সাউথ এশিয়া সেন্টার ফর মিডিয়া ইন ডেভেলপমেন্ট (স্যাকমিড) সফলভাবে “ইকোস অব চেঞ্জ: ডিসেমিনেশন অব দ্য প্রজেক্ট অ্যান্ড দ্য ফিউচার অব ডিজিটাল সেফটি ইন মিডিয়া” শীর্ষক সমাপনী কর্মশালা সোমবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৫, ঢাকার বিশ্ব সাহিত্য কেন্দ্র-এ আয়োজন করেছে।
এ কর্মশালার মাধ্যমে ‘ডিজিটাল ঝুঁকি ও নিরাপত্তা ব্যবস্থা সম্পর্কে সচেতনতা বাড়ানোর মাধ্যমে প্রচারমাধ্যম কর্মী, ছাত্রী ও সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠীর নারীদের ক্ষমতায়ন প্রকল্পের আনুষ্ঠানিক সমাপ্তি ঘোষণা করা হয়। প্রকল্পটি বাংলাদেশে অবস্থিত নেদারল্যান্ডস দূতাবাসের অর্থায়নে বাস্তবায়িত হয়।
কর্মশালার বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন লুবায়ন চৌধুরী মাসুম, অ্যাডভাইজর ফর পলিটিক্যাল অ্যাফেয়ার্স অ্যান্ড পাবলিক ডিপ্লোমেসি, নেদারল্যান্ডস দূতাবাস। তিনি তথ্য যাচাই, সমালোচনামূলক চিন্তা এবং দায়িত্বশীল ডিজিটাল আচরণের গুরুত্ব তুলে ধরে বলেন, “আজকের সময়ে কোনো তথ্য বিশ্বাস করার আগে তার সত্যতা নিশ্চিত করাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ”
অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন নাদিয়া রহমান (নিকোল), সহকারী অধ্যাপক, গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগ, বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালস (বিইউপি)। তার প্রাণবন্ত ও নিরবচ্ছিন্ন উপস্থাপনা সেশনটির গতি ও স্বচ্ছন্দতা বজায় রাখে। কর্মশালায় আরও উপস্থিত ছিলেন স্যাকমিডের ডেপুটি ডিরেক্টর সৈয়দ কামরুল হাসান এবং প্রতিষ্ঠানের অন্যান্য কর্মকর্তা।
প্রকল্পের তিন জেলা সিরাজগঞ্জ, কুমিল্লা ও খুলনা থেকে অংশগ্রহণ করেন অংশীদার সংগঠনগুলোর প্রতিনিধিরা: হোসনে আরা জলি (কমিউনিটি ওয়েলফেয়ার ফাউন্ডেশন), হোসনে আরা বেগম (প্রোগ্রাম ফর উইমেন ডেভেলপমেন্ট), মাহমুদা আক্তার (হলদিয়া মহিলা উন্নয়ন সংস্থা) এবং কমিউনিটি ডেভেলপমেন্ট অর্গানাইজেশনের প্রতিনিধি। তাদের উপস্থিতি প্রকল্পের বিভিন্ন ধাপে যৌথ প্রচেষ্টার সফলতা আরও স্পষ্ট করে। অতিথি হিসেবে আরও উপস্থিত ছিলেন প্রেস ইনস্টিটিউট অব বাংলাদেশ (পিআইবি)-এর ওয়ার্কশপ কোঅর্ডিনেটর জিলহাজ উদ্দিন নীপুণ।

কর্মশালায় মোট ২৫ জন অংশগ্রহণকারী—বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, শিক্ষার্থী, ফ্যাক্টচেকার এবং পেশাদার সাংবাদিক—ডিজিটাল ঝুঁকি, ভুয়া তথ্য, বিভ্রান্তিমূলক কনটেন্ট এবং নিরাপদ ডিজিটাল পরিবেশ গড়ে তোলার কৌশল নিয়ে মতবিনিময় করেন। সেশনে প্রকল্পের আওতায় তৈরি করা অডিও–ভিজ্যুয়াল উপকরণগুলো প্রদর্শন করা হলে অংশগ্রহণকারীরা তা মনোযোগসহকারে পর্যবেক্ষণ করেন। তারা ভবিষ্যতে আরও সমাধানভিত্তিক, ব্যবহারবান্ধব এবং লক্ষ্যভিত্তিক ক্যাম্পেইন উপকরণ তৈরির গুরুত্ব তুলে ধরেন।
আলোচনায় হোসনে আরা জলি দীর্ঘমেয়াদি সচেতনতা কার্যক্রমের প্রয়োজনীয়তা উল্লেখ করে বলেন, “ভুল তথ্য ও বিভ্রান্তি রোধে অন্তত দুই থেকে তিন বছরব্যাপী প্রকল্প হলে এর প্রভাব আরও স্থায়ী হয়।”
কর্মশালায় প্রকল্পের মূল অর্জন, মাঠপর্যায়ের অভিজ্ঞতা এবং ভবিষ্যৎ করণীয় উপস্থাপন করা হয়। অংশগ্রহণকারীরা জানান, এই প্রকল্প তাদের ডিজিটাল মাধ্যমে আরও দায়িত্বশীল ও সচেতনভাবে কাজ করতে সহায়তা করেছে।
সমাপনী কর্মশালাটি শুধু প্রকল্পের সফল সমাপ্তির ঘোষণাই নয়—বরং বাংলাদেশের গণমাধ্যম পেশাজীবী, শিক্ষার্থী এবং কমিউনিটি কর্মীদের জন্য আরও নিরাপদ, সচেতন ও সহনশীল ডিজিটাল সমাজ নির্মাণে নতুন অঙ্গীকারের বার্তা বহন করে।


