পৃক্ত।

মার্কসের মতে-‘মানুষ বেঁচে থাকে প্রকৃতির জন্যই। প্রকৃতিই তার দেহ এবং সে যদি জীবিত থাকতে ইচ্ছুক হয়, তবে প্রকৃতির সাথে ক্রমাগত কথোপকথন চালিয়ে যাওয়া তার জন্য বাধ্যতামূলক।’

‘কমিউনিস্ট ইস্তেহারে’ মার্কস-এঙ্গেলস বুর্জোয়া বিকাশের সমালোচনা করে বলেছেন- ‘নিজের উৎপাদন সম্পর্ক, বিনিময় সম্পর্ক ও সম্পত্তি সম্পর্কসহ আধুনিক বুর্জোয়া সমাজ- ভেলকিবাজির মতো উৎপাদন এবং বিনিময়ের এমন বিশাল উপায় গড়ে তুলেছে যে সমাজ, তার অবস্থা আজ সেই যাদুকরের মতো যে মন্ত্রবলে পাতালপুরীর শক্তিসমূহকে জাগিয়ে তুলে আর সেগুলোকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারছে না।’

পুঁজিবাদী উন্নয়নের এই নিয়ন্ত্রনহীনতার জন্যই মানুষ ও প্রকৃতির ছন্দময় সম্পর্ক একদিকে যেমন ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে, অন্যদিকে মানুষের সাথে মানুষের বৈষম্যের সম্পর্ক আরো গভীর হচ্ছে।

মার্কস ‘অর্থনৈতিক ও দার্শনিক পান্ডুলিপি’তে আরো দেখিয়েছেন- পুঁজিবাদ ‘মানুষ এবং প্রকৃতির মধ্যেকার বিপাকীয় সম্পর্কে বিশৃঙ্খলা নিয়ে এসেছে। এই শক্তি একই সঙ্গে শ্রম ও মৃত্তিকাকে শোষণ করছে।

প্রকৃতি এবং মানবসত্তার মধ্যে বিচ্ছিন্নতা সৃষ্টির জন্য মার্কস সরাসরি পুঁজিবাদকে দায়ী করেছেন। ‘গ্রুন্ডুরিস’-এ মার্কস লিখেছেন- ‘পুঁজিবাদের আওতায় এসে প্রকৃতি এই প্রথম মানব জাতির কাছে কেবলমাত্র এক বস্তুতে পরিণত হলো, একেবারেই যা পরিষেবার অন্তর্গত এক অবিমিশ্র বস্তু বিশেষ, পুঁজিবাদের চোখে প্রকৃতি তার স্বত্বঃশক্তি বসলো খুইয়ে।

বুর্জোয়া সমাজ যখন তার নিজের প্রয়োজনেই প্রকৃতির নিয়মকানুনের খোঁজ-খবর করে সেগুলো আবিষ্কার করলো, তখন সেগুলোকে হাতিয়ার করে, ছলনা করে এই ধারণা বদ্ধমূল করে দেয়া হলো প্রকৃতি যেন মানুষের দাস। এতদিন পর্যন্ত সম্প্রদায়ের বা লোক পরম্পরার ফলে আহরিত সমস্ত জ্ঞান যা মানুষের চাহিদাকে একটা সীমার মধ্যে বেঁধে রাখত, উৎপাদনের উৎসমুখ খুলে দেয়ার অছিলায় সেগুলিকে ভেঙ্গে দেয়া হলো।

উচ্ছন্নে গেল চাহিদার ওপর লাগাম পরানোর বিষয়টি। পুঁজিবাদে এসে বৃদ্ধি হলো চাহিদার, উৎপাদন বৃদ্ধি হলো চাহিদার হাত ধরে। শোষণ এবং অন্যান্য বিষয় একদিন যেমন শ্রমিক এবং তার উৎপাদন ব্যবস্থার মধ্যে বিচ্ছিন্নতা নিয়ে এসেছিল, তেমনি বিচ্ছিন্নতা ঘটলো প্রকৃতি এবং মানবসত্তার মধ্যেও।

