জাতীয় ঐকমত্য কমিশন বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামীর সঙ্গে অনানুষ্ঠানিক বৈঠক করেছে। রবিবার (১২ অক্টোবর) সকালে সংসদ ভবনে কমিশনের কার্যালয়ে বিএনপির সঙ্গে এবং বিকেলে জামায়াতের সঙ্গে পৃথক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
বৈঠকে জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়নের বিষয়ে আলোচনায় অগ্রগতি হলেও দুটি দল তাদের পূর্বের অবস্থানে অনড় রয়েছে। বিএনপি এখনো নির্বাচনের দিন গণভোট চায়, আর জামায়াতের দাবি নির্বাচনের আগে গণভোট আয়োজনের।
কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ বলেন, “যে কোনো আলোচনায় অগ্রগতি হয়। গতকালের আলোচনায়ও তা হয়েছে। সবাই মিলে জুলাই সনদ সইয়ের দিকে এগোচ্ছি।” তবে কী অগ্রগতি হয়েছে, তা তিনি স্পষ্ট করেননি।
কমিশন সূত্র জানিয়েছে, রাজনৈতিক দলগুলো আগের তুলনায় কিছুটা নমনীয় হলেও বিএনপি ও জামায়াত নিজ নিজ অবস্থানে রয়েছে। বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ বৈঠকের বিষয়টি নাকচ করে বলেন, “আমি শুধু একটি বই আনতে গিয়েছিলাম, সেখানে কিছু কথা হয়েছে।”
অন্যদিকে, বিকেলে কমিশনের সঙ্গে বৈঠক করেন জামায়াতের নায়েবে আমির ডা. সৈয়দ আবদুল্লাহ মো. তাহের, সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল হামিদুর রহমান আযাদ এবং মহানগর উত্তরের মজলিসে শূরা সদস্য অ্যাডভোকেট শিশির মনির।
জামায়াতের পক্ষ থেকে নির্বাচনের আগে গণভোট আয়োজনের পক্ষে নানা প্রস্তাব দেওয়া হয়। তাদের যুক্তি— আগে গণভোট হলে পিআর পদ্ধতিতে উচ্চকক্ষ গঠনের বিষয়টি নির্বাচনের আগে নির্ধারিত হবে এবং অনিশ্চয়তা কমবে।
অন্যদিকে, বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হয়, নির্বাচনের দিন গণভোট করা হলে প্রশাসনিক ব্যয় কমবে এবং ভোটার উপস্থিতি নিশ্চিত করা সহজ হবে। আগে গণভোট আয়োজন করা হলে ভোটার উপস্থিতি কমে যাওয়ার ঝুঁকি থাকবে, যা ফলাফলের বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন তুলতে পারে।
কমিশন সূত্র জানিয়েছে, জুলাই সনদের ৮৫টি সংস্কার প্রস্তাব প্যাকেজ আকারে গণভোটে তোলার প্রস্তাব আলোচনায় এসেছে। গণভোটের আইন সংশোধন, বা সংবিধানসমতুল্য আদেশ জারি— কোন প্রক্রিয়ায় গণভোট হবে, তা এখনো নির্ধারিত হয়নি।
সরকার আগামী ১৭ অক্টোবর সংসদের দক্ষিণ প্লাজায় জুলাই সনদ সই অনুষ্ঠান আয়োজনের প্রস্তুতি নিচ্ছে। সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী রোববার অনুষ্ঠানের প্রস্তুতি পরিদর্শন করে বলেন, “সংস্কার জুলাই গণঅভ্যুত্থানের অন্যতম আকাঙ্ক্ষা। এর প্রতিফলন ঘটবে সনদে। অনুষ্ঠানটি স্মরণীয় হয়ে থাকবে।”