সাইফুল ইসলাম, বাউফল, প্রতিনিধি:
পটুয়াখালীর বাউফলে শিক্ষকদের চলমান কর্মবিরতির কারণে উপজেলার বিভিন্ন বিদ্যালয়ে বার্ষিক পরীক্ষার দায়িত্ব পালন করছেন অভিভাবকরা!
গতকাল (২ ডিসেম্বর) সকালে বাউফল পৌরসভা ও বিভিন্ন ইউনিয়নের একাধিক বিদ্যালয় ঘুরে দেখা গেছে, শিক্ষকরা কর্মবিরতি পালন করছেন। আর অভিভাবকরা পরীক্ষার কক্ষে প্রশ্নপত্র বিতরণ, খাতা সরবরাহসহ পরিদর্শকের দায়িত্বই পালন করছেন অভিভাবকরা।
অভিভাবকরা অভিযোগ করেন, হঠাৎ কর্মবিরতিতে যাওয়ায় শিক্ষার্থীরা মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। পরীক্ষা নিয়ে অনিশ্চয়তা তৈরি হওয়ায় অনেকে আতঙ্কে ছিলেন। পরে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের আহ্বানে তারা নিজেরাই পরীক্ষার দায়িত্ব নিতে বাধ্য হন।
৬৮ নম্বর নাজিরপুর বোর্ড সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পরীক্ষার হলে দায়িত্ব পালনকারী জাকারিয়া বেগম নামে এক অভিভাবক বলেন,”আমি পরীক্ষার হলে শিক্ষকের দায়িত্ব পালন করছি। বছরের শেষে বার্ষিক পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। বাচ্চারা সারা বছর যা লেখাপড়া করে তারই মূল্যায়ন এই পরীক্ষা। শিক্ষকদের এমন আন্দোলন আমাদের বাচ্চাদের জন্য সমস্যার সৃষ্টি করছে। আমরা গার্ডিয়ানরা সারা বছর বাচ্চাদের নিয়ে যে কষ্ট করেছি তা নষ্ট হয়ে যেতে পারে। তাই বাধ্য হয়ে আমরা নিজেরাই শিক্ষকের দায়িত্ব পালন করছি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আরেক অভিভাবক বলেন,”শিক্ষকদের দাবি থাকতেই পারে, কিন্তু সন্তানতুল্য শিক্ষার্থীদের পরীক্ষা জিম্মি করা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। আমাদের বাচ্চারা সারা বছর লেখাপড়া করেছে বার্ষিক পরীক্ষার মাধ্যমে তার মূল্যায়ন হওয়া উচিত। তারা আন্দোলন করবে রাস্তায়, ক্লাসে কেন করবে?
৬৮ নম্বর নাজিরপুর বোর্ড সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক তসলিমা বেগম বলেন,”আমি গতকাল পরীক্ষা নিতে পারিনি। আজকে আমার উর্দ্ধতন কর্মকর্তা টিও স্যার এসে বলেছেন আজ থেকেই পরীক্ষা নিতে হবে। আমার সহকর্মীরা সারাদেশে চলমান কর্মবিরতির অংশ হিসেবে অবস্থান নিয়েছেন। টিও স্যার জানিয়েছেন, শিক্ষকরা সহযোগিতা না করলে স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তি বা অভিভাবকদের দিয়ে পরীক্ষা নিতে হবে।
এ বিষয়ে জানতে উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মো. আতিকুল ইসলামকে বারবার ফোন করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি।