আর ‘পুঁজি’ গ্রন্থে মার্কস স্পষ্টভাবে দেখিয়েছেন যে, পুঁজিবাদী পদ্ধতিতে কৃষির উন্নতি সাধন কেবল শ্রমিকের জন্য উদ্বৃত্ত মূল্যের শোষণ তাই নয়, সেটি মাটিরও উর্বরতা হরণ করার প্রক্রিয়া। তাই এই প্রক্রিয়ায় যদি কোনো একটি নির্দিষ্ট ভৌগলিক পরিসরে সাময়িকভাবে কৃষি উৎপাদন বাড়েও, মনে রাখতে হবে তা ঘটছে কেবলমাত্র অন্য একটি ভৌগলিক পরিসরে জমির উর্বরতা বাড়ানোর যে প্রাকৃতিক চক্র বিদ্যমান, তার সম্পূর্ণ দীর্ঘস্থায়ী এবং অপ্রত্যাহারযোগ্য ধ্বংস প্রক্রিয়ার মাধ্যমে।

প্রকৃতির নিয়ম আয়ত্ত করে নির্ভুলভাবে তার প্রয়োগ করার ক্ষেত্রেও পুঁজিবাদ বাঁধা হয়ে দাঁড়ায়। কারণ পুঁজিবাদ সমাজের স্বার্থ দেখে না, দেখে মুনাফা। পুঁজিবাদে টেকসই উন্নয়ন সম্ভব নয়। এখানে আধুনিক প্রযুক্তিবিদ্যাকে সমষ্টির স্বার্থে ব্যবহার করা সম্ভব নয়। কারণ টেকসই উন্নয়ন একটি মতাদর্শগত ও রাজনৈতিক প্রশ্ন। পুঁজি ‘টেকসই’ কথাটিকে ব্যবহার করে মুনাফাকরণকে বুঝাতে।

অন্যদিকে মার্কসবাদী ও পরিবেশ তাত্ত্বিকরা টেকসই কথাটিকে সংজ্ঞায়িত করেছেন প্রাকৃতিক ব্যবস্থাদি, জলাভূমি, বনভূমি সংরক্ষণ, বাতাসের বিশুদ্ধতা ইত্যাদি বুঝাতে। দু’-এর মধ্যে দ্বন্দ্ব আছে। কোনো উন্নত পুঁজিবাদী দেশেও সার্বিক পরিবেশ তাত্ত্বিক, নগর ও সামাজিক পরিকল্পনায় নিযুক্ত হওয়ার মতো কোনো রাষ্ট্রীয় এজেন্সি বা কর্পোরেট ভিত্তিক পরিকল্পনা ব্যবস্থার অস্তিত্ব নেই।

কোনো প্রাতিষ্ঠানিক অবকাঠামোর মধ্যে রূপায়িত হওয়া দূরে থাক, একটি পরিবেশ তাত্ত্বিক পুঁজিবাদের ধারণাটিরও কোনো তাত্ত্বিকীকরণ তারা করতে পারেনি। জগৎ সম্পর্কিত মানবীয় দৃষ্টিভঙ্গি ও চিন্তারীতির পুনর্বিন্যাস না হলে সামগ্রিক পরিবেশ তাত্ত্বিকীকরণ করা যায় না। জগৎ সম্পর্কিত মানবীয় দৃষ্টিভঙ্গি ও চিন্তারীতির পুনর্বিন্যাস পুঁজিবাদের শোষণ-বৈষম্য-মুনাফা ও লুণ্ঠনবাদী মতাদর্শের মধ্যে সম্ভব নয়।

মানুষ ও প্রকৃতিকে শোষণের বিন্যাসগুলির পটভূমির ভেতরে শুধু অর্থনৈতিক দক্ষতার ভিত্তিতে পুঁজিবাদী উন্নয়ন ধারা অগ্রসর হয়। ‘জগৎ সম্পর্কিত মানবীয় দৃষ্টিভঙ্গি ও পরিবেশতাত্ত্বিক দক্ষতার’ সাথে ‘পুঁজিবাদী উন্নয়ন ধারার অর্থনৈতিক দক্ষতার’ বিরোধ আছে।

