বিশেষ প্রতিবেদন
দোয়া একজন মুসলমানের আত্মিক হাতিয়ার। সুখে-দুঃখে, বিপদে-আপদে একজন মুমিন আল্লাহ তায়ালার দিকে হাত তুলে সাহায্য চান। দোয়া হলো বান্দা ও প্রভুর মধ্যে সরাসরি সংযোগ। কোরআন ও হাদিসে বহু দোয়া এসেছে, যেগুলোর মাধ্যমে পূর্ববর্তী নবীরা আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করেছেন এবং তাঁর পক্ষ থেকে উদ্ধার পেয়েছেন।
এখানে তুলে ধরা হলো দুই জন শ্রেষ্ঠ নবী—হজরত ইউনুস (আ.) ও হজরত আইয়ূব (আ.)-এর দোয়া, যেগুলো আমাদের জীবনেও আশার আলো জ্বালাতে পারে।
হজরত ইউনুস (আ.)-এর দোয়া
(মাছের পেটের মধ্যকার প্রার্থনা)
হজরত ইউনুস (আ.) যখন কওমকে ছেড়ে রাগান্বিত অবস্থায় চলে যান এবং পরবর্তীতে বিশাল এক মাছের পেটে আবদ্ধ হন, তখন তিনি আল্লাহর দরবারে একান্তভাবে এই দোয়া করেছিলেন:
📖 دُعَاءُ يُونُس:
لاَ إِلٰهَ إِلاَّ أَنْتَ سُبْحَانَكَ إِنِّي كُنْتُ مِنَ الظّالِمِينَ
উচ্চারণ: লা ইলাহা ইল্লা আনতা সুবহানাকা ইন্নি কুন্তু মিনাজ্জালিমিন
অর্থ: “আপনি ছাড়া কোনো উপাস্য নেই। আপনি পবিত্র, নিশ্চয়ই আমি জালিমদের অন্তর্ভুক্ত।”
📚 (সূরা আম্বিয়া: ৮৭)
রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, “যে কেউ এই দোয়া পড়বে, আল্লাহ তা কবুল করবেন।”
(তিরমিজি, হাদিস: ৩৫০৫)
হজরত আইয়ূব (আ.)-এর দোয়া
(দীর্ঘ রোগভোগের সময়কার নম্র প্রার্থনা)
হজরত আইয়ূব (আ.) অসীম ধৈর্যের প্রতীক। তিনি দীর্ঘ সময় কঠিন রোগে আক্রান্ত ছিলেন এবং সমাজ থেকে একপ্রকার বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছিলেন। তখন তিনি আল্লাহর দরবারে কাঁদো কাঁদো কণ্ঠে বলেছিলেন:
📖 دُعَاءُ أَيُّوب:
اَنِّیۡ مَسَّنِیَ الضُّرُّ وَ اَنۡتَ اَرۡحَمُ الرّٰحِمِیۡنَ
উচ্চারণ: আন্নী মাসসানিয়াদ দুররু ওআন্তা আরহামার রাহিমীন
অর্থ: “আমি তো দুঃখ-কষ্টে পড়েছি, আর আপনি তো সর্বশ্রেষ্ঠ দয়ালু।”
📚 (সূরা আম্বিয়া: ৮৩)
আমাদের জন্য শিক্ষা
এই দোয়া দুটির মধ্যে রয়েছে আত্মসমর্পণ, বিনয়, আল্লাহর প্রশংসা ও কৃতজ্ঞতা। আমাদের জীবনে যখনই সংকট আসে, তখন এই দোয়াগুলো নিয়মিত পাঠ করা ইমানী দায়িত্ব ও একান্ত প্রয়োজন হয়ে দাঁড়ায়।
আল্লাহ তায়ালা বলেন:
“ডাকো আমাকে, আমি তোমাদের ডাকে সাড়া দেব।”
📖 (সূরা গাফির: ৬০)
দোয়া করুন, বিশ্বাস রাখুন, অপেক্ষা করুন। আল্লাহ কখনো কাউকে নিরাশ করেন না।