জাতিসংঘের পরমাণু পর্যবেক্ষণ সংস্থার (আইএইএ) প্রধান রাফায়েল গ্রোসি সতর্ক করে বলেছেন, তেহরানের সঙ্গে কূটনৈতিক প্রচেষ্টা ব্যর্থ হলে পুনরায় সামরিক পদক্ষেপ নেওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। এর প্রতিক্রিয়ায় ইরান জানিয়েছে, যেকোনো নতুন আক্রমণ কেবল “আরেকটি ব্যর্থতা” ডেকে আনবে।
চলতি বছরের জুনের মাঝামাঝি ইসরায়েল ইরানের বিরুদ্ধে নজিরবিহীন বিমান হামলা চালায়। এর জবাবে ইরান ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলা করে। টানা ১২ দিনের সংঘাতে ইসরায়েল ইরানের সামরিক ও পরমাণু স্থাপনাসহ বেশ কিছু আবাসিক এলাকায় ব্যাপক হামলা চালায়। যুক্তরাষ্ট্রও এতে অংশ নেয়। এ পরিস্থিতিতে এপ্রিল থেকে চলমান তেহরান-ওয়াশিংটন পরমাণু আলোচনাও স্থবির হয়ে পড়ে।
২৪ জুন থেকে ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যে যুদ্ধবিরতি কার্যকর রয়েছে।
সুইস দৈনিক লে টেম্পস-এর সঙ্গে এক সাক্ষাৎকারে আইএইএ মহাপরিচালক গ্রোসি বলেন, “যদি কূটনীতি ব্যর্থ হয়, তবে শক্তি প্রয়োগের আশঙ্কা উড়িয়ে দেওয়া যায় না।”
এর জবাবে ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাগচি বৃহস্পতিবার এক ভিডিও বার্তায় বলেন, “এই বক্তব্য হুমকি নাকি উদ্বেগ, তা পরিষ্কার নয়। তবে যারা এমন হুমকি দিচ্ছেন, তারা বুঝতে হবে—অতীতের ব্যর্থ অভিজ্ঞতা পুনরাবৃত্তি করলে তার ফলও ব্যর্থতাই হবে।”
১২ দিনের যুদ্ধের পর ইরান আইএইএ-র সঙ্গে সহযোগিতা স্থগিত করে, অভিযোগ তোলে যে সংস্থাটি ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্রের হামলার যথাযথ নিন্দা জানাতে ব্যর্থ হয়েছে। যদিও সেপ্টেম্বরে উভয় পক্ষ নতুন সহযোগিতা কাঠামোতে সম্মত হয়, পরে ব্রিটেন, ফ্রান্স ও জার্মানি জাতিসংঘের নিষেধাজ্ঞা পুনর্বহাল করায় তেহরান সেই চুক্তি বাতিল ঘোষণা করে।
গ্রোসি বলেন, যুদ্ধের পর থেকে ইরান পরিদর্শনের ওপর সীমা আরোপ করেছে এবং নিরাপত্তার কারণে খুব সীমিতভাবে পরিদর্শকদের কাজ করার অনুমতি দিচ্ছে।
আইএইএ জানায়, ইরান বর্তমানে ৬০ শতাংশ পর্যন্ত ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ করেছে—যা পরমাণু বোমা তৈরির জন্য প্রয়োজনীয় ৯০ শতাংশের কাছাকাছি।
গ্রোসি আরও বলেন, “যদি ইরান পরবর্তী ধাপে এগোয়, তবে তাদের হাতে প্রায় ১০টি পরমাণু বোমা তৈরির মতো উপকরণ থাকবে। তবে এখন পর্যন্ত তেহরানের পরমাণু অস্ত্র তৈরির কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি।”