আধুনিক প্রযুক্তিবিদ্যা এমনভাবে নির্মিত যে উৎপাদন প্রক্রিয়ায় প্রকৃতির এক অংশকে সামাজিক দ্রব্য সামগ্রীতে রূপান্তর করতে তা পরিবেশকেও দূষিত করে, মানুষ-জৈবমণ্ডলসহ আরো অনেক কিছুর ক্ষতি সাধন করে। এভাবে পুঁজিবাদী উৎপাদন প্রণালী প্রতিনিয়ত তার অস্তিত্বের অবলম্বন বা শর্তসমূহ পুনরুৎপাদনের দ্বারা মানব জীবনের ‘প্রাকৃতিক শর্তসমূহকে’ নিরবচ্ছিন্নভাবে বিকৃত করে। এটা পুঁজিবাদী উৎপাদন প্রণালীরই অগ্রসরতার নিজস্ব এক শর্ত।
কিন্তু পুঁজিবাদী উৎপাদন প্রণালীর দায় প্রযুক্তিবিদ্যার ওপর চাপান ঠিক নয়। কার্ল মার্কস দেখিয়েছেন- পুঁজিবাদী উৎপাদন প্রণালীর দ্বান্দ্বিক নিরাকরণের মাধ্যমে সংকট থেকে বের হয়ে আসা সম্ভব।

পরিবেশগত পরিণতিসমূহ সম্পর্কে পূর্বাহ্নেই জানা যায় এবং পরিকল্পিত উপায়ে সেগুলি উপেক্ষা করা সম্ভব।
কিন্তু ব্যক্তি ও কর্পোরেট মালিকানা ও চরম মুনাফাবাদ ভিত্তিক পুঁজিবাদী সামাজিক উৎপাদন সম্পর্কের অধীনে সেটা সম্ভব হয় না। এর জন্য প্রয়োজন হলো বৈজ্ঞানিক জ্ঞানের সংহতি বিধান এবং বৈজ্ঞানিক ও মানবিকতাবাদী সংস্কৃতির মধ্যেকার ব্যবধান কাটিয়ে উঠা। এটা সম্ভব হবে এমন একটি সামাজিক অবস্থায় যেখানে মানুষের সাথে মানুষের এবং প্রকৃতির সাথে মানুষের আন্তঃসম্পর্কের মধ্যে, উভয় ক্ষেত্রেই বৈরগ্রস্ততা বিলুপ্ত হয়।

পুঁজি গ্রন্থের ৩য় খণ্ডে মার্কস যখন ‘সংঘবদ্ধ উৎপাদকের দ্বারা প্রকৃতির সাথে তাদের বিনিময়ের যুক্তিবাদী নিয়ন্ত্রণ, প্রকৃতির অন্ধ শক্তিসমূহের দ্বারা শাসিত হওয়ার পরিবর্তে তাদের সাধারণ নিয়ন্ত্রণের অধীনে নিয়ে আসা এবং স্বল্পতম শক্তি ব্যয় ও মানুষের মানবিক অনুকূল ও উপযুক্ত অবস্থার অধীনে তা অর্জনের কথা ব্যক্ত করেন’- তখন তিনি এটাই ভেবেছিলেন।

পুঁজিবাদে ‘টেকসই উন্নয়নের মতাদর্শের’ মধ্যে যে দ্বন্দ্ব রয়েছে মার্কস তাকে প্রকৃতি বনাম মানব সমাজের দ্বন্দ্ব মনে করেননি, তিনি এটাকে প্রকৃতির ও সমাজের সাথে পুঁজির দ্বন্দ্বরূপে দেখেছিলেন। সমাজ ও প্রকৃতির সাথে পুঁজির দ্বন্দ্বের সমাধান ছাড়া পরিবেশ সংকট থেকে বের হওয়ার কোনো উপায় নেই।

