উত্তর প্রদেশের বাগপতে পারিবারিক বিরোধের জেরে এক ব্যক্তি নিজের বাবাকে নির্মমভাবে হত্যা করেছেন। পুলিশ জানায়, অভিযুক্ত ভেদপাল তার বাবা ঈশ্বরের গলা কেটে নির্মমভাবে হত্যা করেন এবং পরে তার মৃতদেহ বনের ভেতর ফেলে দেন।
পুলিশের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, পারিবারিক কলহের কারণে এই হত্যাকাণ্ড ঘটে। জিজ্ঞাসাবাদে ভেদপাল জানিয়েছেন, তিনি দীর্ঘদিন ধরে সন্দেহ করছিলেন যে তার বাবা ঈশ্বরের সঙ্গে তার স্ত্রী অর্থাৎ নিজের পুত্রবধূর অবৈধ সম্পর্ক রয়েছে। এই সন্দেহ থেকেই তিনি তার বাবাকে হত্যার পরিকল্পনা করেন।
তদন্ত কর্মকর্তারা জানান, ঈশ্বর একজন শ্রমিক ছিলেন এবং তার উপার্জিত অর্থ তিনি নিজের পুত্রবধূকেই দিতেন। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন ভেদপাল, কারণ তিনি তার নিজের আর্থিক চাহিদা মেটানোর জন্য বাবার কাছ থেকে কোনো সহায়তা পাচ্ছিলেন না। তিনি তার ঋণের কিস্তি পরিশোধ করতে ব্যর্থ হচ্ছিলেন এবং মনে করতেন, তার বাবা যদি তাকে সহায়তা করতেন তবে তার জীবনযাত্রা সহজ হয়ে যেত। কিন্তু ঈশ্বর পুত্রবধূর প্রতি বেশি মনোযোগ দিচ্ছিলেন বলে ভেদপাল মনে করতেন।
অভিযুক্ত ভেদপাল শুক্রবার রাতে তার বাবার সঙ্গে বাগবিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়েন। একপর্যায়ে তিনি ধারালো শাবল দিয়ে ঈশ্বরের গলা কেটে ফেলেন এবং মৃত্যু নিশ্চিত হওয়ার পর লাশটি একটি নিকটবর্তী বনের মধ্যে ফেলে দেন। হত্যাকাণ্ডের পর পুলিশকে বিভ্রান্ত করতে তিনি নিজেই থানায় গিয়ে অজ্ঞাত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে একটি অভিযোগ দায়ের করেন, যাতে মনে হয় কেউ তার বাবাকে হত্যা করেছে।
তবে পুলিশের সন্দেহ হয় যে হত্যাকাণ্ডে কোনো ঘনিষ্ঠ ব্যক্তি জড়িত থাকতে পারে। তদন্তের একপর্যায়ে ভেদপালের কথাবার্তায় অসংগতি ধরা পড়ে। এরপর পুলিশ তাকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করলে তিনি স্বীকার করেন যে তিনিই তার বাবাকে হত্যা করেছেন।
বাগপত পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (এএসপি) এন.পি. সিং জানান, “ঈশ্বর, যিনি একজন শ্রমিক ছিলেন, তাকে তার নিজের ছেলে নির্মমভাবে হত্যা করেছে। প্রথমে ভেদপাল হত্যার অভিযোগ অন্য ব্যক্তিদের ওপর চাপানোর চেষ্টা করেছিল, কিন্তু তদন্তে তার সন্দেহজনক কার্যকলাপ ধরা পড়ে। পরে জিজ্ঞাসাবাদে তিনি তার অপরাধ স্বীকার করেন এবং হত্যার উদ্দেশ্য ব্যাখ্যা করেন।”
এই হত্যাকাণ্ড বাগপত এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করেছে। পুলিশ অভিযুক্ত ভেদপালকে গ্রেপ্তার করে আদালতে পাঠিয়েছে এবং তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।