ময়মনসিংহ এখন দেশের সর্বোচ্চ ভূমিকম্প ঝুঁকিপূর্ণ এলাকাতে পরিণত হয়েছে। হিমালয়ের পাদদেশে সঞ্চিত টেকটনিক চাপ এবং ভূতাত্ত্বিক তথ্য বিশ্লেষণে জানা গেছে, এই অঞ্চলে বড় মাত্রার ভূমিকম্প যে কোনো সময় ঘটতে পারে।
বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, গতকাল নরসিংদীর মাধবদীতে রিখটার স্কেলে ৫.৭ মাত্রার ভূমিকম্প অনুভূত হয়। কম্পন ময়মনসিংহ, ঢাকা, গাজীপুর, টাঙ্গাইল, কিশোরগঞ্জ, চাঁদপুর, মাদারীপুর, নারায়ণগঞ্জসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় ধরা পড়ে। ময়মনসিংহ নগরীর বাসিন্দারা কয়েক সেকেন্ডের কম্পনেই আতঙ্কে রাস্তায় বের হয়ে এসেছেন।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ডাউকি ফল্ট ও অন্যান্য সক্রিয় ফল্ট অঞ্চলে সঞ্চিত শক্তি যে কোনো সময় ৭–৮ মাত্রার ভয়াবহ ভূমিকম্পে রূপ নিতে পারে। অতীতে ১৮৯৭ সালের ৮.৭ মাত্রার ভূমিকম্প এবং ১৭০০ শতকের কম্পন এই অঞ্চলে বড় ক্ষতি করেছে।
বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. মুরাদ আহমেদ ফারুক জানান, ময়মনসিংহ শহরের অধিকাংশ বহুতল ভবন জাতীয় বিল্ডিং কোড মেনে নির্মাণ হয়নি। বড় ভূমিকম্পে শহরের ভবন ও অবকাঠামোর ব্যাপক ক্ষতি হতে পারে।
সরকারি কর্মকর্তারা জানিয়েছে, জেলা প্রশাসন এবং ফায়ার সার্ভিস ভূমিকম্প মোকাবিলায় সচেতনতা বৃদ্ধি, ভবন নিরাপত্তা, জরুরি পরিকল্পনা ও মহড়া চালানোর উদ্যোগ নিয়েছে। তবে বিশেষজ্ঞরা মনে করান, কেবল প্রযুক্তি নয়, সচেতনতা, প্রশিক্ষণ ও পরিবার পর্যায়ে প্রস্তুতি অপরিহার্য।
ময়মনসিংহসহ ঝুঁকিপূর্ণ এলাকার মানুষকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে—ভূমিকম্পের সময় নিরাপদ স্থানে থাকা, অগ্নি ও বিদ্যুৎ লাইনের সতর্ক ব্যবহার, এবং উদ্ধারকারীদের সহায়তায় সহযোগিতা করা।