সামাজিক সম্পর্কের স্তরে তথা পুঁজিবাদী ব্যক্তি ও কর্পোরেট মালিকানার স্থলে সামাজিক যৌথ মালিকানা ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার মাধ্যমেই কেবল বর্তমান বৈজ্ঞানিক জ্ঞান ও প্রযুক্তিবিদ্যার সাহায্যে এই বিরোধের নিষ্পত্তি সম্ভব হতে পারে।

‘রাজনৈতিক অর্থনীতির সমালোচনা’ গ্রন্থে কমিউনিস্ট সমাজ সম্পর্কে মার্কস বলেছেন- ‘কমিউনিজমেই মানবজাতি এবং প্রকৃতির মধ্যেকার দ্বন্দ্বের প্রকৃত নিরসন ঘটবে, যেমন ঘটবে মানুষে মানুষে দ্বন্দ্বের অবসান। এর ফলে অস্তিত্ব এবং সত্তা, মুক্তি এবং চাহিদা, ব্যক্তি এবং প্রজাতির মধ্যেকার দ্বন্দ্বের অবসান ঘটবে।

কমিউনিজম তাই মানুষের একান্ত সত্তা এবং প্রকৃতির মধ্যে সবচেয়ে নিখুঁত ঐক্য, এটাই হবে প্রকৃতির প্রকৃত পুনরুদ্ধার। কমিউনিজমেই মানুষের মধ্যে প্রকৃতিবাদ রূপায়িত হবে, যেমন রূপায়িত হবে প্রকৃতির মধ্যে মানববাদ।

তাই ইকোলজিক্যাল সংকটের সমাধান খুঁজতে গেলে প্রথম যেটা দরকার সেটা হলো- কার্ল মার্কসের প্রকৃতি ও টেকসই মানব বিকাশের সেই বৈপ্লবিক ধারণা, যা মানুষের স্ববিচ্ছিন্নতা অর্থাৎ শ্রমের থেকে বিচ্ছিন্নতা এবং প্রকৃতি থেকে বিচ্ছিন্নতা উভয়কেই ধরতে পারবে।

দ্বিতীয়ত পরবর্তী প্রজন্মগুলির জন্য ইকোলজির টেকসই অবস্থানকে আবার ফিরিয়ে দেয়ার জন্য কার্ল মার্কসের পরিবেশ চিন্তায় এর প্রতিবিধান হচ্ছে- ‘সংঘবদ্ধ উৎপাদন হিসেবে উৎপাদকদের দ্বারা উৎপাদনের সকল সামাজিক শর্ত ও ফলাফলের অধিগ্রহণ ও নিয়ন্ত্রণ, উৎপাদনের উপকরণের উপর ব্যক্তিগত মালিকানার অবসান, সমস্ত পর্যায়ে গভীর সাম্য প্রতিষ্ঠা, বাজারের অন্ধশক্তিগুলির বদলে প্রকৃত সামাজিক চাহিদা অনুসারে সম্মিলিত উৎপাদকদের দ্বারা পরিকল্পনা গ্রহণ করা।

তৃতীয়ত শুধুমাত্র এসব বৈপ্লবিক কাজের মধ্যে দিয়েই পরিবেশবান্ধব সমাজে উত্তরণ সম্ভব (যার আর এক নাম পরিবেশবান্ধব সমাজতন্ত্র), যা মানুষের অস্তিত্বের উপরেই বিপ্লবাত্মক প্রভাব ফেলবে। এটা করা যায় একমাত্র প্রকৃতির সঙ্গে আমাদের ভোগের সম্পর্ক পাল্টে ফেলে এবং এর সঙ্গে মানবিক সামাজিক সম্পর্কেরও পরিবর্তন ঘটিয়ে, প্রকৃতি ও মনুষ্যত্ব, দুইয়ের মধ্যেই আমাদের বিচ্ছিন্নতাকে অতিক্রম করে।

