লিমন মিয়া,সরিষাবাড়ী :
জামালপুরের সরিষাবাড়ীতে এনজিও কর্মকর্তাকে হাত-পা ও চোখ বেঁধে অমানবিক নির্যাতন এবং ২০ লাখ টাকা চাঁদা দাবির অভিযোগে উপজেলা যুব মহিলা লীগের সভাপতি অনুপমা সূত্রধর ও তার ছেলে প্রিন্স আদিত্য সরকারকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
শনিবার (৬ সেপ্টেম্বর) বিকেলে তাদের বিরুদ্ধে মামলা দায়েরের পর আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে পাঠানো হয়।
আটকরা হলেন—সরিষাবাড়ী উপজেলা যুব মহিলা লীগের সভাপতি ও পৌর এলাকার বীর ধানাটা গ্রামের প্রীতম চন্দ্র সরকার হিরণের স্ত্রী অনুপমা সূত্রধর এবং তার ছেলে প্রিন্স আদিত্য সরকার।
পুলিশ ও মামলার সূত্রে জানা যায়, চলতি মাসের ৪ সেপ্টেম্বর উপজেলা ক্ষুদ্র কৃষক উন্নয়ন ফাউন্ডেশন থেকে ২ লাখ টাকা ঋণ নেন অনুপমা সূত্রধর। পরদিন সকালে ওই এনজিও কর্মকর্তাকে (ম্যানেজার) রনজিত চন্দ্র বর্মনকে নিজ বাড়িতে ডেকে নেন তিনি। পরে পূর্বপরিকল্পিতভাবে অনুপমা, তার ছেলে প্রিন্স আদিত্য, স্বামী প্রীতম চন্দ্র সরকার হিরণসহ আরও কয়েকজন তাকে ঘরে আটক করে হাত-পা ও চোখ বেঁধে লোহার রড দিয়ে পিটিয়ে রক্তাক্ত জখম করে।
এরপর তারা এনজিও কর্মকর্তার কাছে ২০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে। টাকা দিতে অস্বীকার করলে উলঙ্গ করে ভিডিও ধারণ এবং পায়ুপথে মরিচের গুঁড়ো ঢুকিয়ে ভয়াবহ নির্যাতন চালানো হয়। জীবন বাঁচাতে ভুক্তভোগী স্ত্রীকে ফোন দিয়ে ব্যাংকের কয়েকটি চেক বইয়ের পাতা এনে দিতে বলেন। পরে সেই চেক বইয়ে জোরপূর্বক তার স্বাক্ষর নেন অভিযুক্তরা।
এদিকে স্বামী নিখোঁজ হওয়ায় ভুক্তভোগীর স্ত্রী থানায় সাধারণ ডায়েরি করেন। পুলিশ প্রযুক্তিগত সহায়তায় লোকেশন শনাক্ত করে এএসআই শাহাদাৎ হোসেনের নেতৃত্বে অভিযান চালিয়ে এনজিও কর্মকর্তাকে উদ্ধার করে এবং ঘটনাস্থল থেকে অনুপমা সূত্রধর ও তার ছেলে প্রিন্স আদিত্য সরকারকে গ্রেপ্তার করে।
সরিষাবাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রাশেদুল হাসান জানান, এনজিও কর্মকর্তাকে বাসায় ডেকে নিয়ে অমানবিক নির্যাতনের মাধ্যমে ২০ লাখ টাকা দাবি করা হয়। এ ঘটনায় জড়িত দুই আসামিকে গ্রেপ্তার করে আদালতে পাঠানো হয়েছে। বাকি আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।