দেওয়ান মাসুকুর রহমান
নিজস্ব প্রতিবেদক
শ্রীমঙ্গল (মৌলভীবাজার), ২০ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ : মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক গবেষক, আরপি নিউজের সম্পাদক ও বিশিষ্ট কলামিস্ট কমরেড সৈয়দ আমিরুজ্জামান বলেছেন, “গণমাধ্যমকে বলা হয় রাষ্ট্রের চতুর্থ স্তম্ভ। অপর তিনটি স্তম্ভ হচ্ছে, আইনসভা, বিচার বিভাগ ও নির্বাহী বিভাগ। বোঝাই যাচ্ছে গণমাধ্যমের গুরুত্ব ও অবস্থান কোথায়! জনস্বার্থ অভিমুখী মুক্ত গণমাধ্যম ছাড়া একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র পূর্ণতা পায় না।
সরকার ও প্রশাসনের অসঙ্গতি ধরিয়ে দেওয়াসহ জনগণের সংগ্রামের সহযোদ্ধা হিসেবে গণমাধ্যমকে অতন্দ্র প্রহরীর ভূমিকা পালন করতে হয়।
আসলে গণমাধ্যম হচ্ছে জনগণের সংগ্রামের সহযোদ্ধা, নীতি-আদর্শের যৌথ প্রচারক ও যৌথ আন্দোলনকারী, জনস্বার্থ ও রাষ্ট্রের পাহারাদার। গণমাধ্যমই সঠিক পথ বাতলে দেয় যাতে সরকার, প্রশাসন ও জনগণ সঠিক পথে পরিচালিত হতে পারে। গণমাধ্যম সরকার, প্রশাসন ও জনগণের প্রতিপক্ষ নয়; তবে জনস্বার্থে নজরদারী করবে। কাজেই বলিষ্ট ও শক্তিশালী গণমাধ্যম ছাড়া জনস্বার্থের রাষ্ট্রব্যবস্থা শক্ত ভিত্তির ওপর দাঁড়াতে পারে না।
রাষ্ট্রের অন্য তিনটি স্তম্ভ নড়বড়ে হয়ে গেলেও চতুর্থ স্তম্ভ শক্ত থাকলে রাষ্ট্রকে গণমুখী রাখা যায়। আর চতুর্থ স্তম্ভ নড়বড়ে হলে রাষ্ট্রব্যবস্থা গণবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে, রাষ্ট্র বিপদগ্রস্ত হয়।
আমি ব্যক্তিগতভাবে খুব আশাবাদী মানুষ। আঁধার কেটে নিশ্চয়ই আলো আসবে। কিন্তু সেটা কি প্রকৃতির নিয়মে হবে? কাউকে না কাউকে ভূমিকা পালন করতে হয়।
সাংবাদিকতায় ঝুঁকি থাকবেই। সজাগ ও সচেতন থাকলে সৎ ও নিষ্ঠাবান সাংবাদিকরা হারিয়ে যাবেনা। সাংবাদিকতার ডিকশনারি থেকে সততা ও পেশাদারিত্ব শব্দ দুটি কখনই বিলীন হবে না। সেখানে অসৎ আর হলুদ সাংবাদিকতার স্থান নেই।”
দেশের প্রথম সারির দৈনিক ‘যুগান্তর’ পত্রিকা’র রজতজয়ন্তী উৎসব ও ২৬ বছরে পদার্পণ উপলক্ষে শ্রীমঙ্গলে আয়োজিত স্বজন সমাবেশে অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
বুধবার (১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৫) রাত সাড়ে ৮টায় শ্রীমঙ্গল প্রেসক্লাবে এ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। শুরুতে কোরআন তেলাওয়াত করেন সাংবাদিকপুত্র সৈয়দ হোসাইন আইয়ান।
শ্রীমঙ্গল প্রেসক্লাবের যুগ্ম সম্পাদক ও দৈনিক যুগান্তর পত্রিকার প্রতিনিধি সৈয়দ আবু জাফর সালাউদ্দিনের সঞ্চালনায় আয়োজিত এ সমাবেশে সম্মানিত অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ ইউসুফ, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সদ্যবদলি হওয়া স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. সাজ্জাদ হোসেন চৌধুরী।
