ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও গণভোটের তফসিল ঘোষণার মাত্র ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক ও ঢাকা-৮ আসনের সম্ভাব্য স্বতন্ত্র প্রার্থী শরিফ ওসমান হাদি গুলিবিদ্ধ হয়ে গুরুতর আহত হওয়ার ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দীন।
রোববার জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও গণভোট উপলক্ষে সার্বিক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে বৈঠক করেন সিইসি। বৈঠকের শুরুতে তিনি সাংবাদিকদের জানান, “ঘটনাটি আমার কাছে মনে হলো, মাথার ওপর বাজ পড়েছে। আমি আগের দিন তফসিল ঘোষণা করি, আর পরের দিনই এমন ঘটনা ঘটল। এটা অত্যন্ত দুঃখজনক।”
নির্বাচন কমিশন সূত্রে জানা গেছে, তফসিল ঘোষণার পরপরই এমন সহিংস ঘটনা সাধারণ মানুষ ও প্রার্থীদের মধ্যে উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। কমিশন বিষয়টিকে অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে পর্যবেক্ষণ করছে।
বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ বলেন, “যারা এই কাজ করতে চাচ্ছে, তাদের উদ্দেশ্যই ছিল একটি ভীতিকর পরিবেশ সৃষ্টি করা। আমরা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে সমন্বয় করে নিশ্চিত করেছি, নির্বাচনের পথে এই ধরনের ভয়কে কার্যকরভাবে প্রতিহত করা হবে।”
তিনি আরও বলেন, তফসিল ঘোষণার পর যেকোনো ঘটনা প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে নির্বাচনের ওপর প্রভাব ফেলতে পারে। তবে নির্বাচন কমিশন স্বাভাবিক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করছে।
সানাউল্লাহ জানান, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রস্তুতি পর্যাপ্ত এবং যথাযথ। নির্বাচনের পথে বাধা সৃষ্টির যেকোনো চেষ্টার বিষয়ে কমিশন ও সরকার সতর্ক এবং তৎপর।
তিনি বলেন, “ডেভিল হান্ট ফেইজ-২” কার্যক্রম সমন্বিতভাবে চলমান রয়েছে। গোয়েন্দা তথ্য সংগ্রহ ও বিশ্লেষণ জোরদার করা হয়েছে। সীমান্ত অঞ্চল, বিশেষ করে দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চল ও রোহিঙ্গা অধ্যুষিত এলাকাগুলোতে সাম্প্রতিক প্রবণতার দিকে নজর রাখা হয়েছে। এই ধরনের ঘটনার সঙ্গে বৃহত্তর কোনো নাশকতার সম্পর্ক আছে কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।”
সানাউল্লাহ আরও জানান, হামলার ঘটনায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এর মধ্যে একজন হামলার সময় ব্যবহৃত মোটরসাইকেলটির মালিক। বাকি দু’জন অবৈধভাবে সীমান্ত পারাপারে জড়িত। তাদের কাছ থেকে তথ্য নিয়ে তদন্ত চলছে। পরিবারের পক্ষ থেকে মামলার আবেদন করা না হলে পুলিশ বাদী হয়ে মামলা করবে।
নির্বাচন কমিশন সূত্রে বলা হয়েছে, এ ধরনের সহিংস ঘটনা নির্বাচনের পরিবেশে অপ্রত্যাশিত প্রভাব ফেলতে পারে, তবে কমিশন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সক্ষম। নির্বাচনের পথ বাধামুক্ত রাখার জন্য সমস্ত পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে এবং প্রার্থী ও ভোটারদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হবে।

