তেজগাঁও কলেজের ছাত্রাবাসে সংঘর্ষে আহত শিক্ষার্থী সাকিবুল হাসান রানার মৃত্যুর ঘটনায় ঘোষিত বিক্ষোভ ও ব্লকেড কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে রাজধানীর ফার্মগেট এলাকায় সতর্ক অবস্থান নিয়েছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।
বুধবার (১৭ ডিসেম্বর) দুপুর সাড়ে ১২টায় সরেজমিনে দেখা যায়, তেজগাঁও কলেজের প্রধান ফটক, ফার্মগেটমুখী সড়ক, মোড় এলাকা এবং আশপাশের বিভিন্ন গলিতে বিপুল সংখ্যক পুলিশ সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে অতিরিক্ত আইনশৃঙ্খলা বাহিনী প্রস্তুত রাখা হয়েছে বলেও জানা গেছে।
আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করেছেন, ঘটনার পর চিহ্নিত আসামিরা থাকা সত্ত্বেও পুলিশ প্রথমে ৪৮ ঘণ্টা সময় চেয়েছিল। তবে সেই সময় অতিক্রান্ত হলেও এখনো মূল অভিযুক্তদের গ্রেপ্তার করা হয়নি। শিক্ষার্থীদের দাবি, রাজনৈতিক চাপের কারণে প্রশাসন আসামিদের ধরতে গড়িমসি করছে।
আন্দোলনে অংশ নেওয়া শিক্ষার্থী ফারহান আহমেদ গণমাধ্যমকে জানান, আজ তারা ব্লকেড কর্মসূচির ঘোষণা দিলেও আপাতত বিক্ষোভ মিছিলের মাধ্যমে প্রতিবাদ জানাচ্ছেন। তার ভাষ্য অনুযায়ী, ঘটনাটি একটি স্পষ্ট হত্যাকাণ্ড হলেও কলেজ প্রশাসন বিষয়টি ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করছে।
তিনি আরও বলেন, প্রকৃত দোষীদের আইনের আওতায় না আনা পর্যন্ত আন্দোলন চলবে এবং প্রয়োজনে কর্মসূচির পরিধি আরও বিস্তৃত করা হবে। মূলত প্রশাসনের ওপর চাপ সৃষ্টি করতেই শিক্ষার্থীরা এই বিক্ষোভ কর্মসূচির ডাক দিয়েছেন বলে জানান তিনি।
ঘটনার সূত্রপাত হয় গত ৬ ডিসেম্বর রাতে তেজগাঁও কলেজের ছাত্রাবাসে। জানা গেছে, মাদক সেবনকে কেন্দ্র করে ছাত্রদলের দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষটি একপর্যায়ে রক্তক্ষয়ী রূপ নেয়। এতে উচ্চ মাধ্যমিকের বিজ্ঞান বিভাগের মেধাবী ছাত্র সাকিবুল হাসান রানাসহ অন্তত তিনজন শিক্ষার্থী গুরুতর আহত হন।
রানার শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে তাকে দ্রুত হাসপাতালে ভর্তি করা হয় এবং নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) রাখা হয়। সেখানে চার দিন চিকিৎসাধীন থাকার পর গত ১০ ডিসেম্বর বেলা সাড়ে ১২টায় তার মৃত্যু হয়।
মেধাবী এই শিক্ষার্থীর অকাল মৃত্যুতে সহপাঠীদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ ও শোকের সৃষ্টি হয়েছে। একই সঙ্গে ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও দোষীদের দ্রুত গ্রেপ্তারের দাবিতে আন্দোলন অব্যাহত রয়েছে।

