মনির হোসেন, বেনাপোল প্রতিনিধি :
বাঙালী সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব দুর্গাপূজার ছুটিতে বেনাপোল বন্দর দিয়ে ভারত ভ্রমণে পাসপোর্টযাত্রীদের যাতায়াত বেড়েছে।
টানা ছুটিতে পরিবার-পরিজন নিয়ে পূজা উপভোগ ও দর্শনীয় স্থান ভ্রমণে ভারতে যাচ্ছেন অনেকে। একইভাবে ভারত থেকেও এই চেকপোস্ট দিয়ে বাংলাদেশেও আসছেন অনেকে। দীর্ঘদিন পর বেনাপোল চেকপোস্টে ভারত গমনে যাত্রীদের কোলাহল দেখা গেছে।
সোমবার থেকে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত চার দিনে এ চেকপোস্ট ব্যবহার করে ৭ হাজার ৩০৩ পাসপোর্টযাত্রী পারাপার হয়েছে বলে ইমিগ্রেশন সুত্র জানিয়েছেন। তবে আগামী ৩/৪ দিন যাত্রীর সংখ্যা বাড়বে।
২০২৪ সালের ৫ আগস্টের পর ভারত সরকার বাংলাদেশীদের জন্য ভারতীয় ভিসা বন্ধ করে দেয়। ভিসা প্রদানের ক্ষেত্রে ভারত সরকার বিধিনিষেধ আরোপ করায় কমে যায় দু‘দেশের মধ্যে যাত্রী পারাপার। আগে প্রতিদিন যেখানে ৭ থেকে ৯ হাজার যাত্রী পারপার হত, সাম্প্রতিক সময়ে তা এসে দাঁড়ায় হাজারের নিচে। এখন সেখানে প্রতিদিন পারাপার হচ্ছে দ্বিগুন যাত্রী।
দুর্গাপূজার ছুটি কাটাতে ও আত্মীয়-স্বজনদের সঙ্গে দেখা করতে ভারত যাচ্ছেন তারা বলে জানান বেনাপোল চেকপোস্ট ইমিগ্রেশন পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইলিয়াস হোসেন মুন্সি।
গত চার দিনে বেনাপোল আন্তর্জাতিক চেকপোস্ট দিয়ে সাড়ে ৪ হাজার পাসপোর্ট যাত্রী ভারতে গেছে বলে ইমিগ্রেশন সূত্রে জানা গেছে।
ওসি বলেন, সোমবার থেকে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত চার দিনে এ চেকপোস্ট ব্যবহার করে ৭ হাজার ৩০৩ পাসপোর্টযাত্রী পারাপার হয়েছে। বৃহস্পতিবার ভারত গেছে এক হাজার ১৮২ জন, বুধবার গেছে এক হাজার ১৮৭ জন, মঙ্গলবার গেছে ৯০৩ জন এবং সোমবার গেছে ৯৪২ জন। দশ দিন আগে এই সংখ্যা ছিল পাঁচশ‘র নিচে। যাচাই-বাছাই করেই পাসপোর্টযাত্রীদের ভারত ভ্রমণের অনুমতি দেওয়া হচ্ছে।
চেকপোস্টে কথা হয় ভারতগামী পাসপোর্ট যাত্রী খুলনার গনেশ মন্ডল, বাগেরহাটের দিনেশ বন্ধু সরকার, নড়াইলের গোপাল কর্মকার, ঢাকার জগদীশ চক্রবর্তী, বরগুনার আমতলি এলাকার অলিউল ইসলাম ও ফরিদপুর সদরের আব্দুর রাজ্জাক এর সাথে।
খুলনার গনেশ মন্ডল বলেন, চাকরি করি, তাই ঘুরে বেড়ানোর সময় পাই না, পরিবারে সময় দিতে পারি না। এবার পূজার লম্বা ছুটি থাকায় কলকাতায় বেড়াতে যাচ্ছি। সেখানে কিছু আত্মীয় আছেন, তাদের সঙ্গে দেখা করব।
বাগেরহাটের দিনেশ বন্ধু সরকার বলেন, পূজোর ক’টা দিন খুব মজা করব। কলকাতার হিন্দু তীর্থস্থানগুলো দেখার ইচ্ছাও রয়েছে। আত্মীয় স্বজনদের বাড়ি একটু ঘুরে দেখবো।
নড়াইলের গোপাল কর্মকার বলেন, মাস্টারি করি। সময় পাইনে। এবার লম্বা ছুটি পেয়েছি তাই ভারত যাচ্ছি আত্মীয় স্বজনদের সাথে পূজোটা ভাগাভাগি করে করবো।
বরগুনার আমতলি এলাকার অলিউল ইসলাম বলেন, পূজোয় লম্বা ছুটি পেয়েছি। একটু ডাক্তার দেখাতে ভারত যাচ্ছি।
ফরিদপুর সদরের আব্দুর রাজ্জাক মেডিকেল ভিসায় ভারত যাচ্ছেন। তিনি বলেন, নিয়মিত চেকআপে ভারতে যাচ্ছি।
বেনাপোল স্থলবন্দরের সহকারি পরিচালক ফয়সাল আহসান সজীব জানান, পূর্বের ন্যায় ভারত সরকার বাংলাদেশী যাত্রীদের ভিসা প্রদানের ব্যবস্থা করলে বেনাপোল চেকপোস্ট দিয়ে ভারত ভ্রমণ অনেকটা বেড়ে যাবে। যাত্রী পারাপার বেশি হলে সরকারি রাজস্ব আদায় বেশি হবে এখান থেকে। পাশাপাশি দু‘দেশের চেকপোস্টসহ বিভিন্ন ব্যবসায়ীরা লাভবান হবেন। #







