মোঃ নাছিম কবির রনি, কালিয়াকৈর প্রতিনিধি:
সোমবারের সকালটা ছিল অন্য দিনের মতোই। কিন্তু সূর্য ওঠার আগেই মৌচাকের সুরিচালা এলাকায় জেনারেল ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেডের ফটকের সামনে জমে যায় উত্তপ্ত ভিড়। মুখে স্লোগান, হাতে প্ল্যাকার্ড “বেতন দাও, বাঁচার সুযোগ দাও।”
তিন মাসের বেতন, আর এক বছরের ওভারটাইম, এটাই ছিল দাবির মূল কথা। তবে এর পেছনে জমে থাকা ক্ষোভের আগুন যেন অনেক পুরনো।
কারখানার ভেতর সকাল ৯টা থেকেই শুরু হয় কর্মবিরতি। মেশিনের শব্দ থেমে যায়, তার জায়গায় ভেসে আসে প্রতিবাদের সুর।
পুলিশ আসে, তবু কথা হয় না।
শিল্প পুলিশ ও থানা পুলিশের উপস্থিতিতেও শ্রমিকদের মুখ বন্ধ হয়নি। তারা জানায়, কথা আর আশ্বাসে পেট ভরে না, বাজারে চাল-ডাল কেনা যায় না।
“তিন মাস ধরে বেতন পাইনি, দোকানদার বাকি দিচ্ছে না, বাড়িওয়ালা বাসা ছাড়তে বলছে,” বললেন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক নারী শ্রমিক, চোখে কান্না আর ক্ষোভ মিশে।
আরেকজন যোগ করলেন, “স্টাফদেরও ৯ মাসের বেতন বকেয়া। এত বড় কোম্পানি হয়ে কেন এই অবস্থা!”
কারখানার অ্যাডমিন অফিসার মোশাররফ হোসেন অবশ্য আশ্বাসের সুরেই বললেন, “২২ অক্টোবরের মধ্যেই সব বকেয়া পরিশোধ হবে। ফান্ডে এখন টাকার ঘাটতি আছে।”
কিন্তু শ্রমিকদের উত্তরে হতাশার সুর— “২২ তারিখে পেট খালি থাকবে, আজ কী খাব?”
কাশিমপুর শিল্প পুলিশের ওসি আকবর হোসেন জানান, “সকাল থেকে শ্রমিকরা কারখানার ভেতরে বিক্ষোভ করছেন। আমরা বারবার তাদের সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করছি, কিন্তু তারা আপাতত শুনতে রাজি নয়।”
এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত ফার্মার ফটকের সামনে টানটান উত্তেজনা বিরাজ করছিল।
মেশিনের নীরবতা যেন বলছে— যেখানে বেতন থেমে যায়, সেখানেই কাজ থেমে যায়।