সম্মিলিত উৎপাদকের সমাজ অভিমুখে বিবর্তন ও মানবিক বিচ্ছিন্নতা থেকে উত্তরণকে মার্কস সমার্থক হিসেবে দেখেছিলেন। কিন্তু সমাজতন্ত্রে উত্তরণকে যান্ত্রিকভাবে অনেক সময় মানুষের সামাজিক সম্পর্ক ও মানবিক চাহিদা বিকাশের দিক থেকে না দেখে নিছক উৎপাদনের উপকরণের প্রসারণ হিসাবে দেখা হয়েছে। এর ফলে মানবিক চাহিদাগুলি বাইরে চলে যায়।

পরিবেশ সমস্যা দেখা দেয়। সোভিয়েত ইউনিয়নে পরিবেশ বিষয়ক সমস্যা সংকটের রূপ নিলে সোভিয়েত রাষ্ট্র তার সমাধানে মতাদর্শের দ্বারস্থ না হয়ে সমস্যার প্রযুক্তিগত সমাধান খোঁজে। পরিবেশ বিষয়ে এক সময়ের বিকৃত অনুশীলন সমাজতন্ত্র-সাম্যবাদের পুরো দার্শনিক ভিত্তিকে নাকচ করে না, কেবল তার কিছু প্রায়োগিক সীমাবদ্ধতাকে তা চিহ্নিত করে।

সমাজতন্ত্রে পরিবেশ সমস্যার প্রতি দৃষ্টিভঙ্গি ও তার সমাধানের সুযোগ পুঁজিবাদের পরিস্থিতি থেকে গুণগতভাবে আলাদা। এই শতাব্দীতে সমাজতন্ত্রের জন্য সংগ্রামের বিপ্লবী চরিত্রকে সোভিয়েত ইউনিয়নের নেতিবাচক শিক্ষাকে বর্জন করে, ইতিবাচক অভিজ্ঞতাকে আত্মস্থ করে নতুন জ্ঞানে সমৃদ্ধ হয়ে সামনে এগিয়ে যেতে হবে।

কার্ল মার্কস তো সমস্ত ইতিহাসকেই ‘মানবপ্রকৃতির অবিরাম রূপান্তর’ হিসেবে দেখেছেন। একমাত্র সমাজতন্ত্রেই মানুষের ইন্দ্রিয়গুলির দ্বারা অনুভবের ক্ষমতার পরিপূর্ণ মুক্তি এবং তাদের ব্যাপক বিকাশ ঘটানো সম্ভব।

‘পূর্ণ বিকশিত প্রকৃতিবাদ হিসেবে সাম্যবাদ’
মার্কস ‘দর্শনের দারিদ্র্য’ গ্রন্থে লিখেছেন ‘মানবতাবাদের সমান এবং পূর্ণ বিকশিত মানবতাবাদ হিসেবে তা প্রকৃতিবাদের সমান।’ একমাত্র সমাজতন্ত্রই পারে পূর্ণ বিকশিত মানবতাবাদের উপর ভিত্তি করে পূর্ণ বিকশিত প্রকৃতিবাদের সমার্থক এক সাম্যবাদী সমাজ সৃষ্টি করতে।

বামপন্থীরা আগের মতো শক্তিশালী অবস্থানে নেই।
তারপরও মার্কসীয় মতাদর্শের প্রাসঙ্গিকতা রয়েছে।

ইকোলজিক্যাল সংকটের সমাধান খুঁজতে গেলে বিপ্লব জরুরি এবং সেটা হতে হবে মার্কসীয়-লেনিনীয় মৌলিকতার উপর ভিত্তি করে আর দেশীয় ইতিহাস, সমাজ এবং সংস্কৃতির সঙ্গে সমন্বয় করে। পৃথিবীতে আজ সবগুলো সমাজ বিপ্লবের ক্ষেত্রে এই সূত্রায়ন প্রযোজ্য। সেই কাজটিকেই এগিয়ে নেওয়াই হবে প্রত্যেক মার্কসবাদী-লেনিনবাদীর কর্তব্য।
সর্বশেষ কার্ল মার্কসের গুরুত্বপূর্ণ একটি উক্তির কথা উল্লেখ করে শেষ করছি, “দার্শনিকরা জগতটাকে শুধু বিভিন্নভাবে ব্যাখ্যাই করে গেলেন, মূল কাজ হচ্ছে বদলে ফেলা।” – কার্ল মার্কস

