রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) পোষ্য কোটা পুনর্বহালের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের দাবিতে শনিবার দিনভর বিক্ষোভ, অনশন, ধস্তাধস্তি ও শিক্ষক-কর্মকর্তাদের অবরুদ্ধ রাখার পর মধ্যরাতে উপাচার্যের বাসভবন ঘেরাও করেন শিক্ষার্থীরা।
শনিবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৭টি আবাসিক হলের শিক্ষার্থীরা একযোগে মিছিল নিয়ে উপাচার্যের বাসভবনের সামনে গিয়ে অবস্থান নেন। রাত দেড়টা পর্যন্ত তারা সেখানে বিক্ষোভ চালিয়ে যাচ্ছিলেন।
বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ রাত ১টায় ভেরিফাইড ফেসবুক পেজে জানায়, অস্থিতিশীল পরিস্থিতির কারণে পোষ্য কোটা সংক্রান্ত ভর্তি কার্যক্রম স্থগিত রাখা হয়েছে। এ বিষয়ে রোববার জরুরি সিন্ডিকেট সভা ডাকা হয়েছে। তবে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা ঘোষণা দেন, উপাচার্য সরাসরি এসে বাতিলের ঘোষণা না দেওয়া পর্যন্ত কর্মসূচি চলবে।
স্লোগান ও শিক্ষার্থীদের বক্তব্য
বিক্ষোভকারীরা স্লোগান দেন—
“শিক্ষা আর ভিক্ষা, একসাথে চলে না”
“অন টু থ্রি ফোর, পোষ্য কোটা নো মোর”
“রক্ত লাগলে রক্ত নিন, পোষ্য কোটা বাদ দিন”
“কোটা না মেধা, মেধা মেধা”
সমাজকর্ম বিভাগের শিক্ষার্থী সুপ্রভা বিনতে রফিক বলেন, “আমরা আবার রাজপথে নেমেছি। পোষ্য কোটার চূড়ান্ত বিলুপ্তি না হওয়া পর্যন্ত ঘরে ফিরব না।”
দিনভর উত্তেজনা
দুপুর আড়াইটা থেকে শিক্ষার্থীরা প্রশাসনিক ভবনের সামনে টায়ার জ্বালিয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন। বিকেলে উপ-উপাচার্যের গাড়িতে টাকা ছুড়ে মেরে প্রতিবাদ জানান এবং তার বাসভবনে তালা ঝুলিয়ে দেন। পরে জুবেরী ভবনে প্রবেশের চেষ্টা করলে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের মধ্যে ধস্তাধস্তি হয়। এতে কয়েকজন আহত হন। বিকেল চারটার পর থেকে উপ-উপাচার্যসহ বেশ কয়েকজন শিক্ষক ও কর্মকর্তাকে ভবনে অবরুদ্ধ করে রাখেন শিক্ষার্থীরা।
উপাচার্যের প্রতিক্রিয়া
রাত সাড়ে ১১টার দিকে উপাচার্য অধ্যাপক সালেহ হাসান নকীব বলেন, “আমার প্রো-ভিসি, রেজিস্ট্রার ও প্রক্টরকে ফেরত চাই। জিম্মি করে কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া যায় না। আমরা ধৈর্য ধরে পরিস্থিতি সামলাচ্ছি।”
তিনি আরও জানান, “রাকসু নির্বাচন হবে কিনা, তা শিক্ষার্থীদের আচরণের ওপর নির্ভর করবে। তবে আমি রাকসু নির্বাচন নিয়ে আন্তরিক।”

