বাগেরহাটে তিনজন শ্রীলঙ্কান নাগরিককে জিম্মি করে মুক্তিপণ দাবির ঘটনায় রীতিমতো চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। এই ঘটনার মূল হোতা হিসেবে অভিযুক্ত হয়েছেন মোল্লাহাট উপজেলার আটজুড়ি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি কাজী এমদাদ হোসেন। বুধবার দিবাগত রাতে যৌথ বাহিনী অভিযান চালিয়ে দক্ষিণ আমবাড়ি গ্রামের তার বাড়ি থেকে জিম্মি তিনজন শ্রীলঙ্কান নাগরিককে উদ্ধার করে। এ সময় চারজন অপহরণকারীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
জিম্মি হওয়া শ্রীলঙ্কান নাগরিকরা হলেন:
- মালাভি পাথিরানা
- পাথিরানা
- থুপ্পি মুদিইয়ানসেল্যাগ নীল
গ্রেপ্তারকৃত অপহরণকারীরা:
- কাজী এমদাদ হোসেন (৫২) – ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি
- শহিদুল শেখ (২৪) – আমন্ত্রণ জানানো ও পরিকল্পনার মূল ভূমিকা
- শামসুল আলম (৪৫)
- জনি শেখ (৩৮)
বাগেরহাটের পুলিশ সুপার মো. তৌহিদুল আরিফ জানান, অভিযুক্ত শহিদুল শেখ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শ্রীলঙ্কান নাগরিকদের সঙ্গে পরিচয় গড়ে তোলে এবং ব্যবসার প্রলোভন দেখিয়ে বাংলাদেশে আমন্ত্রণ জানায়। ২২ এপ্রিল ঢাকায় পৌঁছানোর পর প্রথমে তাদের একটি হোটেলে রাখা হয় এবং পরদিন মাইক্রোবাসে করে নিয়ে যাওয়া হয় কাজী এমদাদ হোসেনের বাড়িতে, যেখানে তাদের জিম্মি করে রাখা হয় এবং পরিবারের কাছ থেকে মুক্তিপণ দাবি করা হয়।
এই ঘটনা জানাজানি হলে শ্রীলঙ্কার পরিবার বিষয়টি জানায় তাদের সরকারের মাধ্যমে ঢাকাস্থ হাইকমিশনকে। এরপর বিষয়টি বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নজরে আসে। মোবাইল ফোন ট্র্যাকিং করে অভিযান চালিয়ে যৌথ বাহিনী বুধবার রাত সাড়ে ১২টার দিকে শ্রীলঙ্কান নাগরিকদের উদ্ধার করে এবং অভিযুক্তদের গ্রেপ্তার করে।
পুলিশ সুপার জানান, অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এই ঘটনা শুধু বাংলাদেশের জন্য নয়, আন্তর্জাতিকভাবেও কূটনৈতিক সংবেদনশীলতা তৈরি করেছে, কারণ বিদেশি নাগরিকদের এমন একটি অপরাধচক্রের কবলে পড়া আন্তর্জাতিক নিরাপত্তা প্রশ্নের জন্ম দেয়।
এটি অত্যন্ত লজ্জাজনক একটি ঘটনা যেখানে রাজনীতিক পরিচয়ে অপরাধী চক্রের সদস্যরা সরাসরি জড়িত ছিল। সমাজ ও রাজনৈতিক অঙ্গনের জন্য এটি একটি অশনিসংকেত, বলছেন বিশ্লেষকেরা।