এছাড়াও অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক গবেষক, সাপ্তাহিক নতুন কথা’র বিশেষ প্রতিনিধি, আরপি নিউজের সম্পাদক ও বিশিষ্ট কলামিস্ট কমরেড সৈয়দ আমিরুজ্জামান, শ্রীমঙ্গল প্রেসক্লাবের সাবেক সহসভাপতি কাওছার ইকবাল, শ্রীমঙ্গল প্রেসক্লাবের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আ ফ ম আব্দুল হাই ডন, শ্রীমঙ্গল প্রেসক্লাবের দপ্তর সম্পাদক ও আনন্দ বাজারের প্রতিনিধি এম. মুসলিম চৌধুরী, শ্রীমঙ্গল প্রেসক্লাবের কোষাধ্যক্ষ ও দৈনিক খোলা কাগজ পত্রিকার প্রতিনিধি এহসান বিন মোজাহির, শ্রীমঙ্গল প্রেসক্লাবের কার্যকরী কমিটির সদস্য ও দৈনিক আমাদের সময় পত্রিকার প্রতিনিধি আবুজার রহমান বাবলা, দৈনিক কালের কন্ঠের মৌলভীবাজার জেলা প্রতিনিধি মো. সাইফুল ইসলাম, শ্রীমঙ্গল প্রেসক্লাবের সাবেক যুগ্ম সম্পাদক ও দৈনিক নয়া দিগন্তের প্রতিনিধি এম এ রকিব, দৈনিক ইনকিলাবের শ্রীমঙ্গল প্রতিনিধি আনোয়ার হোসেন জসিম, দৈনিক জবাবদিহি পত্রিকার শ্রীমঙ্গল প্রতিনিধি মো. শামসুল ইসলাম শামীম, দৈনিক সিলেট বাণী পত্রিকা’র প্রতিনিধি মিজানুর রহমান আলম, শ্রীমঙ্গল প্রেসক্লাবের সাবেক কোষাধ্যক্ষ ও দৈনিক ইত্তেফাক পত্রিকার প্রতিনিধি সৈয়দ ছায়েদ আহমেদ, দৈনিক দিনকাল পত্রিকার প্রতিনিধি রুবেল আহমদ, দৈনিক ভোরের ডাক পত্রিকার প্রতিনিধি আমজাদ হোসেন বাচ্চু, নতুন দিনের প্রতিনিধি অরবিন্দ দেব, সাংবাদিক দেওয়ান মাসুকুর রহমান, সাংবাদিক বাপ্পী দে, রূপালী বাংলাদেশ পত্রিকার প্রতিনিধি কাওছার আহমদ, বর্তমানের ইমরান হোসেন ও এনজিও কর্মী এখলাছুর রহমানসহ বিভিন্ন মিডিয়ার গণমাধ্যমকর্মীবৃন্দ।
দৈনিক যুগান্তরের প্রতিনিধি ও শ্রীমঙ্গল প্রেসক্লাবের যুগ্ম সম্পাদক সৈয়দ সালাউদ্দিনের সঞ্চালনায় আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে বক্তাগণ আরও বলেন, দুর্নীতির বিরুদ্ধে অনুসন্ধানী ও বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ প্রকাশ করে যুগান্তর এগিয়ে গিয়েছে বহুদূর।
বক্তাগণ যুগান্তরের এত দূর এগিয়ে যাওয়া এর কৃতিত্বের নায়ক দৈনিক যুগান্তর পত্রিকার প্রতিষ্ঠাতা প্রকাশক মরহুম নুরুল ইসলাম বাবুলকে শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করেন।
আপোষহীন সংবাদ প্রকাশে ও আলাদা বৈশিষ্ট্যের কারণে যুগান্তর পাঠকের মনে আলাদা স্থান দখল করে রয়েছে বলে জানান।
পরে কেক কাটা ও অতিথিদের আপ্যায়নের মধ্যদিয়ে অনুষ্ঠানটি সমাপ্ত হয়।
উল্লেখ্য যে, ২০০০ সালের ১লা ফেব্রুয়ারি দৈনিক যুগান্তর পত্রিকা প্রতিষ্ঠা লাভ করে।