৭৯ বছর বয়সে হলিউডের প্রবীণ ও অস্কারজয়ী অভিনেত্রী ডায়ান কিটন ক্যালিফোর্নিয়ার নিজ বাসায় শেষনিশ্বাস ত্যাগ করেছেন। মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছে পিপল ম্যাগাজিন। তবে মৃত্যুর সঠিক কারণ এখনও প্রকাশ করা হয়নি।
ডায়ান কিটন প্রথম খ্যাতি পান ১৯৭০-এর দশকে ‘দ্য গডফাদার’ সিরিজে অভিনয় করে। এরপর ‘ফাদার অব দ্য ব্রাইড’, ‘ফার্স্ট ওয়াইভস ক্লাব’ এবং বিশেষভাবে ‘অ্যানি হল’-এর জন্য তিনি বিশ্বজুড়ে পরিচিত হন। ‘অ্যানি হল’-এর অভিনয়ের জন্য ১৯৭৮ সালে তিনি সেরা অভিনেত্রীর অস্কার পান।
উডি অ্যালেন পরিচালিত ‘অ্যানি হল’-এর মাধ্যমে রোমান্টিক কমেডিতে নতুন ধারা আনেন কিটন। তার অনন্য ফ্যাশন সেন্স—পুরুষদের পোশাক, চওড়া টুপি এবং নির্ভার হাসি—তাকে স্টাইল আইকনে পরিণত করেছিল।
৫ দশকেরও বেশি সময়ের ক্যারিয়ারে তিনি অভিনয় করেছেন ‘দ্য ফ্যামিলি স্টোন’, ‘বিকজ আই সেইড সো’, ‘ম্যানহাটন’, ‘স্লিপার’, ও ‘লাভ অ্যান্ড ডেথ’-এর মতো জনপ্রিয় ছবিতে। সর্বশেষ তাকে দেখা গেছে ২০২৪ সালের সিনেমা ‘সামার ক্যাম্প’-এ।
শুধু অভিনেত্রী নন, পরিচালক হিসেবেও কিটন ছিলেন প্রতিভাবান। ১৯৮৭ সালে তিনি নির্মাণ করেন তথ্যচিত্র ‘হেভেন’, এবং ১৯৯৫ সালের চলচ্চিত্র ‘আনস্ট্রাং হিরোস’ কান চলচ্চিত্র উৎসবে প্রদর্শিত হয়।
কিটনের মৃত্যুর পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে শোক প্রকাশ করেছেন হলিউডের অনেক তারকা। বেট মিডলার লিখেছেন, “অসাধারণ, মেধাবী, একেবারে মৌলিক ধারার অভিনেত্রী ডায়ান কিটন নেই আর।” বেন স্টিলার লিখেছেন, “ডায়ান কিটন চলচ্চিত্র ইতিহাসের অন্যতম সেরা অভিনেত্রী। স্টাইল, বুদ্ধিমত্তা, রসবোধ—সব মিলিয়ে অনন্য।”
ডায়ান কিটন ১৯৪৬ সালে লস অ্যাঞ্জেলেসে জন্মগ্রহণ করেন। চার ভাইবোনের মধ্যে তিনি সবার বড়। ব্যক্তিজীবনে তিনি কখনো বিয়ে করেননি, তবে দুই সন্তান দত্তক নিয়েছিলেন। আত্মজীবনী ‘দেন এগেইন’-এ তিনি লিখেছিলেন, “আমার প্রিয়জনেরা যখন খুশি থাকে, তখনই আমি সবচেয়ে সুখী।”
তীক্ষ্ণ বুদ্ধিমত্তা, স্বতন্ত্র ব্যক্তিত্ব এবং অনন্য ফ্যাশনধারার জন্য ডায়ান কিটন ছিলেন এক জীবন্ত কিংবদন্তি। তাঁর মৃত্যুতে বিশ্ব হারালো এমন একজন অভিনেত্রীকে, যিনি প্রতিটি চরিত্রে এনেছেন বুদ্ধি, হাস্যরস ও সত্যতার ছোঁয়া।