সৈয়দ আমিরুজ্জামান
মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক গবেষক, সাংবাদিক ও কলামিস্ট;
বিশেষ প্রতিনিধি, ইংরেজি দৈনিক দ্য ফিনান্সিয়াল পোস্ট ও সাপ্তাহিক নতুনকথা;
সম্পাদক, আরপি নিউজ;
কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য, জাতীয় কৃষক সমিতি;
‘৯০-এর মহান গণঅভ্যুত্থানের সংগঠক ও সাবেক কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য, বাংলাদেশ ছাত্রমৈত্রী।
সাবেক কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য, বাংলাদেশ খেতমজুর ইউনিয়ন।
সাধারণ সম্পাদক, মাগুরছড়ার গ্যাস সম্পদ ও পরিবেশ ধ্বংসের ক্ষতিপূরণ আদায় জাতীয় কমিটি।
প্রাক্তন সভাপতি, বাংলাদেশ আইন ছাত্র ফেডারেশন।
E-mail : syedzaman.62@gmail.com
WhatsApp : 01716599589
মুঠোফোন: ০১৭১৬৫৯৯৫৮৯
Bikash number : +8801716599589 (personal)

ShareTweetPin

সর্বশেষ

রংপুরে অপরাজেয় তারুণ্যের উদ্যোগে ‘হেলথ এডভোকেসি ক্যাম্পেইন’ অনুষ্ঠিত

October 29, 2025

সুনামগঞ্জের মধ্যনগরে বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ মিছিল

October 29, 2025

শুরুর ঝড় থামিয়ে ক্যারিবীয়দের ১৪৯ রানে আটকাল বাংলাদেশ

October 29, 2025

ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন আয়োজন সম্ভব নয়: নাহিদ ইসলাম

October 29, 2025

বাকেরগঞ্জে জাকের পার্টির বর্নাঢ্য র‍্যালী ও জনসভা অনুষ্ঠিত

October 29, 2025

রাশমিকার বিয়ের আগে সন্তান নিয়ে পরিকল্পনা

October 29, 2025
banglafmlogonewupate

প্রকাশক: আনোয়ার মুরাদ
সম্পাদক: মো. রাশিদুর ইসলাম (রাশেদ মানিক)
নির্বাহী সম্পাদক: মুহাম্মদ আসাদুল্লাহ

বাংলা এফ এম , ১৬৪/১, মোহাম্মাদিয়া হাউসিং সোসাইটি, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭, বাংলাদেশ

ফোন:  +৮৮ ০১৯১৩-৪০৯৬১৬
ইমেইল: banglafm@bangla.fm

  • Disclaimer
  • Privacy
  • Advertisement
  • Contact us

© ২০২৫ বাংলা এফ এম

Welcome Back!

Login to your account below

Forgotten Password?

Retrieve your password

Please enter your username or email address to reset your password.

Log In

Add New Playlist

No Result
View All Result
  • সর্বশেষ
  • জাতীয়
  • রাজনীতি
  • বিশ্ব
  • সারাদেশ
  • বিনোদন
  • খেলাধুলা
  • প্রবাস
  • ভিডিও
  • কলাম
  • অর্থনীতি
  • লাইফস্টাইল
  • ক্যাম্পাস
  • আইন ও আদালত
  • চাকুরি
  • অপরাধ
  • বিজ্ঞান প্রযুক্তি
  • ইতিহাস
  • ফটোগ্যালারি
  • ফিচার
  • মতামত
  • শিল্প-সাহিত্য
  • সম্পাদকীয়

© ২০২৫ বাংলা এফ এম