রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের প্রথম ইউনিটে পারমাণবিক জ্বালানি লোডের প্রস্তুতি প্রায় শেষ পর্যায়ে এসেছে। সংশ্লিষ্টরা জানান, সবকিছু ঠিক থাকলে খুব অল্প সময়ের মধ্যে জ্বালানি লোড করা হবে এবং এ বছরের শেষের দিকে প্রকল্পের প্রথম ইউনিট চালু (স্টার্ট আপ) হতে পারে।
এর আগে, বাংলাদেশ পারমাণবিক শক্তি নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ (বায়েরা), রাশিয়ার ভিও সেফটি এবং অন্যান্য নিয়ন্ত্রক সংস্থার বিশেষজ্ঞ প্রতিনিধিদল ৭ নভেম্বর থেকে ২০ নভেম্বর পর্যন্ত প্রকল্পের বিস্তৃত পরিদর্শন করেছেন। এই পর্যবেক্ষণে মানবসম্পদ, ব্যবহারকৃত বিভিন্ন ইক্যুইপমেন্ট, সিস্টেম ও ফ্যাসিলিটি এবং পরিচালন সংক্রান্ত নথি বিশ্লেষণ করা হয়েছে।
বায়েরার চেয়ারম্যান মো. মাহমুদুল হাসান নিশ্চিত করেছেন, উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের পরিদর্শন কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হয়েছে। প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, সাধারণত চার থেকে ছয় সপ্তাহের মধ্যে ফিজিক্যাল স্টার্ট আপের পর জ্বালানি লোডিং সম্ভব। সেই হিসেবে ডিসেম্বরের তৃতীয় বা চতুর্থ সপ্তাহে প্রথম ইউনিটে ফুয়েল লোডিং হতে পারে।
নিউক্লিয়ার পাওয়ার প্লান্ট কোম্পানি বাংলাদেশ লিমিটেড (এনপিসিবিএল) কর্তৃপক্ষ পরিদর্শক দলের সঙ্গে সহযোগিতা করে কমিশনিং কার্যক্রমের অগ্রগতি, স্থাপনা, স্টার্ট আপ প্রটোকল ও সনদসমূহ পর্যালোচনা করেছেন। এনপিসিবিএলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ড. জাহেদুল হাসান জানান, নিরাপত্তা, সুরক্ষা ও সেফগার্ডকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়ে বায়েরা রূপপুর প্রকল্পের ফিজিক্যাল স্টার্ট আপ প্রস্তুতি যাচাই করেছে।
ফিজিক্যাল স্টার্ট আপ এবং জ্বালানি লোডিং পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র চালুর একটি গুরুত্বপূর্ণ ধাপ। এই ধাপে রিয়্যাক্টরে প্রথমবারের মতো জ্বালানি স্থাপন করা হয় এবং সীমিত মাত্রায় পারমাণবিক বিক্রিয়া শুরু করা হয়। পাশাপাশি বিদ্যুৎকেন্দ্রের বিভিন্ন সিস্টেম পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হয়।
পরিদর্শন শেষে বিশেষজ্ঞ দল প্রকল্পের সার্বিক অগ্রগতি ও ব্যবস্থাপনায় সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন। তবে রূপপুর প্রকল্পের নিরাপত্তা ও সুরক্ষা আরও উন্নত করার জন্য কিছু সুপারিশও করা হয়েছে, যা এনপিসিবিএল বাস্তবায়ন করছে। প্রয়োজনীয় অনুমোদন ও লাইসেন্সের জন্য রাশিয়ার রেগুলেটরি অথরিটি, আন্তর্জাতিক পরমাণু সংস্থা এবং ভিও সেফটি’র এ্যাসেসমেন্ট প্রতিবেদন প্রয়োজন।
বায়েরার চেয়ারম্যান মো. মাহমুদুল হাসান বলেন, “সর্বোচ্চ অগ্রাধিকারে নিরাপত্তা ও সেফগার্ড নিশ্চিত করে ফিজিক্যাল স্টার্ট আপের প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। সুপারিশ যথাযথভাবে পূরণ হলে বায়েরা জ্বালানি লোডিংয়ের অনুমোদন দেবে।”







