সত্যজিৎ দাস, মৌলভীবাজার প্রতিনিধি
মৌলভীবাজারের বড়লেখা উপজেলার সীমান্ত এলাকা দিয়ে গত দু’দিনে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ) শতাধিক নারী, পুরুষ ও শিশুকে জোরপূর্বক বাংলাদেশে ঠেলে দিয়েছে (পুশ-ইন)। এসব অনুপ্রবেশকারীর মধ্যে ৫৫ জনকে স্থানীয়রা আটক করে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) কাছে হস্তান্তর করেছেন।
উপজেলার উত্তর ও দক্ষিণ শাহবাজপুর ইউনিয়নের সীমান্ত পয়েন্টে এই অনুপ্রবেশের ঘটনা ঘটে। বুধবার (৭ মে) ভোরে নিউ পাল্লাথল বিজিবি ক্যাম্পের আওতাধীন সীমান্ত দিয়ে প্রথমে ৩২ জন এবং বৃহস্পতিবার (৮ মে) সকালে বোবারথল সীমান্ত দিয়ে আরও ২৩ জনকে বাংলাদেশে ঠেলে দেওয়া হয় বলে স্থানীয়রা ও বিজিবি সূত্র নিশ্চিত করেছে।
এ ঘটনায় সীমান্তবর্তী এলাকায় আতঙ্ক বিরাজ করছে। স্থানীয় চা-বাগানের শ্রমিকরা অপরিচিতদের গতিবিধি সন্দেহজনক মনে করে তাদের আটক করে বিজিবির কাছে হস্তান্তর করেন। আটক ব্যক্তিরা জানান, তারা দীর্ঘদিন ধরে ভারতের বিভিন্ন এলাকায় বসবাস করছিলেন। কিন্তু হঠাৎ করে ভারতীয় পুলিশ ও বিএসএফ তাদের গ্রেপ্তার করে জোরপূর্বক সীমান্ত পাড় করিয়ে বাংলাদেশে পাঠিয়ে দেয়।
উত্তর শাহবাজপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান রফিক উদ্দিন আহমদ বলেন, “গত দুই দিনে ৫৫ জন অনুপ্রবেশকারীকে বিজিবির কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। তারা সবাই বাংলাভাষী। বর্তমানে বিজিবি তাদের নাগরিকত্ব ও পরিচয় যাচাই করছে।”
বিজিবি-৫২ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্নেল মেহেদী হাসান (পিপিএম) বলেন, “সীমান্ত দিয়ে অনুপ্রবেশ ঠেকাতে নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। বসানো হয়েছে অতিরিক্ত চেকপোস্ট। আটক ব্যক্তিদের যাচাই-বাছাই শেষে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
এই ঘটনার পর সীমান্ত অঞ্চলের সাধারণ মানুষের মধ্যে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। স্থানীয়ভাবে প্রশ্ন উঠেছে—এসব অনুপ্রবেশকারীর প্রকৃত পরিচয় কী, এবং তারা কোনো অসৎ উদ্দেশ্যে পাঠানো হয়েছে কি না। নিরাপত্তা বিশ্লেষকরা বলছেন, এ ধরনের পুশ-ইন ঘটনা দুই দেশের কূটনৈতিক সম্পর্ক এবং সীমান্ত নিরাপত্তার জন্য উদ্বেগজনক।