ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ও ঢাকা-৮ আসনের সম্ভাব্য স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য প্রার্থী শরিফ ওসমান হাদি গুরুতর আহত অবস্থায় এখনও শঙ্কামুক্ত নন। শুক্রবার (১২ ডিসেম্বর) রাতে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে এভারকেয়ার হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। সেখানে তিনি বর্তমানে আইসিইউতে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
গতকাল রাত ১১টার দিকে এভারকেয়ার হাসপাতালের সামনে ইনকিলাব মঞ্চের পক্ষ থেকে সংবাদ সম্মেলন করা হয়। এ সময় সংগঠনের সদস্য সচিব আব্দুল্লাহ আল জাবের বলেন, গুলিবিদ্ধ হাদির শারীরিক অবস্থা কিছুটা উন্নতি হলেও তিনি এখনো শঙ্কামুক্ত নন। তিনি আরও উল্লেখ করেন, আগামী ৭২ ঘণ্টা অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ থাকবে।
ওসমান হাদির ওপর হামলার ঘটনায় দোষীদের দ্রুত ধরতে ইনকিলাব মঞ্চ শনিবার রাত পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দিয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, অপরাধীদের শনাক্ত ও গ্রেপ্তারের কাজ চলছে, তবে এখনো পর্যন্ত কেউ গ্রেপ্তার হয়নি।
শনিবার সকালে পুলিশের আইজিপি বাহারুল আলম জানান, হাদি গুলিবিদ্ধ হওয়ার ঘটনায় র্যাব, পুলিশ, সিআইডি মিলিতভাবে অভিযান চালাচ্ছে। তিনি বলেন, “অপরাধীদের আমরা ধরব এবং আইনের আওতায় আনব। আমরা এই বিষয়ে সম্পূর্ণ সংকল্পবদ্ধ।”
চিকিৎসাধীন হাদির শারীরিক অবস্থার খোঁজ খবর নেওয়ার পর শুক্রবার রাতে এভারকেয়ার হাসপাতালের সামনে গণমাধ্যমকে ব্রিফ করেন ঢাকা মেডিকেলের নিউরো সার্জারি বিভাগের চিকিৎসক ডা. আব্দুল আহাদ। তিনি জানান, হাদির অর্গানগুলো মোটামুটি স্বাভাবিকভাবে কাজ করছে। তবে পরবর্তীতে অতিরিক্ত কোনো অপারেশনের প্রয়োজন হতে পারে।
শরিফ ওসমান হাদি ৩৩ বছর বয়সী, ঝালকাঠির নলছিটি উপজেলার হাড়িখালী গ্রামের মুন্সিবাড়ির সন্তান। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে রাষ্ট্রবিজ্ঞানে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি সম্পন্ন করার পর তিনি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করতেন। গত বছরের আগস্টে শেখ হাসিনা সরকার পতনের পর তিনি বাংলাদেশের রাজনীতিতে দ্রুত আলোচিত চরিত্র হয়ে ওঠেন।
শুক্রবার দুপুরে রাজধানীর বিজয়নগরে নির্বাচনী জনসংযোগ কার্যক্রমে অংশ নেয়ার সময় মোটরসাইকেল আরোহী দুজন দুর্বৃত্ত তাকে লক্ষ্য করে গুলি চালায়। গুলিবিদ্ধ অবস্থায় তিনি প্রথমে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হন এবং অস্ত্রোপচারের পর এভারকেয়ার হাসপাতালে লাইফ সাপোর্টে স্থানান্তর করা হয়।
হাদির উপর হামলার ঘটনা দেশব্যাপী উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে এবং তার দ্রুত আরোগ্য ও দোষীদের শাস্তির দাবিতে বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠন সরব রয়েছে।

