শাওন বেপারী, শরীয়তপুর প্রতিনিধি :
মেডিকেল টেকনোলজিস্ট ও ফার্মাসিস্টদের ১০ম গ্রেড বাস্তবায়নের দাবিতে জাজিরা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে দু’দিনব্যাপী কর্মসূচি পালন করা হয়েছে।
বুধবার (৩ ডিসেম্বর) সকালে অর্ধদিবস এবং ৪ ডিসেম্বর বৃহস্পতিবার পূর্ণদিবস কর্মবিরতি পালন করবেন তারা।
ঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী বুধবার সকাল ৮টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত অর্ধদিবস কর্মবিরতি এবং বৃহস্পতিবার সম্পূর্ণ কর্মদিবস কমপ্লিট শাট-ডাউন অব্যাহত থাকবে। কর্মসূচিতে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স জাজিরায় কর্মরত মেডিকেল টেকনোলজিস্ট, ফার্মাসিস্টসহ সংশ্লিষ্ট পেশাজীবীরা অংশ নেন।
মানববন্ধন ও কর্মবিরতিতে বক্তারা জানান, দীর্ঘদিন ধরে ১০ম গ্রেড বাস্তবায়নের দাবি জানিয়ে আসলেও তা এখনও কার্যকর হয়নি। তাদের মতে, রোগ নির্ণয়, চিকিৎসা কার্যক্রম ও দৈনন্দিন স্বাস্থ্যসেবায় মেডিকেল টেকনোলজিস্ট ও ফার্মাসিস্টদের ভূমিকা অপরিসীম, কিন্তু তাদের প্রাপ্য গ্রেড দীর্ঘদিন ধরে উপেক্ষিত।
মেডিকেল টেকনোলজিস্ট ও ফার্মাসিস্ট ১০ম গ্রেড বাস্তবায়ন পরিষদের নেতৃবৃন্দ জানান, দাবি বাস্তবায়ন না হওয়া পর্যন্ত তাদের আন্দোলন চলমান থাকবে। তারা দ্রুত সময়ের মধ্যে সরকারের পক্ষ থেকে যথাযথ সিদ্ধান্ত এবং গঠনমূলক উদ্যোগ আশা করেন।
উল্লেখ্য, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কর্মবিরতির কারণে বিভিন্ন পরীক্ষাগার ও কিছু সেবা কার্যক্রমে সাময়িক ভোগান্তির সৃষ্টি হয়, তবে জরুরি চিকিৎসা সেবা অব্যাহত ছিল।
মেডিকেল টেকনোলজিস্ট ও ফার্মাসিস্টরা জানান সেবাকে আরও গতিশীল করতে এবং পেশাগত মর্যাদা নিশ্চিত করতে ১০ম গ্রেড বাস্তবায়ন এখন সময়ের দাবি।
ফার্মাসিস্ট মোঃ আসলাম মিয়া বলেন, দীর্ঘদিন ধরে আমরা আমাদের ন্যায্য প্রাপ্য ১০ম গ্রেড বাস্তবায়নের দাবি জানিয়ে আসছি। স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থায় ফার্মাসিস্টদের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ সঠিক ওষুধ ব্যবস্থাপনা, রোগীর নিরাপত্তা নিশ্চিত করা থেকে শুরু করে হাসপাতালের সামগ্রিক চিকিৎসা কার্যক্রমে আমরা প্রতিনিয়ত দায়িত্ব পালন করি। কিন্তু দুঃখজনকভাবে এখনো আমাদের দাবি পূরণ হয়নি। আমরা আশা করি সরকার দ্রুত যথাযথ সিদ্ধান্ত নেবে এবং আমাদের পেশাগত মর্যাদা নিশ্চিত করবে।
মোঃ হুমায়ুন কবির নামের এক মেডিকেল টেকনোলজিস্ট (ল্যাব) বলেন, রোগ নির্ণয়ের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ধাপ হলো সঠিক ল্যাবরেটরি পরীক্ষার ফলাফল। দেশের প্রতিটি হাসপাতালে চিকিৎসকরা যে সিদ্ধান্ত নেন, তার অধিকাংশই নির্ভর করে মেডিকেল টেকনোলজিস্টদের রিপোর্টের ওপর। অথচ আমরা বহু বছর ধরে কাঙ্ক্ষিত ১০ম গ্রেড থেকে বঞ্চিত। ন্যায্য প্রাপ্য না পেয়ে আমরা মানসিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছি। আমাদের একটাই দাবি—জনস্বাস্থ্য সেবাকে আরও গতিশীল ও কার্যকর করতে দ্রুত ১০ম গ্রেড বাস্তবায়ন করা হোক।
ফাতেমা আক্তার লাইলী বলেন, আমরা মাঠপর্যায়ে সবচেয়ে বেশি ঝুঁকি নিয়ে কাজ করি—রোগীর পরীক্ষা, স্যাম্পল সংগ্রহ, সংক্রমণের ঝুঁকি মোকাবিলা—সবকিছুই আমরা পেশাদারিত্বের সঙ্গে করি। কিন্তু দীর্ঘদিন ধরে আমাদের পদের মর্যাদা ও প্রাপ্য গ্রেড বাস্তবায়ন না হওয়ায় আমরা হতাশ। সরকারের কাছে আমাদের বিনীত অনুরোধ, দ্রুত ১০ম গ্রেড বাস্তবায়ন করে আমাদের অধিকার নিশ্চিত করা হোক। এতে আমরা আরও উৎসাহ নিয়ে জনগণের সেবা করতে পারব।

