দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি করতে সারা দেশে একযোগে পরিচালিত হচ্ছে ‘অপারেশন ডেভিল হান্ট’। এর অংশ হিসেবে সিলেট বিভাগরে তিন জেলায় এখন পর্যন্ত দুই ইউনিয়ন চেয়ারম্যানসহ আওয়ামী লীগ ও নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের ১৪ জন গ্রেফতার হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।
রবিবার (৯ ফেব্রুয়ারী) রাত থেকে সোমবার (১০ ফেব্রুয়ারী) বিকাল পর্যন্ত বিভাগের বিভিন্ন জায়গায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করা হয়।
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, রবিবার রাত থেকে শুরু হয়েছে যৌথবাহিনীর এই অপারেশন। অপারেশনে সিলেট থেকে আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গসংগঠনের ৫ জন, হবিগঞ্জ থেকে আওয়ামী লীগের তিন জন ও সুনামগঞ্জের দুই ইউনিয়ন চেয়ারম্যানসহ ৬ জন গ্রেফতার করা হয়েছে।
সিলেট থেকে গ্রেফতারকৃতরা হলেন- সিলেট মহানগরীর ৩৪নং ওয়ার্ড স্বেচ্ছাসেবকলীগের সাধারণ সম্পাদক ও শাহপরাণ বহর আবাসিক এলাকার মৃত মাওলানা জামিল আহমদের ছেলে জাহেদ আহমদ (৩৪) এবং দক্ষিণ সুরমা উপজেলার লালারচক গ্রামের আবদুল খালিকের ছেলে উপজেলা আওয়ামী লীগের সক্রিয় সদস্য আবদুল জলিল তালুকদার, নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সহ সভাপতি অয়ন দাশ (২৭), নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের দক্ষিন সুরমা উপজেলার সাহিত্য বিষয়ক সম্পাদক নয়ন চন্দ ও নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের উপজেলার সহ সভাপতি হবিব (২৫)।
সোমবার সকালে এ তথ্য জানিয়েছেন সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের (এসএমপি) মিডিয়া অফিসার, অতিরিক্ত উপকমিশনার মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম।এদিকে হবিগঞ্জে তিন জন আওয়ামী লীগ নেতাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। রোববার দিবাগত রাতে জেলার বিভিন্ন স্থানে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে তাদেরকে গ্রেফতার করা হয়। সোমবার দুপুরে গ্রেপ্তারকৃত আওয়ামী লীগ নেতাদেরকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে প্রেরণ করা হয়েছে।
হবিগঞ্জ সদর মডেল থানার (ওসি) আলমগীর কবির বলেন- রোববার মধ্যরাতে জেলার লাখাই উপজেলার লাখাই বাজারে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অভিযান চালানো হয়। অভিযানকালে উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পদক শাহ রেজা উদ্দিন আহমেদ দুলদুলকে গ্রেফতার করা হয়। সে লাখাই উপজেলার কাটিয়ারা গ্রামের আব্দুল মান্নান এর ছেলে।
ওসি বলেন, অপর আরেক অভিযানে শহরতলীর রামপুর থেকে আওয়ামীলীগ নেতা শরিফ উদ্দিনকে গ্রেফতার করা হয়। সে ওই গ্রামের ফখরুল ইসলামের ছেলে। তাদের বিরুদ্ধে সদর থানায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র জনতার উপর হামলার ঘটনায় মামলা রয়েছে।
এদিকে, নবীগঞ্জ উপজেলার কুর্শি ইউনিয়নের কল্যানপুর এলাকায় অভিযান চালিয়ে উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক কাজী ওবায়দুল কাদের হেলালকে গ্রেফতার করা হয়।
গ্রেফতার কাজী ওবায়দুল কাদের হেলাল (৫২) উপজেলার কুর্শি ইউনিয়নের কল্যানপুর গ্রামের মৃত কাজী ফিরোজ মিয়া ওরফে কাজী রাজ্জাক মিয়ার ছেলে। তার বিরুদ্ধেও হবিগঞ্জ সদর থানায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র জনতার উপর হামলার ঘটনায় মামলা রয়েছে।
এছাড়া সুনামগঞ্জের শাল্লার ইউনিয়ন চেয়ারম্যান আব্দুস সাত্তার মিয়া ও বিশ্বজিত চৌধুরী নান্টুসহ ৬ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
সোমবার (১০ ফেব্রুয়ারী) সকালে শাল্লা সদর থেকে গ্রেফতার করে তাদেরকে সুনামগঞ্জ জেলা হাজতে প্রেরণ করা হয়।
সুনামগঞ্জে গ্রেফতাররা হলেন, দোয়ারাবাজার উপজেলা আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য ও বরকতনগর গ্রামের বাসিন্দা মোঃ শফিকুল ইসলাম (৫৫), তাহিরপুর বড়দল দক্ষিণ ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি ও তাহিরপুর থানার মাটিকাটা গ্রামের বাসিন্দা মোঃ জলিল মিয়া (৪৮), দিরাই সরকারি কলেজের নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক ও দৌজ গ্রামের বাসিন্দা কাওছার আহমেদ (২৮), নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের ছাতক উপজেলা যুগ্ম আহ্বায়ক জামাল আহমেদ (২৫)।
এছাড়া গ্রেফতার আব্দুস সাত্তার মিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ও ০৪ নং শাল্লা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান। অন্যদিকে বিশ্বজিত চৌধুরী নান্টু উপজেলা সেচ্ছাসেবক লীগের সাবেক সভাপতি ও ০৩ নং বাহাড়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান।
এ বিষয়ে শাল্লা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শফিকুল ইসলাম, দুই ইউনিয়ন চেয়ারম্যান আব্দুস সাত্তার মিয়া ও বিশ্বজিত চৌধুরী নান্টুকে গ্রেফতারের বিষয়টি নিশ্চিত করেন।